২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ১১:৪৬:০৩ অপরাহ্ন
অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আরেকবার সুযোগ দিন : এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০৬-২০২৩
অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আরেকবার সুযোগ দিন : এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন

 রাজশাহী মহানগরীর ২৩, ২৪ ও ২৫ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত ও ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। রবিবার বিকেলে ২৩নং ওয়ার্ডের পাঁচানীর মাঠে পথসভায় বক্তব্য দেন তিনি। এরপর নদীর ধার হয়ে পঞ্চবটি হয়ে হাদির মোড় এলাকায় গণসংযোগ করেন এবং ২৪নং ওয়ার্ডের হাদির মোড়ে ও ২৫নং ওয়ার্ডের মোন্নাফের মোড়ে পথসভায় বক্তব্য রাখেন।


নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর গণসংযোগ ও পথসভায় সর্বস্তরের জনসাধারণের ঢল নামে। এ সময় রাজশাহীর উন্নয়নের ধারা চলমান রাখতে ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করার অনুরোধ জানান মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।


পথসভায় মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ২০১৯ সালে রাজশাহীর উন্নয়নে ২৭০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্প অনুমোদন পাওয়ার পরপরই সারাবিশে^র ন্যায় রাজশাহীতে করোনা মহামারি সংক্রমণ দেখা দেয়। তখন আমরা মানুষের জীবন বাঁচাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। করোনার কারণে প্রায় দেড় বছর উন্নয়ন কাজ ব্যহত হয়। পরবর্তীতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলারের সংকট ইত্যাদি কারণে প্রায় ১ বছর নষ্ট হয়ে যায়। মাত্র আড়াই বছরে যে উন্নয়ন করেছি, সেটা আপনাদের সামনে দৃশ্যমান। ২৭০০ কোটি টাকার মধ্যে মাত্র ১২০০ কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে। আরো ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। অল্প সময়ে যে উন্নয়ন করেছি, ঢাকা থেকে, চট্টগ্রাম থেকে, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে যারা রাজশাহীতে বেড়াতে আসেন, তারা এই শহরের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তারা বলেন, এমন ঝকঝকে তকতকে, সুন্দর আলোকিত সড়ক দেশের আর দ্বিতীয়টি নেই। শুধু দেশ নয়, দেশের বাইরেও রাজশাহীর সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে।


সাবেক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, আমরা উন্নয়নের একটা পর্যায়ে পৌছে গেছি। এবার আমাদের সন্তানদে;র ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। সেজন্য প্রয়োজন কর্মসংস্থান। যদিও কর্মসংস্থান দেওয়া মেয়রের কাজ নয়, তারপরও আপনাদের সন্তানদের জন্য এই দায়িত্ব আমি নিজ কাঁধে নিয়েছি। রাজশাহীতে তেমন শিল্প-কারখানা তেমন নেই। সরকারি যে কারখানাগুলো ছিল, সেগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে। এখন বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের নিয়ে এসে রাজশাহীতে শিল্পায়ন করতে হবে। নওদাপাড়া এলাকায় বিসিক শিল্পনগরী-২ এর কাজ শেষ হয়েছে। সেখানে শিল্পপতি ও বিনিয়োগকারীদের এনে শিল্পকারখানা গড়তে হবে। আপনারা আমাকে নির্বাচিত করলে আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাবো যে, তিনি যেন শিল্পপতিদের বলে দেন, রাজশাহীতে ছোট করে হলেও কিছু শিল্পকারখানা গড়তে। এটি করতে পারলে আগামী ৫ বছরে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এটি অনেক বড় কাজ, অনেক বড় দায়িত্ব, এই কাজটি আমি করতে চাই। আপনাদের সন্তানদের কর্মের ব্যবস্থা করতে চাই।


অপপ্রচারে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, নির্বাচন আসলেই নদীধারে এসব এলাকায় বিভিন্ন অপপ্রচার চালানো হয়। অপপ্রচারকারীরা বলে, ‘আমি মেয়র নির্বাচিত হলে নাকি ঘরবাড়ি তুলে দেব, বস্তি উচ্ছেদ করে বিনোদনকেন্দ্র করবো।’ আমি গত ৫টি বছর মেয়র ছিলাম, একজনের বাড়ি-ঘরও ভাঙা হয়নি, কাউকে উচ্ছেদ করা হয়নি। আগামীতেও হবে না। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণ করে দিচ্ছেন। রাজশাহীতে এই প্রকল্প এনে যাদের বাড়ি নাই, ঘর নাই, তাদের বাড়িঘর নির্মাণ করে দিতে চাই।


খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা নদীকে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করতে চাই। নদীপথে ভারতের সাথে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালাতে চাই। সেজন্য ভারতের মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান থেকে গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ হয়ে রাজশাহী হয়ে ঢাকা পর্যন্তÍ নৌরুট চালু ও রাজশাহীতে নৌবন্দর স্থাপন করতে চাই। এটি চালু হলে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসার হবে, অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

তিনি বলেন, তরুণ-তরুণীদের বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের জন্য শহরে ১০টি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়তে চাই। যেখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনলাইনে তারা আয় করতে পারবে। তাদেরকে আমরা কাজের ক্ষেত্রও দেখিয়ে দেবো।

লিটন আরো বলেন, রাজশাহীকে আরো অনেক দূরে নিয়ে যেতে চাই। রাজশাহীর উন্নয়নে অনেক কাজ বাকি আছে। অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করতে আমাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আরেকবার সুযোগ দিন।

পথসভায় রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সহ-সভাপতি নাইমুল হুদা রানা, ডা. তবিবুর রহমান শেখ, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আসলাম সরকার, প্রচার সম্পাদক দিলীপ কুমার ঘোষ, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মীর তৌফিক আলী ভাদু, মহানগর যুবলীগ সভাপতি রমজান আলী, জাসদ রাজশাহী মহানগর সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী, বোয়ালিয়া থানা (পূর্ব) আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিকুর রহমান কালু, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার ঘোষ, ২৩নং ওয়ার্ড সভাপতি জসির ঊদ্দিন জসির, সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রনি সহ স্থানীয় আওয়ামী ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সহ সর্বস্তরের জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।


শেয়ার করুন