০১ মে ২০২৪, বুধবার, ১২:৪২:৪৪ অপরাহ্ন
গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে মিশরকে রাজি করালেন বাইডেন
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-১০-২০২৩
গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে মিশরকে রাজি করালেন বাইডেন

ইসরায়েলের বিমানবাহিনীর হামলায় বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় মানবিক সংকট কমাতে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানোর জন্য মিসরকে রাজি করিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গতকাল বুধবার ইসরায়েল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার পথে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তিনি। বাইডেন জানিয়েছেন, মিসর ও গাজা সীমান্তের রাফাহ ক্রসিং খুলে দিতে রাজি হয়েছে মিসর।


হোয়াইট হাউসের বরাত দিয়ে দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, শুক্রবারের মধ্যেই গাজায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছানো শুরু হবে।


ইসরায়েল সফর শেষে ফেরার পথে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির সঙ্গে টেলিফোনে আমার কথা হয়েছে। গাজার বেসামরিক লোকজনের জন্য ত্রাণ সরবরাহের জন্য রাফাহ ক্রসিং খুলে দিতে রাজি হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও এ ব্যাপারে পূর্ণ সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’


বাইডেন বলেন, ‘আশা করছি শুক্রবারের মধ্যেই এই ক্রসিং দিয়ে ত্রাণসামগ্রীবাহী ট্রাকগুলো গাজায় প্রবেশ শুরু করবে। প্রথম দিন ২০টি ট্রাককে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। তবে এই ক্রসিং খোলা হবে কেবল ত্রাণসামগ্রী সরবরাহের জন্য। শরণার্থীরা এই ক্রসিং ব্যবহার করতে পারবে না।’


ফিলিস্তিনি বেসামরিকদের সহায়তার জন্য মার্কিন তহবিল থেকে ১০ কোটি ডলার বরাদ্দ করা হবে বলেও জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, জো বাইডেন কংগ্রেসের কাছে ইসরায়েলের জন্য ১ হাজার কোটি ডলারের সাহায্য চাওয়ার কথাও বিবেচনা করছেন।


উত্তর সিনাইয়ের রেড ক্রিসেন্টের প্রধান খালিদ জায়েদ জানিয়েছেন, ইসরায়েলের হামলায় রাফাহ ক্রসিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাস্তা মেরামতের পরেই এই সাহায্য পৌঁছানো হবে। দুই শতাধিক ট্রাক এবং প্রায় ৩ হাজার টন ত্রাণসামগ্রী রাফাহ ক্রসিংয়ের কাছে অবস্থান করছে।


মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শউকরি আল-আরাবিয়া টিভিকে বলেছেন, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে ত্রাণসামগ্রী সরবরাহ করা হবে। বিদেশি ও দ্বৈত নাগরিকদের চলে যেতে দেওয়া হবে কি না, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাফাহ ক্রসিং মেরামত ও স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।


৩৬৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের ভূখণ্ড গাজায় বসবাস করে প্রায় ২৩ লাখ ফিলিস্তিনি। এই ভূখণ্ডের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশই জাতিসংঘ ও বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থার সহায়তার ওপর সরাসরি নির্ভরশীল। ইসরায়েল ছাড়া গাজার সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে কেবল মিসরের। রাফাহ ক্রসিং নামের সেই সীমান্তপথ দিয়েই গাজা ভূখণ্ডে ত্রাণ ও সহায়তাসামগ্রী পাঠানো হয়।


ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের মধ্যকার যুদ্ধ গড়িয়েছে ১৩তম দিনে। এই কদিনে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত সাড়ে ৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অন্তত ১২ হাজার।


উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর সকালে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা শুরু করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তারা মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে ইসরায়েলের দিকে ৫ হাজার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। একই সঙ্গে স্থলপথ, জলপথ ও আকাশপথে দেশটিতে ঢুকে পড়েন হামাস যোদ্ধারা। ইসরায়েলও এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধ ঘোষণা করে হামাসের বিরুদ্ধে। এর পর থেকেই দফায় দফায় গাজায় বিমান, স্থল এমনকি নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।


শেয়ার করুন