২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৫:৪৭:৪৬ অপরাহ্ন
মিল গেটে চালের দাম কমেছে কেজিতে চার টাকা
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০১-২০২৪
মিল গেটে চালের দাম কমেছে কেজিতে চার টাকা

সরকারের কঠোর অবস্থানে চালের দাম কমতে শুরু করেছে। চালকল মালিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর বুধবারই মিল গেটে মোটা চালের দাম কেজিতে ২টাকা করে কমে প্রতিবস্তা ২৩৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার  এটি আরও দুই টাকা করে কমেছে। এতে বস্তা প্রতি ২২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দুইদিনে ইতোমধ্যে চালের দাম কেজিতে ৪ টাকা কমেছে। তবে এখনো খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েনি।

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জনকণ্ঠকে বলেন, মিল মালিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পরই চালের দাম বস্তা প্রতি একশ’ টাকা করে কমেছে। পরদিন আরও কমেছে। দুই-এক দিনের মধ্যেই দাম আগের অবস্থায় চলে আসবে।

দিনাজপুরের চাল ব্যবসায়ী মো. আব্দুল হান্নান জনকণ্ঠকে বলেন, খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আমরা দাম কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।  বৈঠকের পর ফোন করে সকলকে আহ্বান জানিয়েছি। তাদের বলেছি, যে করেই হোক চালের দাম কমাতে হবে। আমাদের লোকসান হলেও কমাতে হবে। এতে দুইদিনে চালের দাম ৪ টাকা কমেছে।

তিনি বলেন, দিনাজপুর মোকামে চালের দাম বেড়ে মোটা চালের ৫০ কেজির বস্তা ২৪৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল। এতে মিল গেটে কেজি প্রতি দাম পড়ত ৪৮ টাকা ৬০ পয়সা। পরের দিন এই বস্তার দাম ২৩৩০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। এতে দাম পড়ে ৪৬ টাকা ৬০ পয়সা। বৃহস্পতিবার এই দাম ২২০০ টাকায় নেমে আসে। তাতে কেজি প্রতি দাম পড়ে ৪৪ টাকা। এছাড়া কিছু চাল ২৩০০ টাকা করেও বিক্রি হচ্ছে।


এদিকে মিল গেটে দাম কমলেও খুচরা বাজারে চালের দাম আগের অবস্থায় আছে। রাজধানীর খুচরা বাজারে মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা কেজি। এছাড়া পাইজাম ও লতা জাতীয় চাল বিক্রি হচ্ছে  কেজি প্রতি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। নাজির ও মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭৮ টাকা কেজি দরে। খুচরা ব্যবসায়িরা বলছেন, পাইকারি বাজারে এখনো দাম কমেনি। আমরা বেশি দামে কিনেছি। দাম কমলে আমরাও কমিয়ে দেব।

পাশাপাশি অবৈধ মজুতকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। তিনি বলেন, অবৈধ মজুতকারীদের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। ফুড  গ্রেন লাইসেন্স ছাড়া ধান-চালের ব্যবসা করতে পারবে না।

বৃহস্পতিবার সচিবালয় থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আট বিভাগের প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অবৈধ মজুতবিরোধী কার্যক্রম গতিশীল করতে এক মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন,  কেউ ফুড  গ্রেন লাইসেন্স ছাড়া ধান-চালের ব্যবসা করতে পারবে না। লাইসেন্স ছাড়া  কেউ অবৈধ মজুত করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন খাদ্যমন্ত্রী। সরকারের অগ্রাধিকার এখন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করে সাধারণ মানুষকে শান্তিতে রাখা। সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আসবে খুব শীঘ্রই।

তিনি বলেন, এরই মধ্যে ঢাকাসহ  দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় অবৈধ মজুত ধরা পড়েছে। অভিযানে জরিমানা করা হয়েছে এবং  সেই চাল দ্রুত বিক্রি করার ব্যবস্থা হয়েছে। অভিযান চলমান রাখতে এবং সফল করতে বিভাগীয় কমিশনারদের নির্দেশনা  দেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ক্যাপাসিটির বেশি  কেউ মজুত করছে কি না তা নিশ্চিত করতে হবে। পাক্ষিক রিপোর্ট দিচ্ছেন কি না  সেটাও  দেখতে হবে। প্রয়োজনে ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নিতে হবে। তবে এতে সাধারণ কৃষক বা গৃহস্থ  যেন হয়রানির শিকার না হন, সেদিকে  খেয়াল রাখারও আহ্বান জানান খাদ্যমন্ত্রী।

খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক  মো. সাখাওয়াত  হোসেন, সব বিভাগীয় কমিশনার,  জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও  জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকরা ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।


শেয়ার করুন