 
                         
                    
                                            
                        
                             
                        
উত্তর জনপদের
শষ্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় উৎপাদিত পাট রপ্তানি
হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। কৃষি প্রধান এ দেশে এক সময়ের
প্রধান অর্থকরী ফসল পাট চাষে কৃষক দুরাবস্থার সম্মুখীন হলেও
চলতি মৌসুমে নওগাঁর আত্রাইয়ে সোনালী আঁশের দিন ফিরে
আসতে শুরু করেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার এ উপজেলায় লক্ষমাত্রার
চেয়ে অধিক জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায়
এবার পাটের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকের মুখে ফুঁটেছে হাঁসির
ঝিলিক।
উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সময় মত পর্যাপ্ত
বৃষ্টিপাত হওয়ায় পাট কেটে তা বিভিন্ন জলাশয়ে জাগ দিচ্ছে
কৃষকেরা। চাষিরা পাট কেটে নদী, নালা, খাল, বিল ও ডোবায় জাগ
দেওয়া, আঁশ ছাড়ানো এবং হাটে বাজারে তা বিক্রিসহ সব
মিলিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবার কোথাও কোথাও দেখা
গেছে নারী-পুরুষের অংশ গ্রহণে পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর
কাজ চলছে। অনেক স্থানে কৃষক খরচ বাঁচাতে রিবোন রেটিং
পদ্ধতিতে আঁশ ছাড়ানোর জন্য কৃষি বিভাগ কৃষকদের উদ্বুদ্ধ
করলেও কৃষকরা তাতে আগ্রহ নয়।
উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে ভালো
মানের পাটের মূল্য ৩হাজার ২’শ টাকা মণ ও নিম্ন মানের পাটের
মূল্য ২৫’শ থেকে ২৮‘শ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে। ফলে ন্যায্য মূল্য
পেয়ে পাট চাষীদের মাঝে এখন পাট চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রহমান জানান, এবার
জমিতে পাট চাষ করেছিলাম পাটও ভালো হয়েছে এবং অন্য বছরের
তুলনায় দাম বেশি হওয়ায় লোকসানে পড়তে হচ্ছে না।
উপজেলার বজ্রপুর গ্রামের কৃষক মজিদ মন্ডল বলেন, মৌসুমের
শুরুতে বৃষ্টি না হওয়ায় পাট নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম তবে পড়ে
বৃষ্টি হওয়ার কারণে ফলন ও ভালো হয়েছে। এবার আমি জমিতে পাট
চাষ করেছিলাম বাজারে পাটের মূল্য বেশি হওয়ার কারণে আগামি
বছর আরো বেশি জমিতে পাট চাষ করবো বলে আমরা মনে করছি।
আহসানগঞ্জ হাটে সিরাজগঞ্জ থেকে পাট কিনতে আসা বেপারী
তরিকুল আলম বলেন, তারা বাপ দাদার আমল থেকে পাটের ব্যবসা করে
আসছেন। তিনি নিয়মিত আহসানগঞ্জ হাট থেকে পাট কিনে
থাকেন। প্রতি হাটে তিনি ট্রাক করে পাট কিনে থাকেন। গত
বছরের তুলনায় এবার পাটের দর কিছুটা বাড়তি।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার
হোসেন বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি
জমিতে পাট চাষ হয়েছে। পাটের ফলন ভালো হয়েছে। অন্যান্য বছরের
তুলনায় এবার পাটের দাম ও অনেক বেশি। পাটের নায্য মূল্য পেলে
চাষিদের মাঝে পাট চাষে আগ্রহ বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।

