বরাবরই ভেডিওয়েট প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনের রাজনীতিতে আলোচনায় থাকে রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসন। এর ব্যতিক্রম ঘটেনি এবারও। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ইতোমধ্যে আলোচনায় এসেছে এ আসনটি। দল নির্বাচনে আসছে কি না তা নিয়ে শংসয় থাকলে এ আসনে বিএনপির কে প্রার্থী হচ্ছেন তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা।
বিশেষ করে বিএনপির প্রবীণ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত ব্যারিস্টার আমিনুল হকের পরিবারের তিন সদস্যকে নিয়ে চলছে আলোচনা সমালচনা। এরা হলেন, প্রয়াত ব্যারিষ্টার আমিনুল হকের সহধর্মিণী আভা হক, তার ভাই মেজর জেনারেল অবঃ শরিফ উদ্দিন ও ভাগ্নে ব্যারিষ্টার মাহফুজুর রহমান মিলন। এদের মধ্যে ব্যারিষ্টার মাহফুজুর রহমান মিলন গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য। মিলনকে প্রয়াত ব্যারিস্টার আমিনুল হকের যোগ্য রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে মনে করছেন অনেকেই।
তারা বলছেন, রাজশাহী-১ আসনে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরীর বিকল্প নেতৃত্ব এখানো গড়ে উঠেনি বা সেই সম্ভবনাও নেই। নৌকার হাল তার হাতেই থাকতে পারে। ফলে তাকে শক্তভাবে মোকাবেলা করার মতই প্রার্থী প্রয়োজন। এ কারণে এখানে বিএনপির রাজনীতিতে কে আসছেন সেটার দিকেই সবার আগ্রহ।
দলীয় ও স্থানীয় একাধিক জানা গেছে, এদের মধ্যে মেজর জেনারেল অবঃ শরিফ উদ্দিন সবেমাত্র দলে যোগদান করেছেন। ফলে তার তেমন কোনো রাজনৈতিক পরিচিতি বা অভিজ্ঞতা নেই। তার পক্ষে তেমন জনমত গড়ে উঠেনি, এমনকি রুক্ষ আচরণের কারণে তিনি অনেকটা জনবিচ্ছিন্ন বলে মনে করছে তৃণমুল। তিনি এখানো প্রয়াত ব্যারিষ্টার আমিনুলের বিকল্প নেতৃত্ব হয়ে উঠতে পারেননি। বরং বিএনপির নেতাকর্মী-সমর্থকদের কাছ শরিফ উদ্দিনের থেকে আভা হক এবং ব্যারিষ্টার মিলনের গ্রহণযোগ্যতা ও জনসমর্থন অনেক বেশী।
তবে তাদের মাঠে নামতে দেয়া হচ্ছে না। বিশেষ করে শরিফ উদ্দিন তাদের এলাকায় যেতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও দেবর-ভাবীর দ্বন্দ্ব প্রকট হচ্ছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছে দুইভাগে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এমপি ফারুক চৌধুরীর মতো হেভিওয়েট নেতার সঙ্গে ভোটের মাঠে লাড়াই করে বিজয়ী হওয়া তো পরের কথা শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো অবস্থান সৃষ্টি করতে পারবেন এমন নেতা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, শরিফ উদ্দিন দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ইতোমধ্যেই বিতর্কিত হয়ে উঠৈছেন। কথায় কথায় নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা করতে চান। আবার কর্কশ ভাষায় কথা বলেন। তার থেকে আভা হক এবং মিলন জনপ্রিয়তায় অনেক এগিয়ে। নেতাকর্মীদের মধ্যে আভা হকের গ্রহনযোগ্যতা বেশী।
তিনি আরও বলেন, নেতৃত্ব নিয়ে দেবর-ভাবীর মনঃস্তাত্ত্বিক দ্বন্দের অবসান ঘটাতে মিলনের বিকল্প নাই। এসবের পাশাপাশি বিএনপি নতুন নেতৃত্ব তৈরীর বিষয়টিকেই বেশী গুরুত্ব দিচ্ছে।
স্থানীয় বিএনপির আরেক নেতা জানান, শরিফ উদ্দিন ও আভা হককে নিয়ে বিএনপি এখন দুইভাগে বিভক্ত। শরিফকে মনোনয়ন দিলে আভা হকের অনুসারীরা এবং আভা হককে মনোনয়ন দিলে শরিফ অনুসারীরা প্রকাশ্যে বিরোধিতায় নামবে। ফলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচনী লড়াইয়ে বিএনপি থেকে ব্যারিস্টার মিলনকে বিকল্প হিসেবে দেখছে অনেকেই।