২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৮:২০:০৩ অপরাহ্ন
সিএনজি হিসেবে ভোলার গ্যাস বিতরণ শুরু
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-১২-২০২৩
সিএনজি হিসেবে ভোলার গ্যাস বিতরণ শুরু

সিএনজি (কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস) হিসেবে ভোলার গ্যাস আনা শুরু হয়েছে। ধামরাইয়ের গ্রাফিক্স টেক্সটাইল কারখানা প্রথম গ্রাহক হিসেবে এ গ্যাস ব্যবহার করছে। সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির কাছ থেকে কিনে তিতাস গ্যাসের গ্রাহক পর্যন্ত এই গ্যাস পৌঁছে দিচ্ছে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং। গ্যাস সংকটে ভুগতে থাকা ঢাকা অঞ্চলের শিল্পের স্বল্প চাপ দূর করতে ভোলার সিএনজি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এই কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। ইন্ট্রাকো দিনে ৫ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফ) গ্যাস আনতে পারবে। বর্তমানে একমাত্র গ্রাহক গ্রাফিক্স টেক্সটাইলের চাহিদা ১৫ হাজার ঘনফুট। এজন্য দিনে তিন গাড়ি সিএনজি আনা হবে। গ্রাহক বাড়লে সরবরাহ বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিয়াদ আলী। তিনি জানান, আগামীতে পর্যায়ক্রমে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আনা হবে। গ্যাস নেওয়ার জন্য অনেক শিল্প মালিক যোগাযোগ করছেন।


পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইন্ট্রাকো ভোলার গ্যাস সিএনজি করে আনতে গত মে মাসে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে। ইন্ট্রাকো প্রতি ঘনমিটার গ্যাস ১৭ টাকায় কিনে ৪৭ টাকা ৬০ পয়সায় বিক্রি করবে।


শিল্পে এখন প্রতি ঘনমিটার গ্যাস ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বেশি এমন প্রশ্নে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ভোলা-বরিশাল পাইপলাইন করতে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা লাগবে। পাইপলাইনের টাকা সরকার দেয়, তাই কেউ সেটি হিসাব করে না। জমি ও পাইপের দাম কেউ বিবেচনায় নেয় না। শুধু গ্যাসের দাম হিসাব করা হয়। পাইপের দাম বিবেচনা করলে এই দাম খুব বেশি না।


অনুষ্ঠানে জ্বালানি সচিব নুরুল আলম বলেন, দৈনিক ৫ এমএমসিএফ সিএনজি আনা হচ্ছে। পরে তা আরও বাড়বে। তিনি বলেন, এলএনজি আমদানি করছি অনেক বেশি দামে। আমদানি কমাতে পারলে সাশ্রয় হবে। 


পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, দৈনিক গ্যাসের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুটের মতো। আর সরবরাহ হচ্ছে ৩ হাজার মিলিয়ন ঘনফুটের নিচে। এর মধ্যে দেশীয় গ্যাস থেকে আসছে ২ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট মতো, আমদানি হচ্ছে কমবেশি ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট। ২০৪১ সালে পরিকল্পনায় দুটি এলএনজি টার্মিনাল চালু হবে। ওমান ও কাতারের সঙ্গে আরও একটি করে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করেছি।


জনেন্দ্র নাথ বলেন, চাহিদা ও সরবরাহে ঘাটতি থাকায় কিছু এলাকায় গ্যাসের মারাত্মক স্বল্প চাপ বিরাজ করছে। বিশেষ করে পাইপলাইনের শেষ প্রান্তে। তিনি বলেন, পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে গ্যাস আমদানির প্রক্রিয়া চলছে। সরকারের অনুমতি পেলে শিগগিরই চুক্তি করা হবে। পাশাপাশি দেশের মধ্যে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে মহাপরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। ৪৬টি কূপ খননের যে কাজ চলমান রয়েছে, সেটির লক্ষ্য বাড়িয়ে ৪৮ করা হয়েছে। এই প্রকল্পে ৯টি কূপ খনন করা হয়েছে তাতে সাতটিতে গ্যাস পেয়েছি। এতে করে ১২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ২০২৬ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে আরও ১২০টি কূপের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছি। 


উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন পিএলসির চেয়ারম্যান এইচএম হাকিম আলী। তিনি বলেন, গাড়িতে যখন সিএনজি দেওয়া হলো, তখন সমালোচনা হয়েছিল। এখন কিন্তু সেই সিএনজি নিয়ে আর সমালোচনা নেই। এখানেও প্রথমে সমালোচনা হচ্ছে, পরে আর থাকবে না।


শাহবাজপুর ও ভোলা দুই গ্যাসক্ষেত্রে মজুত রয়েছে ২.০৪ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। দৈনিক উৎপাদন সক্ষমতা ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট। চাহিদা ৭০ থেকে ৮০ মিলিয়ন ঘনফুট। প্রায় ১২০ এমএমসিএফ গ্যাস অব্যবহৃত থাকে। ঢাকা ও গাজীপুরের সংকট মেটাতে ভোলার বাড়তি গ্যাস কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাইপলাইন নির্মাণ ব্যয়বহুল বলে সিএনজি আকারে গ্যাস আনার সিদ্ধান্ত হয়।


শেয়ার করুন