২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১০:৫৪:১৯ অপরাহ্ন
আজ উদ্বোধন করবেন শেখ হাসিনা, কাল থেকে বিক্রি শুরু
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-১১-২০২৩
আজ উদ্বোধন করবেন শেখ হাসিনা, কাল থেকে বিক্রি শুরু

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে আগ্রহীদের কাছে মনোনয়ন ফরম বিতরণ কার্যক্রম আজ উদ্বোধন করা হবে। নিজের জন্য ফরম সংগ্রহের মধ্য দিয়ে দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কাছে ফরম বিক্রি শুরু হবে আগামীকাল থেকে, যা মঙ্গলবার পর্যন্ত চলবে। রাজধানীর তেজগাঁওয়ে গতকাল আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ তথ্য জানিয়েছেন। 


 


ওবায়দুল কাদের জানান, শুক্রবার (আজ) বেলা ৩টায় তেজগাঁওয়ে দলের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির বৈঠক হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে অংশ নেবেন। আর মনোনয়নপত্র বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। শনিবার থেকে সবাই মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে পারবেন।


প্রধান নির্বাচন কমিশনার ৭ জানুয়ারি ভোটের তারিখ দিয়ে যে তফসিল ঘোষণা করেছেন, তাতে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ সময় রাখা হয়েছে ৩০ নভেম্বর। সে হিসেবে তার আগেই প্রতিটি দলকে নিজেদের প্রার্থী বাছাই করতে হবে। আওয়ামী লীগ তাই আগামীকাল থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত তাদের ফরম বিতরণ করবে। আগ্রহীরা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দলীয় মনোনয়নের আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন বলে জানানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রশাসনিক বিভাগ অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট বুথ থেকে আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হবে। 


‘মত পাল্টে’ বিএনপিকেও ভোটে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সবার জন্য নির্বাচনের দরজা খোলা আছে। আসুন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন। বিএনপিকে বলব, মত পাল্টিয়ে ভোটে অংশ নিন। আমরা একা ক্ষমতায় যেতে চাই না। সবাইকে নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে যেতে চাই। আমরা চাই, সবাই ভোটে আসুক। তবে নির্বাচন নিয়ে সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।’ 


সরকারবিরোধী দলগুলোকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সময় আছে। সরকারি দল হিসেবে আমরা অনুরোধ করছি, আসুন নির্বাচনে। আমরা কারো জন্য বাধা হব না। দিন-রাত আমাদের যারা গালি দেন, তাদের জন্যও নির্বাচনের দরজা বন্ধ হয়নি। আমরা সবাইকে স্বাগত জানাই। কাউকে নির্বাচন থেকে দূরে থাকতে আমরা উৎসাহিত করি না।’ 


সংলাপের বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা সংলাপের পক্ষে। ২০১৮ সালে বিএনপির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দুবার সংলাপ করেছেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ফোন করেছেন। কিন্তু খালেদা জিয়া অশ্রাব্য ভাষায় প্রধানমন্ত্রীকে গালমন্দ করেছেন। এবারো রাষ্ট্রপতি তাদের ডেকেছেন। নির্বাচন কমিশন ডেকেছে। তারা সাড়া দেয়নি। এখন নির্বাচনের তফসিল হয়ে গেছে। এখন আর সংলাপ করার মতো সময় নেই।’


ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সামনের কয়েকটা দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ৩০ নভেম্বর মনোনয়ন ফরম জমা দেয়ার শেষ তারিখ। এর মধ্যে কত ফুল ফুটবে। আর শীতকাল তো এসে গেছে। কিছু ফুল ফোটার সময়ও এসে গেছে। এখন কোন ফুল কোথায় ফুটছে, হঠাৎ জেগে উঠবে। অপেক্ষা করুন।’


নির্বাচনকে সামনে রেখে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার শঙ্কার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ইউরোপ-আমেরিকা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। চিঠি চালাচালি হয়েছে। কখনো ভগবান আসে, কখনো অবতার আসে—এসব অনেক শুনেছি। বাংলাদেশ নিয়ে মাথা ঘামায়। আজকে বিশ্ব কোথায়, কী হচ্ছে ফিলিস্তিনে? কী করতে পারল জাতিসংঘ? কী করতে পারল আমেরিকা? কী করতে পারল ইউরোপ? ইউক্রেন জ্বলছে, কী করল ইউরোপ? আর বাংলাদেশের একটা নির্বাচন নিয়ে এত মাথাব্যথা কেন? আমি এসবের উত্তর দিতে রাজি না।’ 


বিএনপিবিহীন নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে কিনা, গ্রহণযোগ্য না হলে নেতিবাচক কী প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে?—এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমেরিকার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট এখনো বলছেন ভোটে কারচুপি হয়েছে। আজ পর্যন্ত তিনি নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেননি। কাজেই এসব প্রশ্ন করে লাভ নেই। ওদের বেলায় ঠিক আছে, আমাদের বেলায় সমস্যা। গণতন্ত্রে দোষ-ত্রুটি সব জায়গায় আছে। পারফেক্ট কেউ না।’ 


সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, কাজী জাফর উল্লাহ, কামরুল ইসলাম, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান; সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ফরিদুন্নাহার লাইলী, শাম্মী আহমেদ, অসীম কুমার উকিল, দেলোয়ার হোসেন, আবদুস সোবহান গোলাপ, বিপ্লব বড়ুয়া, সেলিম মাহমুদ, সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


এদিকে মনোনয়নপত্র বিতরণ সংক্রান্ত দলের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে আওয়ামী লীগ। তাতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলায় ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগ এবং তৃতীয় তলায় রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হবে। আর সব বিভাগের মনোনয়নপত্র জমা নেয়া হবে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায়। কোনো ধরনের অতিরিক্ত লোকসমাগম ছাড়াই প্রার্থী নিজে অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা দেবেন। আবেদনপত্র সংগ্রহের সময় অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি সঙ্গে আনতে হবে। তার ওপর মোবাইল নম্বর ও বর্তমান সাংগঠনিক পরিচয়সহ তিনটি পদ সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। অনলাইনেও মনোনয়নপত্র কেনার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মনোনয়ন ফরমের মূল্য ৩০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করার বিষয়ে আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।


শেয়ার করুন