২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০৩:৪৪:০৪ অপরাহ্ন
তানোর পৌরসভার রাস্তা সংস্কারের মাস না যেতেই উঠে যাচ্ছে পিচ পাথর
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০৯-২০২৩
তানোর পৌরসভার রাস্তা সংস্কারের মাস না যেতেই উঠে যাচ্ছে পিচ পাথর

রাজশাহীর তানোর পৌর মাস না যেতেই নতুনভাবে কার্পেটিং রাস্তার পিচ পাথর উঠা শুরু হয়েছে । গত প্রায় একমাস আগে পৌর এলাকার তালন্দ বালিকা স্কুল মোড় থেকে সরদার পাড়া পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন শো মিটার রাস্তায় ঘটে রয়েছে পিচ পাথর উঠার ঘটনাটি।


মাটির রাস্তা কার্পেটিং করার প্রথম থেকেই নিম্নমানের সামগ্রী যতটুকু প্রয়োজন ব্যবহার না করা এবং বিটুমিন পিচ খোয়া বালু তেমনভাবে না দেওয়ার কারণে উঠা শুরু হয়েছে। ফলে রাস্তাটি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা।


তবে রাস্তার পিচ পাথর উঠে যাওয়ায় মেয়রের ভাবমূর্তি নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন।


সরেজমিনে দেখা যায়, তানোর টু তালন্দ রাস্তার মুল সড়ক হতে বালিকা স্কুল মোড়ে কয়েক হাত রাস্তার পিচ পাথর উঠে ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। শুধু এক জায়গায় না পুরো রাস্তার ১০ থেকে ১২ জায়গার এমন দশার সৃষ্টি হয়ে আছে।


স্থানীয়রা জানান, পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে রাস্তাটি মাটির ছিল। আমরা অনেক বার বলেছিলাম। সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিজান রাস্তাটি পাকা করে দিবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন বরাদ্দ এসেছে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারনে করতে পারেননি।তারপর ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের ১৪ তারিখে ভোট হয়। ভোটে নৌকার প্রার্থী ইমরুল হক উন্নয়নের ফুলঝুরি নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। কিন্তু মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর এমন উন্নয়নের চমক দিয়েছেন যা মাস না যেতেই পিচ পাথর উঠে যাচ্ছে। সুত্রে জানা যায়, বিগত ২০১৭১৮ অর্থ বছরে নগর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় তানোর পৌরসভায় প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা বরাদ্দ আসে।


কিন্তু করোনা ভাইরাসসহ নানা কারনে ওই সময় কাজ করতে পারেন নি সাবেক মেয়র মিজান। তবে ইমরুল হক মেয়র নির্বাচিত হয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। কিন্তু পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দেওয়ার জন্য লাইসেন্স নবায়ন করে দিচ্ছিল না। এজন্য পুরো কাজের উপর আদালতে মামলা করেন বিএনপি নেতা ঠিকাদার ইয়াসিন, যুবদল নেতা ঠিকাদার আতিকুর রহমান লিটন ও নজরুল ইসলাম। তারা সবাই পৌর সদর এলাকার বাসিন্দা। তাদের কে কাজ দেওয়ার শর্তে আদালত থেকে মামলা প্রত্যাহার করে নেয়। কোন ধরনের দরপত্র আহবান ছাড়াই মেয়র নিজ ক্ষমতা বলে কাজগুলো করিয়ে নিয়েছেন। সাবেক মেয়রের সময় ও বর্তমান মেয়রেরা মিলেমিশে কমিশন খেয়েছেন।


যার কারণে এত নিম্নমানের কাজ। অথচ যে অর্থ বছরের কাজ সেই অর্থ বছরে করতে না পারলে সরকারি কোষাগারে টাকা ফেরত দিতে হয়। কিন্তু মেয়র ইমরুল হক কিভাবে এত সময় পর্যন্ত কাজ না করে এত টাকা কোন একাউন্টে রাখল এমন প্রশ্ন সংশ্লিষ্টদের। কাজ করা ঠিকাদার ইয়াসিন বলেন, তালন্দ বালিকা স্কুল থেকে তালন্দ সরদার পাড়া, বেলপুকুরিয়া ও গুবিরপাড়া থেকে সিন্দুকাই পর্যন্ত রাস্তাটি আমরা করেছি। তার সহপাঠী ঠিকাদার নজরুল ইসলাম বলেন, কাজ করার পর পিচ উঠতেই পারে।


কিভাবে কাজ করলেন মাস পার হতে পিচ পাথর উঠে যাচ্ছে প্রশ্ন করা হলে ব্যস্ত আছি পরে কথা বলা হবে বলে দায় সারেন। অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী সরদার জাহাঙ্গীরের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেন নি। অবশ্য তিনি নিয়োমিত অফিস করেন না। ফাইল পত্র সাক্ষরের দিন কার নিয়ে আসেন অফিসে।


পৌর মেয়র ইমরুল হক বলেন, কাজ না করলে টাকা ফেরত দিতে হত। এজন্য আপোষ মিমাংসা করে মামলার বাদিদের কিছু কাজ দেয়া হয়েছিল। যে সময় বরাদ্দ পায় সে সময় রাস্তার কাজের মালামালের দাম ছিল কম। কিন্তু এখন দ্বিগুন দাম। এজন্য ঠিকাদারদের বলা হয়েছিল যে ভাবে হোক রাস্তার কাজ করে উঠতে হবে। পিচ পাথর উঠার বিষয়টি আমার নজরে আছে, মেরামত করা হবে।


শেয়ার করুন