২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০৩:৩৮:২০ অপরাহ্ন
সুবর্ণচরে ধর্ষণ: ভোট এলেই আতঙ্কে থাকেন সেই নারী
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩১-১২-২০২৩
সুবর্ণচরে ধর্ষণ: ভোট এলেই আতঙ্কে থাকেন সেই নারী

ঠিক পাঁচ বছর আগের ঘটনা। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পছন্দের দলকে ভোট দেওয়ায় দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন নোয়াখালীর সুবর্ণচরের এক নারী। চরজুবিলী ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য রুহুল আমিনের নেতৃত্বে একটি দল ধর্ষণ করছিল তাঁকে। ন্যক্কারজনক এই ঘটনার পাঁচটি বছর কেটে গেলেও এখনো বিচার পাননি ভুক্তভোগী সেই নারী। এখন ভোট এলেই আতঙ্কে থাকেন ওই নারী ও তাঁর পরিবার।


নির্যাতনের শিকার ওই নারীর সঙ্গে সম্প্রতি কথা হয় আজকের পত্রিকার। নিজের নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা খুবই আতঙ্কের মধ্যে আছি। কোনো নির্বাচন আসলেই ভয় কাজ করে। না জানি আবার কোন হুমকি দেয়। আবার কেউ ভোট দিতে কেন্দ্রে যেতে বলে।’


এই নারী জানান, তিনি কোনো রাজনীতি করেন না। কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মী কখনোই ছিলেন না। শুধু বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক তাঁর পছন্দের। তাই সেই প্রতীকে ভোট দেওয়ায় এমন নৃশংস ঘটনার মুখে পড়তে হয়েছে।


ধর্ষণের ওই ঘটনার পর সুবর্ণচরের চরজব্বার থানায় একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। মামলায় তৎকালীন ইউপি সদস্য রুহুল আমিনসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। একজন আসামি এখনো অধরা।


মামলাটির কী অবস্থা জানতে চাইলে আইনজীবী মোল্লা হাবিবুর রসূল মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এর মধ্যে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়েছে। রায় ঘোষণা হবে আগামী ১৭ জানুয়ারি। মামলায় আসামিরা প্রত্যক্ষভাবে অপরাধী তা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আদালত এই ঘটনার দৃষ্টান্ত রায় দেবেন।’


কী হয়েছিল সেদিন

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, আগের দিন ২৯ ডিসেম্বর বিকেলে এলাকার সবাইকে স্থানীয় ইউপি সদস্য রুহুল আমিন পরদিন ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী ওই নারীও ৩০ ডিসেম্বর বিকেলে ভোট দিতে যান। ভোটকেন্দ্রে যেতেই স্থানীয় কয়েকজন যুবক তাঁর ভোট হয়ে গেছে বলে বাড়ি চলে যেতে বলেন। তিনি বলেন, ‘আমি এত কষ্ট করে টোকেন খুঁজে বের করে ভোট দিতে আসছি। আমার ভোট দিতেই হবে। এ কথা বললে ওই যুবকেরা আমাকে ভোট দিতে দেয়। তারপর ভোটকেন্দ্রের ভেতরে গিয়ে দেখি একটি টুলের ওপর ব্যালট পেপার রাখছে। কোনো গোপন কক্ষও ছিল না। আমি ব্যালট হাতে নিয়ে ধানের শীষে সিল দিয়েছি। তারপর তারা আমার ব্যালট পেপার ভাঁজ করে দিতে চায়। আমি সেটা করতে না দিয়ে ব্যাটলটি বাক্সে রেখে চলে আসছি।’


এই নারী আরও জানান, রুহুল আমিন ও তার সঙ্গে থাকা যুবকেরা সে সময় তাঁকে দুই আঙুল দেখিয়ে কিছু একটা ইঙ্গিত দেয়। বিকেলে ভোট শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা বাড়িতে ঢুকে তাঁর স্বামী ও ছেলেকে বেঁধে ফেলে। পরে পালাক্রমে তাঁকে ধর্ষণ করে।


শেয়ার করুন