২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ০৪:১২:৫০ অপরাহ্ন
ছয় মাসের মধ্যে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ভাতা দেয়ার নির্দেশ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০২-২০২৪
ছয় মাসের মধ্যে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের ভাতা দেয়ার নির্দেশ

এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৫ লাখের বেশি শিক্ষক ও কর্মচারীকে অবসরের ৬ মাসের মধ্যে অবসরকালীন সুবিধা দেয়ার নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। গতকাল বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ রায় দেন।


আদালত বলেন, শিক্ষকদের রিটায়ারমেন্ট বেনিফিট (অবসরকালীন সুবিধা) পেতে বছরের পর বছর ঘুরতে হয়। এই হয়রানি থেকে তারা কোনোভাবেই পার পান না। একজন প্রাথমিকের শিক্ষক কতো টাকা বেতন পান, সেটাও বিবেচনায় নিতে হবে। এজন্য তাদের অবসরভাতা ৬ মাসের মধ্যে দিতে হবে। 


 


আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন এডভোকেট ছিদ্দিক উল্যাহ মিয়া। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত। পরে এডভোকেট ছিদ্দিক উল্যাহ মিয়া বলেন, সারা দেশে এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় ৫ লাখের বেশি শিক্ষক কর্মচারী অবসরকালীন সুবিধা পেতে ২০১৯ সালে একটি রিট দায়ের করেছিলাম। রিটে বলা হয়, ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন থেকে ৬ শতাংশ কেটে নেয়া হতো। সেই কর্তনকৃত টাকাসহ সুবিধা অবসরের পর দেয়া হতো। এই অবস্থায় ২০১৭ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নতুন করে ১০ শতাংশ কেটে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।


 


১০ শতাংশ কেটে নেয়া হলেও ৬ শতাংশের যে সুবিধা দেয়া হতো সেটাই বহাল রাখা হয়। যে কারণে আমরা রিট করে বলেছি, যাতে ১০ শতাংশের সুবিধা দেয়া হয়। এরপর এই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। সেই রুলের শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণা করা হয়। 


 


রায়ে আদালত বলেছেন, ১০ শতাংশ কেটে নেয়া হলেও তাদের যেন বাড়তি সুবিধা দেয়া হয়। একইসঙ্গে অবসরের ৬ মাসের মধ্যে যেন অবসরকালীন সুবিধা দেয়া হয়।

ছিদ্দিক উল্যাহ মিয়া বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট প্রবিধানমালা-১৯৯৯ এর প্রবিধান-৬ এবং বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা প্রবিধানমালা-২০০৫ এর প্রবিধান-৮ অনুযায়ী শিক্ষক ও কর্মচারীদের মূল বেতনের ২ শতাংশ এবং ৪ শতাংশ কাটার বিধান ছিল। যার বিপরীতে শিক্ষকদের ট্রাস্টের তহবিল থেকে শিক্ষক ও কর্মচারীদের কিছু আর্থিক সুবিধা দেয়া হতো। কিন্তু ২০১৭ সালের ১৯শে এপ্রিল উল্লিখিত প্রবিধানমালাগুলোর শিক্ষক ও কর্মচারীদের মূল বেতনের ২ শতাংশ এবং ৪ শতাংশ কাটার বিধানগুলো সংশোধনপূর্বক ৪ শতাংশ এবং ৬ শতাংশ করে দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপনে শিক্ষক ও কর্মচারীদের মূল বেতনের ২ শতাংশ এবং ৪ শতাংশ কাটার পরিবর্তে ৪ শতাংশ এবং ৬ শতাংশ কাটার বিধান করা হলেও উক্ত অতিরিক্ত অর্থ কাটার বিপরীতে শিক্ষক ও কর্মচারীদের কোনো বাড়তি আর্থিক সুবিধার বিধান করা হয়নি। পরে ২০১৯ সালের ১৫ই এপ্রিল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারীদের এপ্রিল ২০১৯ মাসের বেতন থেকে ৬ শতাংশ এবং ৪ শতাংশ টাকা অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টে জমা দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেন। ফলে অতিরিক্ত অর্থ কাটার বিপরীতে কোনো আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধি না করেই শিক্ষক ও কর্মচারীদের মূল বেতনের ৬ শতাংশ এবং ৪ শতাংশ টাকা কাটার আদেশের কারণে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫ লাখ শিক্ষক ও কর্মচারী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে ক্ষুব্ধ হয়ে বিভিন্ন সময়ে অতিরিক্ত অর্থ কাটার আদেশ বাতিল করার জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।  শিক্ষক ও কর্মচারীরা ২০১৯ সালের ১৫ই এপ্রিল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনটি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন।


শেয়ার করুন