২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৮:৪২:৪৮ পূর্বাহ্ন
বান্ধবীকে হত্যার পর লাশ ফেলে রাখা হয় মর্গে, অতঃপর
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-১০-২০২৩
বান্ধবীকে হত্যার পর লাশ ফেলে রাখা হয় মর্গে, অতঃপর

রাতের বেলায় বন্ধুর ফাঁকা বাড়িতে বান্ধবী নাসরিনকে নিয়ে গিয়েছিল রোমান। সঙ্গে ছিল রোমানের আরো ৩/৪ জন বন্ধু। রাতভর সেখানেই চলে ইয়াবার আড্ডা। এরপর নারসিনকে হত্যা করে ঘরের ধর্নার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়।

ভোরে সেখান থেকে দুই বন্ধু মোটরসাইকেলের মাঝখানে মৃত নাসরিনকে বসিয়ে নিয়ে যায় সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে। এরপর মর্গের সামনে মরদেহ ফেলে রেখে রোমান তার বান্ধুবীর বাবাকে মোবাইলে মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ জানিয়ে পালিয়ে যায়।এ ঘটনার পাঁচদিন পেরিয়ে গেলেও নির্মম এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে আশ্রয়দাতা আকাশ গ্রেপ্তার হয়েছে।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, স্বামীর সংসার ভেঙে যাওয়ায় ৩ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে নাসরিন দুই বছর যাবৎ তার বাবার বাড়িতেই থাকতেন। এ অবস্থায় সয়দাবাদ পুনর্বাসনের বাসিন্দা মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে রোমান ও নোমানের (২৫) সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে উঠে।

রোমান মাঝে মধ্যেই নাসরিনকে তাদের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যেত। এ অবস্থায় ৬ অক্টোবর বিকেলে নিজের বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে নাসরিনকে তার বাড়ি থেকে নিয়ে যায় রোমান। রাত দেড়টার দিকে রোমান তার বান্ধবীর বাবাকে মুঠোফোনে জানায় নাসরিন পাগলামি করছে এসে আপনি নিয়ে যান। সকালে যাওয়ার কথা বলে ফোন রেখে দেয় নাসরিনের বাবা। এরপর ভোরে রোমান মুঠোফোনে নাসরিনের বাবাকে জানায় নাসরিন তার চাচাতো ভাই আকাশের বাড়িতে আত্মহত্যা করেছে। লাশ হাসপাতালের মর্গে আছে।

এ বিষয়ে নিহতের বাবা নাসির উদ্দিন বুধবার জানান, উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক থাকায় মেয়ে নাসরিনকে তার বন্ধু রোমানের সঙ্গে যেতে দিয়েছিলাম। নিজের বাড়িতে না নিয়ে একটি ফাঁকা বাড়িতে মেয়েকে নিয়ে যায় রোমান। সেখানে রাতভর তার অন্যান্য ছেলে বন্ধুদের নিয়ে ইয়াবা সেবনের আড্ডায় মেতে ছিল রোমান। এক পর্যায়ে তারা সবাই মিলে মেয়েকে মারধর করে হত্যার পর লাশ ধর্নার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছিল। তারা হয়তো মেয়েকে দলবেঁধে ধর্ষণও করেছে। মেয়ের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করেছেন বাস শ্রমিক নাসির।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম জানান, ঘটনার পরের দিন আশ্রয়দাতা রোমানের বন্ধু আকাশকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, বাবা-মা ঢাকায় থাকায় সে বাড়িতে একাই থাকতো। ঘটনার আগে গভীর রাতে মোটরসাইকেলে করে নাসরিনকে নিয়ে ওই বাড়িতে হাজির হয় রোমান। সঙ্গে আরো ৩/৪ জন বন্ধু ছিল। ঘরের মধ্যে তারা সবাই এক সঙ্গে ইয়াবা সেবন করেছে। একপর্যায়ে নাসরিনকে নিয়ে রোমান আলাদা একটি কক্ষে ঢুকে পড়ে। অন্যরা ঘরের মধ্যেই ইয়াবা সেবন করতে থাকে। ভোরের দিকে আকাশসহ অন্যরা রোমানের কক্ষের ভেতর ধর্নার সঙ্গে নাসরিনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়।


ওসি আরো বলেন, অভিযুক্তরা সবাই সমবয়সী। এলাকায় তারা ছিচকে চোর ও ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশের কাছে তথ্য আছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।


এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই আব্দুর রাজ্জাক বুধবার সন্ধ্যায় জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের মধ্যে আকাশ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে। সূত্র: কালের কণ্ঠ


শেয়ার করুন