রাইড শেয়ারিংকেন্দ্রিক অভিযোগ ও অব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণে অ্যাপ চালু করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। গ্রাহক এই অ্যাপে অভিযোগ জানাতে পারবেন। শিগগির এ বিষয়ে আদেশ জারি হবে।
গতকাল সোমবার বিআরটিএর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাইড শেয়ারিংকেন্দ্রিক সব ধরনের অব্যবস্থাপনা মনিটরিংয়ের জন্য এই অ্যাপ চালু করা হচ্ছে। একই সঙ্গে রাইডারদের জন্য এক রংয়ের হেলমেট দেওয়া হবে। এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা কাজ করছে। তিনি বলেন, গ্রাহক অ্যাপটি ইনস্টল করার পর সেখানে অভিযোগ নিয়ে অপশন থাকবে। যে ধরনের অনিয়মের সম্মুখীন হবে, সেটি জানাতে পারবেন। এ ছাড়া ভাড়ার বিষয়টিও ঠিক করা হবে। রাইড শেয়ারিং নিয়ে ‘রাইড শেয়ারিং সার্ভিস নীতিমালা, ২০১৭’ কার্যকর হয়েছে ২০১৮ সালের ৮ মার্চ।
তবে এখনো অনেক কিছু বাস্তবায়ন করা যায়নি। বরং অনিয়ম বেড়েছে। উবার ও পাঠাও বাইক রাইড শেয়ারিং করে। তবে এই দুই প্রতিষ্ঠানের বাইরেও অনেক রাইডার মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন করেন। রাজধানীর বেশির ভাগ ব্যস্ত মোড় ও বাসস্ট্যান্ডের কাছে তাঁদের দেখা যায়। তাঁরা চুক্তিতে ভাড়ায় বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছেন। অনেকে আবার অফিস সময়ে অ্যাপ বন্ধ রেখে ভাড়ায় যাত্রী নেন। নীতিমালায় যাত্রীর হেলমেটের বিষয়ে নির্দেশনা না থাকায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এটি হয় খুব নিম্নমানের।
বিআরটিএর চেয়ারম্যান বলেন, এই অব্যবস্থাপনা বন্ধে বাইকারদের এক রংয়ের হেলমেট দেওয়া হবে। বিআরটিএ সূত্র বলছে, এর আগে বাইকারদের এক রঙের ড্রেস কোড নির্ধারণ করা হলে তা নিয়ে আপত্তি জানায় কোম্পানিগুলো। পরে আলোচনা করে এক রংয়ের হেলমেট নির্ধারণ করা হয়।
অথচ রাইড শেয়ারিং নীতিমালায় আছে, নির্ধারিত স্ট্যান্ড বা অনুমোদিত পার্কিং স্থান ব্যতীত কোনো রাইড শেয়ারিং মোটরযান যাত্রীর জন্য রাস্তায় যেখানে-সেখানে অপেক্ষমাণ থাকতে পারবে না। ব্যক্তিগত মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন নেওয়ার ন্যূনতম এক বছর পর রাইড শেয়ারিং সার্ভিসের আওতায় সেবা দিতে না পারার নিয়মও মানেন না অনেকে। এ ছাড়া রাইড শেয়ারিং সার্ভিসে ব্যবহৃত মোটরযানের দৃশ্যমান স্থানে ৯৯৯ ব্যবহারের নির্দেশিকা-সংবলিত স্টিকারও নেই বেশির ভাগ মোটরযানে।
রাইড শেয়ারিংয়ে ভাড়া নিয়েও আছে অনেক অভিযোগ। নীতিমালায় ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে মোটরকারের উল্লেখ থাকলেও মোটরবাইকের উল্লেখ নেই। মোটরসাইকেলের ভাড়া কীভাবে নির্ধারিত হবে, তা বলা হয়নি। অথচ রাইড শেয়ারিংয়ের বড় অংশই হচ্ছে মোটরসাইকেল।
প্রায় প্রতিদিন অফিসের কাজে বিভিন্ন জায়গায় চলাচলকারী তৌহিদুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিনি একদিন হাতিরঝিল থেকে আগারগাঁও যাওয়ার জন্য দেখেন ৬ দশমিক ৪ কিলোমিটার দূরত্বে পাঠাওয়ে ভাড়া ১৮৩ টাকা, উবারে ১৩৩ টাকা।
২০২২ সালের ৭ আগস্ট জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর ভাড়া বাড়ায় পাঠাও। সর্বনিম্ন ভাড়া ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা এবং প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ১২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৫ টাকা করা হয়। সে ক্ষেত্রে ৬ দশমিক ৪ কিলোমিটারের ভাড়া আসে ১৪৬ টাকা। ভাড়া নিয়ে নীতিমালা না থাকার সুযোগ নিচ্ছে রাইড শেয়ারিং সার্ভিসগুলো।
জানতে চাইলে নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, অ্যাপ চালু করার পর এই বিষয়গুলো ঠিক হবে। এ নিয়ে অনেক অভিযোগ আছে।