২২ নভেম্বর ২০২৪, শুক্রবার, ০২:৩১:১১ পূর্বাহ্ন
রাজশাহীর সংরক্ষিত আসনে কে হচ্ছেন সংসদ সদস্য
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০১-২০২৪
রাজশাহীর সংরক্ষিত আসনে কে হচ্ছেন সংসদ সদস্য

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথগ্রহণ হয়ে গেছে। গঠন করা হয়েছে নতুন মন্ত্রিসভারও শপথ হয়েছে। এরমধ্যে শুরু হয়েছে সংরক্ষিত নারী আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ। সরকার গঠনের পরপরই সরব হয়ে উঠেছেন নারী প্রার্থীরা। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হবে সংরক্ষিত আসনের ভোট।


দ্বাদশ সংসদের সংরক্ষিত ৫০ আসনের নির্বাচন এবং ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচন তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এ তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। কমিশনের অনুমোদন পেলে চলতি সপ্তাহে সংরক্ষিত নারী আসনের ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হতে পারে।


বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, সরাসরি ভোটে জয়ী দলগুলোর আসন সংখ্যার অনুপাতে নারী আসন বণ্টন করা হয়। সংসদের সাধারণ আসনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা সংরক্ষিত আসনের নির্বাচনের ভোটার হন। তবে এবার দুটি সংরক্ষিত আসন বাদে ৪৮টি আসনই আওয়ামী লীগের হাতে আছে।


সংরক্ষিত আসনে রাজশাহী থেকে কে হচ্ছেন নারী সংসদ সদস্য তা নিয়ে এখনই কুঁড়ি থেকে শাখা-প্রশাখায় মেলছে নানান জল্পনা-কল্পনা। নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের পরপরই সম্ভাব্য নারী সংসদ সদস্য প্রার্থীদের নজর এখন সেদিকেই। বিষয়টি নিয়ে দেন-দরবারের জন্য ইতোমধ্যে ঢাকায় অবস্থান করছেন কেউ কেউ।


রাজশাহী থেকে সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়নের জন্য এবার বেশ কয়েকজন নারী নেত্রী দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। তারা হলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহীন আক্তার রেনী সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আদিবা আনজুম মিতা, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মর্জিনা পারভীন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নাসরিন আক্তার মিতা, সহসভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রোকসানা মেহবুবা চপলা, সাবেক মহানগর মহিলা লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইফফাত আরা কামাল।


সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে এবার নতুন মুখ হচ্ছেন- মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহীন আক্তার রেনী। দিনি রাজনীতি ও সমাজসেবায় ইতোমধ্যেই নিজেকে প্রমাণ করেছেন। তিনি ইতোমধ্যেই জনপ্রিয় রাজনৈতিক নারী নেত্রী হয়ে উঠেছেন। নারীদের সংগঠিত করার পেছনে তার অবদান রয়েছে বলে দৃঢ়ভাবে মনে করেন নেতাকর্মীরা।


গত সিটি ও সংসদ নির্বাচনে নারীদের নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন শাহীন আক্তার রেনী। এছাড়া দলীয় কার্যক্রমের পাশাপাশি সব সময় বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত রাখার কারণে ইতোমধ্যে বিশিষ্ট সমাজ সেবক হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছেন। এজন্য তাকে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য করতে ইতোমধ্যেই জোরালো দাবি উঠেছে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে।


এরপর ২০০৮ সালে আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দ্বিতীয়বারের মত সংসদ সদস্য হন প্রয়াত জিনাতুন নেসা তালুকদার। ২০১৪ সালে তৃতীয় দফায় আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের সময় বাদ পড়েন তিনি। রাজশাহী থেকে সংরক্ষিত আসনে সেবার নতুন মুখ হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি বেগম আখতার জাহান। একাদশ জাতীয় নির্বাচনে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হন যুব মহিলা লীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আদিবা আনজুম মিতা। অনেকটা চমক দিয়ে তিনি এই আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।


সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী রোকসানা মেহবুবা চপলা বলেন, আমি ও আমার পরিবার দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। ছাত্রলীগ থেকে শুরু হয়ে এখন আমি জেলা কমিটির সদস্য পদে আছি। আশা করছি, দল আমাকে নিরাশ করবে না।


জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মর্জিনা পারভীন বলেন, আমি ১৯৯৫ সাল থেকে মহিলা আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিচ্ছি। বর্তমান যারা আছে তাদের চেয়ে আমি অনেক সিনিয়র। সংরক্ষিত আসনের জন্য আমি দাবি করতেই পারি। দলীয় নেত্রী যদি চায় তাহলে আমি অবশ্যই এই আসনের এমপি হবো।


বর্তমান সংসদ সদস্য ও মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আদিবা আনজুম মিতা বলেন, এই আসনের গত টার্মের সংসদ সদস্য ছিলাম। মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করেছি। দরিদ্র মানুষদের সহযোগিতা করেছি। আশা করছি, আমি আবারও এই পদে আসবো। নেত্রীর প্রতি আমার আস্থা ও ভরসা আছে।


বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও রাজশাহী মহানগর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইফফাত আরা কামাল বলেন, আমি দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। রাজশাহী মহানগরীতে নারীদের সংগঠিত করার জন্য আমার অবদান আছে। মহিলা লীগে ১৯৯০ সাল থেকে যুক্ত। ওয়ার্ড থেকে থানা হয়ে মহানগর এখন কেন্দ্রে আছি। যদি দল ও নেত্রী আমাকে চায় তাহলে অবশ্যই সংরিক্ষত আসনের সংসদ সদস্য হবো। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা যা মঙ্গলজনক হবে তিনি আমাদের জন্য তাই করবেন।


জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসরিন আক্তার মিতা বলেন, ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে শুরু করে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এখানেই দুই টার্মের দায়িত্ব পালন করেছি। এর আগে দলের কাছে কিছু চাইনি। এবার সংরক্ষিত আসন চাইবো। নেত্রী যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই সংসদ সদস্য বানাবেন। তবে আমিও আশাবাদী।


রাজশাহী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা বলেন, মনোনয়ন অনেকেই চাইবেন। তবে এর মধ্যে যিনি সৎ, যোগ্য ও সাংগঠনিক, তাকেই আমরা চাইবো। আমাদের দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা যা ভালো বুঝবেন তাই করবেন। আমরাও যোগ্য সংসদ চাই এ আসনে।


রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল বলেন, কে প্রার্থী হচ্ছে না হচ্ছে আমি তা জানি না। নেত্রী যা ভালো বুঝবেন তাই করবেন। রাজশাহীতে কতগুলো প্রার্থী আছেন সেটাও আমার অজানা। তাই এ বিষয়ে আমার কোনো মতামত নেই।


শেয়ার করুন