২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০১:১৫:৪৬ পূর্বাহ্ন
জাপা চায় প্রধান বিরোধী দল ও মন্ত্রীত্ব
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০১-২০২৪
জাপা চায় প্রধান বিরোধী দল ও মন্ত্রীত্ব

দ্বাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধী দল ও ক্ষমতাসীন দলে থাকতে চায় জাতীয় পার্টি। মাত্র ১১ আসনে জয়ী জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা চান প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসতে ও মন্ত্রীসভায় গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মন্ত্রী পদ। এদিকে প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় আসতে চান স্বতন্ত্ররা সদস্যরাও। একে আজাদের নেতৃত্বে তাদের ভেতর দফায় দফায় চলছে আলোচনা।


জানা গেছে, টানা তৃতীয়বারের মতো বিরোধী দলের আসনে বসতে চায় জাতীয় পার্টি। বুধবার (১০ জানুয়ারি) শপথ নেয়ার পরপরই সংসদের স্পিকারের কাছে পার্টির সংসদীয় সভার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেয়া হবে।


এ বিষয়ে যুগ্ম দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম গণমাধ্যমকে জানান, জাতীয় পার্টি এবারও সংসদের প্রধান বিরোধী দল হতে চায়। বিরোধী দলীয় নেতা হবেন চেয়ারম্যান জিএম কাদের। আর বিরোধী দলীয় উপ-নেতা হতে পারেন সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও চিফ হুইপ হতে পারেন কো-চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদার। তবে বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। শপথের পর পার্টির সংসদীয় বৈঠকে ঠিক হবে। এরপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা চিঠিতে জানানো হবে স্পিকারকে।


এদিকে জাপার একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, দলের তিন শীর্ষনেতা ও সাবেক মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম, মুজিবুল হক চুন্নু ও রুহুল আমিন হাওলাদার আবারও মন্ত্রীত্ব পেতে জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। । এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছেন সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম। তিনি দশম সংসদে আওয়ামী লীগের মন্ত্রীসভায় পানিসম্পদ মন্ত্রী ছিলেন। একই সময়ে মুজিবুল হক চুন্নু ছিলেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী।


যুগ্ম দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম আরো জানান, সিনিয়র নেতারা মন্ত্রী হতে চেষ্টা করবেন। তবে বিরোধী দলেই থাকতে চায় পার্টির বেশিরভাগ সদস্য।


তবে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে মন্ত্রী সভায় যোগদান বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি জাপার কোনো নেতা। এ প্রসঙ্গে রুহুল আমিন হাওলাদার গণমাধ্যমে বলেন, আমি শপথের জন্য তড়িঘড়ি করে ঢাকায় আসছি। প্রতিদ্বন্দ্বি বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থিকে প্রায় ৫১ হাজার ভোটে হারিয়েছি। মন্ত্রী পাওয়া না পাওয়া পার্টি ও সরকারের ওপর নির্ভর করছে। এগুলো নিয়ে পরে বলা যাবে।


এ নিয়ে সংসদীয় বৈঠকে আলোচনা হবে বলে জানান মহাসচিব চুন্নু। তিনি বলেন, মন্ত্রীত্ব নিয়ে আলোচনা হয়নি। আমরা এক সঙ্গে সবকিছু বিবেচনা করে ঠিক করব। তবে অবশ্যই আমরা বিরোধী দল হতে চাই।


এদিকে ফরিদপুর-৩ সদর আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে বিজয়ী এ কে আজাদ গণমাধ্যমে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করলেই শুধু স্বতন্ত্রদের নিয়ে বিরোধী দল গঠনের বিষয়টি সামনে এগোতে পারে। তবে জাতীয় পার্টি মাত্র ১১টি সিট পেয়েছে আর স্বতন্ত্র পেয়েছে ৬২টি। যদি নেত্রী মনে করেন, আমাদের বিরোধী দল গঠন করা উচিত তবেই তা আলোর মুখ দেখবে।


মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলির বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সংসদ সদস্য এ কে আজাদ আরও বলেন, নেত্রী আমাদের আহ্বান করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানোর জন্য। নেত্রীর আহ্বানেই আমরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। আওয়ামী লীগের বাইরের লোক কিন্তু আমরা না। আমার এখানে যারা উপস্থিত রয়েছেন তারা সবাই কিন্তু আওয়ামী লীগের পদাধিকার ব্যক্তি।


দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ফলাফলের পরিপ্রেক্ষিতে কারা বিরোধী দলের আসনে বসছে সেটি নিয়ে নানা আলোচনা হচ্ছে। ভোটের পরদিন সোমবার (৮ জানুয়ারি) এ বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, বিষয়টি নতুন প্রধানমন্ত্রী ঠিক করবেন।


যদিও ওইদিন দুপুরে গণভবনে ভারতীয় এক সাংবাদিকের একই বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আপনি আমাকে বিরোধীদলের জন্য একটি রাজনৈতিক দল সংগঠিত করতে বলেন, আপনি যদি চান আমি করে দিতে পারি। কিন্তু সেটাতো সত্যিকারের বিরোধী দল হবে না, তাই না?


একই বিষয়ে ওইদিন বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, স্বতন্ত্র যারা জয়লাভ করেছেন, তাদের অবস্থান কী- সেটা যতক্ষণ না পর্যন্ত পরিষ্কার হবে; তারা নিজেরা জোট করবেন নাকি আলাদা থাকবেন- সেটি যতক্ষণ পর্যন্ত পরিষ্কার না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বিরোধী দল কে, কাকে বলা হবে সেটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।


এমন পরিস্থিতিতে বুধবার সকালে জাতীয় সংসদ ভবনে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণের আগে এই নিয়ে জট খুলছে না।


শেয়ার করুন