২২ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ১২:৪৭:৩২ পূর্বাহ্ন
৪৪ হাজার সদস্য নিয়ে রাফিয়ার পরিবার
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-০৮-২০২৩
৪৪ হাজার সদস্য নিয়ে রাফিয়ার পরিবার

পল্লবী হাউজিংয়ের পাঁচতলা ভবনের নিচতলার একটি অফিস। কলবেল চাপতেই দরজা খুলে দিলেন একজন। দরজা দিয়ে ঢুকে প্রথমেই যে কক্ষ, সেখানেই বসে ছিলেন রাফিয়া। কুশল বিনিময় হলো। একটি ছোট ছিমছাম অফিস যেমন হয়, এ অফিসটিও তাই। চেয়ারে বসে মনে মনে খানিক তৈরি হয়ে নিলাম–কী বলব, কী লিখব–সেসব। এরপর কথা শুরু হলো রাফিয়ার সঙ্গে।


পুরো নাম রাফিয়া আক্তার। এককালে নিজেই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ছিলেন। আর এখন ‘নারী উদ্যোক্তা ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন চালান তিনি। পুরো দেশে ছড়িয়ে থাকা উদ্যোক্তা নারীদের প্রশিক্ষণ, পণ্য প্রদর্শনীর সুবিধা, নেটওয়ার্কিং ও ব্র্যান্ডিংয়ে সহযোগিতা করে। প্রযুক্তিগত সহায়তা, ব্যবসায় পরামর্শ, যারা দেশীয় পণ্য নিয়ে যারা কাজ করে, তাদের প্রচার ও প্রসারে সহায়তা, পণ্য বিক্রয়সহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কাজ করে অনলাইন এবং অফলাইনভিত্তিক এ সংগঠন।


এত অল্প গল্পে আমাদের মন ভরল না। প্রশ্নের পর প্রশ্ন করে বিভিন্ন তথ্য জেনে নিতে শুরু করলাম। জানার আগ্রহ হলো তাঁর জীবনের শুরুর দিকের গল্পগুলো। রাফিয়াও বলে গেলেন কোনো রকম জড়তা না করে। তাঁর বেড়ে ওঠা রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী এলাকায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন অল্প পরিসরে ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। যেহেতু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেন, তাই নিজের খরচের জন্য বাবা-মায়ের কাছে টাকা নিতে চাইতেন না বলে টিউশনি করতেন। সেই টাকা থেকে কিছু কিছু করে জমানো শুরু করেন তিনি। সেই পুঁজি দিয়েই ১৯৯৮ সালে রাফিয়া শুরু করেছিলেন ব্যাগের ব্যবসা। পাড়ার এক কারিগরের কাছে নিজে নকশা দিয়ে লেদারের ব্যাগ বানিয়ে নিতেন। তৈরি ব্যাগগুলো বিক্রির জন্য দিতেন বিভিন্ন শোরুমে। তবে তখনই ব্যবসায় টিকে থাকার লড়াইয়ে নামতে চাননি তিনি। ধরে রেখে আগাতে হবে–এমন চিন্তাও মাথায় ছিল না।বিয়ের পর একটি এনজিওতে চাকরি শুরু করেন রাফিয়া। একটা সময় ছকে বাঁধা জীবন থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলেন। চাকরি ছেড়ে বিসিক থেকে কাপড়ে ব্লক-বাটিকের প্রিন্ট তৈরি করার ট্রেনিং নেন তিনি। এরপর একটানা প্রায় চার বছর কাজ করে আবারও কাজ বন্ধ করে দেন। এভাবে চলতে চলতে একপর্যায়ে তাঁর মনে হলো, কিছু একটা করতে হবে। ২০০৮ সালে ছোট একটি কারখানা নিয়ে আবার কাজ শুরু করেন। সাতজন কারিগর নিয়ে শুরু হয় রাফিয়ার নতুন যাত্রা। পণ্য হিসেবে থাকে সেই ব্লক-বাটিকের কাজ করা পোশাক। সেগুলো বিক্রি শুরু করেন আশপাশের শোরুমগুলোতে। এভাবে ভালোই চলতে থাকে। কিন্তু গোটা দুনিয়ার মতো রাফিয়াকেও থামিয়ে দেয় করোনা। তাঁর বেচাকেনা চলত অফলাইনে, বিভিন্ন শোরুমে। করোনার কারণে সেসব বন্ধ হয়ে যায়। কর্মীরাও একে একে কাজ ছেড়ে চলে যেতে থাকেন।


শেয়ার করুন