সিংগাইর উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে পুলিশের সামনে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিবেশীরা। শনিবার সকালে উপজেলার চান্দহর ইউনিয়নের আটিপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। নিহত আবদুল কুদ্দুস ওই গ্রামের মিনাজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি বাঁশ ও কাঠের ব্যবসা করতেন।
চান্দহর ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তার ও জমি নিয়ে বিরোধের জেরে শনিবার দুই দফা সংঘর্ষ হয়। প্রথমে সকাল ৭টার দিকে সিরাজপুরহাটের উত্তর পাশে আবুল কালামের নেতৃত্বে মিলন, জুবায়ের, আবদুল আলীম, রাসেল, জব্বার, হারুনসহ ১০-১৫ জন দেশি অস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষ শাহিনুর ও ফারুকের ওপর হামলা করে। এ সময় দায়ের কোপে শাহিনুরের বাম পা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়। ফারুক মারাত্মক জখম হয়। তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ সংঘর্ষের খবর পেয়ে শান্তিপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই আবদুস সালাম মিয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। দেড় ঘণ্টা পর পুলিশের উপস্থিতিতে দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষ হয়। আটিপাড়া মসজিদের সামনে ব্যবসায়ী আবদুল কুদ্দুসের ওপর হামলা করা হয়। এলোপাতাড়ি দায়ের কোপে তিনি গুরুতর আহত হন। তাকে বাঁচাতে বোন জাবেদা এগিয়ে গেলে তাকেও জখম করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে কুদ্দুসের মৃত্যু হয়।
প্রথম সংঘর্ষের ঘটনায় শাহানা ইসলাম বাদী হয়ে আবু কালামকে প্রধান আসামি করে ১৩ জনের নামসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। হারুনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
নিহত কুদ্দুস সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু এমপির সমর্থক। অপরদিকে হামলাকারীরা নৌকা প্রতীকের পরাজিত প্রার্থী মমতাজ বেগমের সমর্থক।
আহত জাবেদা বলেন, পুলিশের উপস্থিতিতে আমার ভাইকে এলোপাতাড়ি কোপানো হয়। পুলিশ ব্যবস্থা নিলে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটত না।
সিংগাইর থানার শান্তিপুর (বাঘুলি) তদন্ত কেন্দ্রের এসআই আবদুস সালাম মিয়া বলেন, কোনোভাবেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়নি। আমাদের কথা না শোনায় এমন ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি ওসি ও সার্কেল প্রধানকে জানিয়েছি। এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রথম ঘটনায় মামলা হয়েছে। দ্বিতীয় ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেনি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত হারুনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রোববার পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।