আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পিটার হাস (ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত) সাহেব কী করবেন? ভিসানীতি দেবেন? কী করবেন, নিষেধাজ্ঞা দেবেন? তবে তার মুরুব্বিদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়ে গেছে। আমেরিকার মুরুব্বিদের সঙ্গে আমাদের কথাবার্তা শেষ। উচ্চপর্যায়েও কথাবার্তা হয়ে গেছে। তলে তলে যখন সব শেষ, তখন আর এসব করে লাভ কী? পিটার হাসকে দেখিয়ে নির্বাচন বন্ধ করবেন, ঢাকায় তাণ্ডব করবেন-সেই খেলা খেলতে দেব না। সেই সন্ত্রাসের খেলা বিএনপিকে খেলতে দেব না। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপিকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমেরিকার রোগে পেয়েছে? আর কাউকে তো পায় না। এখন আর বিদেশিরা ওইভাবে আসে না, পাত্তা দেয় না। তাই দৌড়ে যায় পিটার হাসের কাছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে পিটার হাস, লাঞ্চ করতে যায় পিটার হাস, ডিনার করতে যায় পিটার হাস। আমি জানি না হাস সাহেব ফখরুলকে কী স্বপ্ন দেখিয়েছেন? তবে ক্ষমতার স্বপ্ন দেখে কোনো লাভ নেই। ফখরুল সাহেব দিল্লি বহুদূর। ক্ষমতার পথ আপনারাই বন্ধ করে দিয়েছেন।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নির্বাচন হবে বাংলাদেশে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা বেঁচে থাকলে এ দেশে নির্বাচন কেউ বন্ধ করতে পারবে না। নির্বাচন হবে, শান্তিপূর্ণ হবে। এ দেশে নজিরবিহীন উন্নয়ন করেছেন শেখ হাসিনা। এদেশে নজিরবিহীন নিরপেক্ষ নির্বাচন শেখ হাসিনাই করবেন। নজিরবিহীন নিরপেক্ষ নির্বাচন হবেই। ফখরুল সাহেব নির্বাচনে না এলে আমও যাবে, ছালাও যাবে। দুইটাই হারাবেন।’
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘খেলা হবে, খেলার জন্য প্রস্তুত হয়ে যান। খেলা হবে, সামনে আসছে সেমিফাইনাল। তারপরে ফাইনাল, গলা ঠিক রাখতে হবে। সামনে আরও দুই মাস, এখনই তোমরা বেশি ক্লান্ত হইও না।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ফাইনাল হবে জানুয়ারিতে। খেলা হবে সারা ঢাকায়, খেলা হবে চট্টগ্রামে, খেলা হবে সিলেটে, খেলা হবে রাজশাহীতে, খেলা হবে বরিশালে, খেলা হবে খুলনায়, খেলা হবে সারা বাংলায়। ঠিক আছে, ফাইনাল পর্যন্ত খেলতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘মির্জা ফখরুলের সর্বশেষ বক্তৃতা শুনে মনে হলো তিনি এখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের লাশ নিয়ে টানাটানি করছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার লাশ। আজিমপুরের গোরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত। গোরস্থান থেকে মির্জা ফখরুল এখন ওই লাশ টেনে আনতে চান।’
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা স্মরণ করে ফখরুল বলেন, ‘আজ এখানে দাঁড়ালে বিএনপির সেই নৃশংস চরিত্র আমাদের চোখের সামনে আসে। এই বিএনপি ওই বিল্ডিং থেকে গ্রেনেড মেরে আমাদের নেত্রীকে হত্যা করতে চেয়েছিল। আমাদের ২৩টি প্রাণ সেদিন ওরা কেড়ে নিয়েছে। আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত করেছে। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এলে বিএনপি কত ভয়ংকর, বিএনপি কত নিষ্ঠুর, সেই ছবি বারবার দেখতে পাই। কাজেই প্রস্তুত থাকতে হবে, সবদিক থেকেই খেলা হবে। ওরা ফাউল করবে, ফাউলের জবাব দিতে হবে। লাল কার্ড দেখাতে হবে।’
ইউরেনিয়াম প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সেদিন বলেছিলাম রূপপুরে ইউরেনিয়ামের চালান আসছে। ফখরুল-মির্জা আব্বাসরা বলেন, মঈন গংও বলেন, রূপপুর বন্ধ করে দেবেন। ইউরেনিয়াম যেটা আসছে, সেটা সারা দুনিয়ায় স্বীকৃত পরিবেশবান্ধব। এই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র যারা বন্ধ করে দিতে চায়, তাহলে এত কোটি কোটি টাকার ইউরেনিয়াম আমরা কেন আনলাম? সেজন্যই বলেছি, ওদের মাথার ওপর ঢালব। ফখরুল, মির্জা আব্বাসরা গরম হয়ে যায়, তাদের মাথার ওপর ঢালতে হবে।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফির সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ।