২৮ এপ্রিল ২০২৪, রবিবার, ০২:৪৬:০৭ অপরাহ্ন
নতুন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানকে কর নেটওয়ার্কে আনার উদ্যোগ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০২-২০২৪
নতুন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানকে কর নেটওয়ার্কে আনার উদ্যোগ

লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায়ে মরিয়া হয়ে উঠেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আমদানি কমে যাওয়ার কারণে এ খাত থেকে শুল্ক আদায় হ্রাসে আয়কর খাতে মনোনিবেশ করছে সরকারির রাজস্ব আদায়কারী এ সংস্থাটি। এ লক্ষ্যে সম্ভাব্য নতুন নতুন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আয়করের আওতায় নিয়ে আসার জোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এনবিআর পক্ষ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে, আগামী জুন মাস নাগাদ আয়কর রিটার্ন দাখিলকারীদের সংখ্যা ৪০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে। এরই মধ্যে টিআইএনধারীদের সংখ্যা এক কোটির মাইলফলক ছুঁয়েছে চলতি এই ফেব্রুয়ারি মাসেই। এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এ দিকে চলতি অর্থবছরের (২০২৩-২৪) প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বরে) রাজস্ব ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার ২২৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে ডিসেম্বর মাসেই ঘাটতি ছয় হাজার ৭৮২ কোটি ২১ লাখ টাকা। এর আগে জুলাই-নভেম্বরে রাজস্ব ঘাটতি ছিল ১৬ হাজার ৪৫৯ কোটি টাকা। ফলে এক মাসের ব্যবধানে ঘাটতি বেড়েছে ছয় হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা।


এনবিআরের পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, আমদানি ও রফতানিপর্যায়ে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ আট হাজার ৫৬৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। একই সময়ে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাটে ঘাটতি হয়েছে ছয় হাজার ৭০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। আর আয়কর খাতে ঘাটতির পরিমাণ আট হাজার ৫৯২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে চার লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। ছয় মাসে এক লাখ ৮৮ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সরকারের খাতায় রাজস্ব জমা হয়েছে এক লাখ ৬৫ হাজার ৬২৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৩ হাজার ২২৭ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে।

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ সালে সালে দেশে টিআইএনধারী ছিল ১৬ লাখের মতো। সেই হিসাবে এক দশকে টিআইএনধারীদের সংখ্যা বেড়েছে ছয় গুণেরও বেশি। এর মধ্যে প্রায় দেড় লাখের মতো কোম্পানি ও ফার্ম, বাদবাকিরা ব্যক্তি বা কর শনাক্তকরণ নম্বর বা টিআইএনধারী।


 


জানা গেছে, বর্তমানে টিআইএন নেয়া এবং রিটার্ন সাবমিশনের হার বেড়েছে। প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজার করে টিআইএন নেয়া হচ্ছে। এর কারণ ব্যাখ্যা করে এনবিআরের এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন এনবিআর ৪৩টি সেবা নেয়ার ক্ষেত্রে প্রুফ অব সাবমিশন অব রিটার্ন (পিএসআর) বাধ্যতামূলক করায় অনেকে বাধ্য হচ্ছে টিআইএন নিতে। কারণ টিআইএন ছাড়া রিটার্ন সাবমিশন করা বা এর প্রমাণ দেখাতে পারবে না। এ জন্য টিআইএনধারী বাড়ছে, রিটার্ন সাবমিশনও বাড়ছে।’

অবশ্য এনবিআরের বর্তমান বিধান অনুযায়ী, প্রায় সব টিআইএনধারীর ট্যাক্স রিটার্ন সাবমিট করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু এনবিআরের হিসাব অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহ আগ পর্যন্ত রিটার্ন সাবমিশন হয়েছে ৩৬ লাখের মতো; অর্থাৎ টিআইএনধারীর প্রায় দু-তৃতীয়াংশই রিটার্ন সাবমিট বা তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব সরকারকে জানাচ্ছেন না।

এ দিকে ৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনে এক অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো: রাহমাতুল মুনিম জানিয়েছেন, আগামী জুনের মধ্যে রিটার্ন জমা ৪০ লাখে পৌঁছাবে। তিনি বলেন, ২০২০ সালে ট্যাক্স রিটার্ন সাবমিশনের সংখ্যা ছিল ২১ লাখ, যা ২০২৪ সালে ৪০ লাখে (আগামী জুন নাগাদ) উন্নীত হতে যাচ্ছে; অর্থাৎ চার বছরে রিটার্ন জমা বাড়বে দ্বিগুণ।


শেয়ার করুন