২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০৯:০৯:৩৯ অপরাহ্ন
এইচএসসি পাস না হলে স্কুল কলেজের সভাপতি হতে পারবেন না
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০২-২০২৩
এইচএসসি পাস না হলে স্কুল কলেজের সভাপতি হতে পারবেন না

প্রাথমিকের পর এবার বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের সভাপতি হওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার মানদণ্ড নির্ধারণ করছে সরকার। এ ক্ষেত্রে আগ্রহী ব্যক্তিকে ন্যূনতম এইচএসসি পাস হতে হবে। এ ছাড়া সরকারি আমলারাও সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে অনাপত্তি সনদ নিয়ে সভাপতি হওয়ার সুযোগ পাবেন। ইতোমধ্যে এমন বিধান রেখে প্রস্তুত করা হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি প্রবিধানমালা-২০২৩। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, শিগগিরই নীতিমালাটি চূড়ান্ত করা হবে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হতে হলে আগ্রহী ব্যক্তিকে ন্যূনতম স্নাতক পাস হতে হয়। কিন্তু বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি হওয়ার জন্য এতদিন পর্যন্ত কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারিত ছিল না। আগের প্রবিধানমালা-২০০৯-এ বলা হয়েছিল, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও কলেজের গভর্নিং বডির সাধারণ সদস্য পদে নির্বাচনের পর নির্বাচিতরা সাত দিনের মধ্যে সভাপতি নির্বাচনের জন্য সভা আহ্বান করবেন। সে অনুযায়ী, সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে কমিটির সভাপতি নির্বাচন করা হতো। এ ক্ষেত্রে কোনো সদস্য কিংবা স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি, সমাজসেবক, জনপ্রতিনিধি বা অবসরপ্রাপ্ত প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে একজনকে বাছাই করা হতো।

বিশেষ পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বা সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হতো। মহানগরের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বা প্রথম শ্রেণীর কোনো কর্মকর্তাকে এই দায়িত্ব দেয়া হতো। এক ব্যক্তির দুইয়ের অধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সভাপতির দায়িত্ব পালনের সুযোগ ছিল না।

একাধিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কলেজের অধ্যক্ষদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকার পরও অর্থবিত্ত ও রাজনৈতিক প্রভাব আছে এমন লোকজন সভাপতির আসনে বসেন। শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে তাদের ভালো ধারণা না থাকায় নানা বিষয়ে তারা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন। অনেক সময় তারা রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করেন। তাই শিক্ষাগত যোগ্যতা নির্ধারণ করে দিলে এই প্রভাব কমবে। আর শিক্ষিত লোকজন নেতৃত্বে এলে শিক্ষার মানও বাড়বে।

২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হতে হলে স্নাতক পাস হতে হবে বলে নীতিমালা জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে করে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে অনেকাংশে শৃঙ্খলা ফিরে আসে। এরপর মাধ্যমিকেও সভাপতির শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক নির্ধারণের দাবি উঠে বিভিন্ন মহল থেকে। অবশেষে সব শিক্ষা বোর্ড, প্রশাসনের কর্মকর্তা ও শিক্ষাবিদদের পরামর্শে এই মানদণ্ড আপাতত এইচএসসি পাস নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন প্রবিধানমালায় বলা হয়েছে, মাধ্যমিকের ম্যানেজিং কমিটি ও কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি হতে হলে ন্যূনতম এইচএসসি পাস হতে হবে। একজন ব্যক্তি দু’টি মাধ্যমিক ও দু’টি কলেজ মিলিয়ে সর্বোচ্চ চারটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হতে পারবেন। এ ছাড়া সরকারি আমলারা সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে অনাপত্তি সনদ নিয়ে সভাপতি হতে পারবেন। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, নতুন প্রবিধানমালা নিয়ে মন্ত্রণালয় কাজ করছে। যতটুকু জানি স্কুল ও কলেজের সভাপতির শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি পাস নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়া নতুন আরো কয়েকটি বিষয় সংযোজন করা হয়েছে।

শেয়ার করুন