রাজশাহী দুর্গাপুর ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। তিনি নিয়োগের আগেই গোপনে নিয়োগ প্রত্যাশীদের কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানা গেছে। এমন ঘটনায় ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও সাধারণ মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ আছে, অধ্যক্ষ এর আগে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন ঘুষের বিনিময়ে আর সেই টাকা দিয়ে তিনি জমি-বাড়ি বানিয়েছেন। সেই নিয়োগে তার জামাই ও ভাতিজাও রয়েছেন বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপুর ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আলতাফ হোসেন তার প্রতিষ্ঠানে তিনটি পদের জন্য তিনজনের কাছ থেকে নিয়োগের আশ্বাস দিয়ে অর্ধকোটি টাকা ঘুষের চুক্তি করেন এবং প্রায় ৩০ লাখ টাকা গ্রহন করেছেন। আর বাকি টাকা নিয়োগের পরে নেবেন এমনটাই চুক্তি হয়। টাকা গ্রহণের পরে অধ্যক্ষ গত ৭ আগস্ট দুইটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। এরপরে চাকরি প্রত্যাশীরা জানার আগেই অধ্যক্ষ তার পছন্দের প্রার্থীদের আবেদন করান। এরই মধ্যে অনেক প্রাথীরা ওই প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে জানতে গেলে ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ কোনো প্রকার তথ্য না দিয়েই ফিরিয়ে দেন তাদের। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে ১৫ লাখ, ল্যাব সহকারী পদে ১২ লাখ ও আইসিটি ল্যাব সহকারীপদে ১৫ লাখ টাকা ঘুষ বিনিময় করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ওই প্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষক জানান, অধ্যক্ষ আলতাফ হোসেন শুধু এই নিয়োগেই না তিনি বিগত সবগুলো নিয়োগেই প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের কথা বলে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। আর সেই টাকা দিয়ে তিনি উন্নয়ন করেছেন নিজের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চাকরি প্রত্যাশীদের একাংশ জানান, আমরা জানতে পারি দুর্গাপুর ফাজিল মাদ্রায় বিভিন্ন পদে লোক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি করা হয়েছে। এমন খবরে যাচাই করতে গেলে প্রতিষ্ঠানের কেউ কোনো কথা বলেনি। কোন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ হয়েছে তাও জানতে পারিনি। আমরা আবেদন যদি না করতে পারি তাহলে এমন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার কি দরকার ছিলো। পরে জানলাম অধ্যক্ষ তার পছন্দের প্রার্থীদের কাছ থেকে আগেই টাকা নিয়ে রেখেছেন। যার কারণে এমন নাটক। চাকরি প্রত্যাশীরা নিয়োগপ্রাপ্ত না হতে পারে সেজন্য শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্শনের দাবি জানিয়েছেন।
এবিষয়ে দুর্গাপুর ফাজিল মাদ্রসার অধ্যক্ষ আলতাফ হোসেন বলেন, চলতি মাসের ৭ তারিখে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা পয়সার বিষয়ে কোনরূপ কথা হয়নি। আমার এ বিষয়ে কিছুই জানা নেই।
এবিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতি আজাহার আলী জানান, নিয়োগ সার্কুলার হয়েছে। শুনেছি অধ্যক্ষ একজনের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়েছে। এর বাইরে আমার জানা নেই।
এবিষয়ে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল রানা জানান, নিয়োগ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আমাকে কিছু জানাননি। নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়েও আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্তপুর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।