০৬ অগাস্ট ২০২৫, বুধবার, ০৯:২৫:০৭ অপরাহ্ন
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ১১ জনের সনদ বাতিল, ১০ জনকে বহিষ্কার
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৮-২০২৫
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ১১ জনের সনদ বাতিল, ১০ জনকে বহিষ্কার

বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করার অভিযোগে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৮ নেতা-কর্মীকে ৪ ধরনের শাস্তি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।


তাদের মধ্যে ১১ জনের সনদ স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়েছে। ৩ বছরের জন্য সনদ স্থগিত করা হয়েছে ৭ জনের। আর আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে ৬ জনকে।


এ ছাড়া ৩ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে আরো ৪ জনকে।

আজ বুধবার (৬ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। রেজিস্ট্রার অফিস জানায়, গত ২৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩তম রিজেন্ট বোর্ডে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সেখানে ২১ নাম্বার আলোচ্যসূচিতে এটি অন্তর্ভুক্ত ছিল।


আজীবন সনদ বাতিল হয়েছে যাদের : লিংকন হোসেন (বাংলা বিভাগ, ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষ), মো. নুরুল্লাহ (ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ), মাসুদ রানা সরকার (গণিত বিভাগ, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ), হামিদুর রহমান শামীম (পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ), ইকরামুল ইসলাম (বাংলা বিভাগ, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ), মিনহাজুল ইসলাম প্রান্ত (সমাজকর্ম বিভাগ, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ), রাসেল হোসেন রিয়াদ (বাংলা বিভাগ, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ), বিল্লাল হোসেন (অর্থনীতি বিভাগ, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ), সুরুজ মিয়া আপেল (গণিত বিভাগ, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ), শেহজাদ হাসান (ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ), শিবু দাস (লোক প্রশাসন বিভাগ, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ)।


৩ বছরের জন্য সনদ স্থগিত হয়েছে যাদের : শাহেদ জামিন হিরা (পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ), নাজমুল ইসলাম আবীর (গণিত বিভাগ, ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষ), সাব্বির হোসেন সবুজ (বাংলা বিভাগ, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ), শেখ রাসেল (লোক প্রশাসন বিভাগ, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষ), সোহানুর রহমান সোহান (ইংরেজি বিভাগ, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ), জহরুল ইসলাম পিয়াস (অর্থনীতি বিভাগ, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ), জাহির রায়হান (বাংলা বিভাগ, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ)।


স্থায়ীভাবে বহিষ্কার হয়েছেন যারা : ফরিদুল ইসলাম বাবু (ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষ), নাইমুর নাহিদ ইমন (ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ), আশিক আরমান শোভন (স্থাপত্য বিভাগ, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ), তৌফিক হাসান হৃদয় (ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ), অয়ন আলমাস (বাংলা বিভাগ, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ), তানসু দাস (ইতিহাস বিভাগ, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ)।


৩ বছরের জন্য বহিষ্কার হয়েছেন যারা : আশরাফুল ইসলাম (গণিত বিভাগ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ), আকাশ ভূঁইয়া (পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ), অনিক পোদ্দার (ইতিহাস বিভাগ, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ), শাহ আলম (ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ)।


বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীরা সবাই নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।


খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের জন্য চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরপর ২৪ মে পর্যন্ত তদন্ত কমিটি শিক্ষার্থীদের থেকে অভিযোগগুলো সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে তদন্ত শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম বলেন, ‘যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করেই বিচারকার্য সম্পন্ন হয়েছে।


তদন্ত কমিটি অত্যন্ত পেশাদারি ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে। যে ২৮ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাদের প্রত্যেককে আত্মপক্ষ সমর্থনের যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে বারবার নোটিশ পাঠানো হয়েছে তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে। তবে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এখানে কারো প্রতি অবিচার করা হয়নি।’


শেয়ার করুন