রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামী মঙ্গলবার (৫ মার্চ) থেকে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ‘এ’, ‘বি’, ও ‘সি’ তিনটি ইউনিটে অনুষ্ঠিত এ ভর্তি পরীক্ষা আগামী ৫ মার্চ থেকে শুরু হবে।
চলবে ৭ মার্চ পর্যন্ত। ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সীমিত আবাসন ও চিকিৎসা ব্যবস্থাসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।পরীক্ষা উপলক্ষে শুক্রবার (১ মার্চ) বিকেল পৌনে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার।
এদিকে পরীক্ষার প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে রাবি উপাচার্য বলেন, এ বছর বিশেষ কোটাসহ মোট আসন সংখ্যা ৪ হাজার ৪৩৮টি এবং কোটা বাদে আসন সংখ্যা ৩ হাজার ৯০৪টি। এ আসনের বিপরীতে মোট ১ লাখ ৮৫ হাজার ৬৮০টি চূড়ান্ত আবেদন জমা হয়েছে। ‘এ’ ইউনিটে ৭৪ হাজার ৭৮৫টি, ‘বি’ ইউনিটে ৩৪ হাজার ৫৪১টি ও ‘সি’ ইউনিটে ৭৬ হাজার ৩৫৪টি চূড়ান্ত আবেদন সম্পন্ন হয়েছে। এবার একক আবেদনকারীর সংখ্যা ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯৭৭টি। এর মধ্যে পুরুষ আবেদনকারীর সংখ্যা ৯০ হাজার ৪৫৬টি ও নারী আবেদনকারীর সংখ্যা ৬৪ হাজার ৫২১টি। কোটা বাদে আবেদনকারীর সংখ্যা ‘এ’ ইউনিটে ৬৯ হাজার ৫২৭টি, ‘বি’ ইউনিটে ৩২ হাজার ৬১৪টি ও ‘সি’ ইউনিটে ৭০ হাজার ৯৭৬টি।
গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে রাবি উপাচার্য বলেন, পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে ১১টি অভিভাবক টেন্টের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিটি টেন্টে অভিভাবকদের বসার জন্য ২০০টি করে চেয়ার থাকবে। পরীক্ষা চলাকালে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে রাবি চিকিৎসাকেন্দ্রের ৪টি অ্যাম্বুলেন্স ও ১টি মেডিকেল টিম, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের ২ সদস্যের ১টি মেডিকেল টিম ও ১টি অ্যাম্বুলেন্স এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ১টি অ্যাম্বুলেন্স ও ২ সদস্যের মেডিকেল টিম কাজ করবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাধারণভাবে ব্যবহারের জন্য ১১টি স্থানে ওয়াশরুমের ব্যবস্থা থাকবে। বিএনসিসি/রোভার স্কাউট/রেঞ্জাররা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত ১২টি হেলপ ডেস্কের মাধ্যমে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সহযোগিতা দেবে। এসব হেলপ ডেস্ক খাবার পানির ব্যবস্থা থাকবে।
আবাসনের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, পরীক্ষার্থীদের বিভিন্ন আবাসিক হলে ও বিশ্ববিদ্যালয় জিমনেসিয়ামে সীমিত আকারে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নারী অভিভাবকদের অবস্থানের জন্য রাবির নারী জিমনেসিয়াম ও পশ্চিম ৯০ নম্বর বাসায় সীমিত ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্রের ফটোকপি ও নিজেদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমাদান সাপেক্ষে পরীক্ষার্থীর অভিভাবক সীমিত আকারে ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে পারবে।
এ ছাড়া ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে লিফলেট বিতরণ, যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা না ফেলার পাশাপাশি পরীক্ষা সংক্রান্ত গুজব, অসাধুচক্রের খপ্পর থেকে সবাইকে সাবধান থাকার আহ্বান জানান তিনি। পরীক্ষা চলাকালে খাবারের দাম ও মান নিয়ে এবং অটোরিকশা, মেস মালিকদের অতিরিক্ত অর্থ আদায় না করার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মতবিনিময় করেছেন বলে জানান তিনি।
ভর্তি পরীক্ষার নিয়মাবলি প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, এবারে এক ঘণ্টাব্যাপী ভর্তি-পরীক্ষা এমসিকিউ পদ্ধতিতে গ্রহণ করা হবে। পরীক্ষা চলাকালে কোনো পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কক্ষের বাইরে যেতে পারবে না। পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন ও ক্যালকুলেটরসহ মেমোরিযুক্ত অন্য কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে রাখা যাবে না। পরীক্ষা শুরুর ১ ঘণ্টা আগে পরীক্ষা ভবনের গেট ও ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষা কক্ষের প্রবেশ গেট খুলে দেওয়া হবে।
বিভাগীয় শহরে কেন পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে না? এমন প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে রাবি উপাচার্য বলেন, তাদের দীর্ঘদিন শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ থাকায় জনবল কম। এ সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারলে সামনের বছর থেকেই বিকেন্দ্রীকরণের দিকে আগাবে রাবি প্রশাসন।
পরীক্ষা চলাকালে যান চলাচলের নির্দেশনা
ভর্তি-পরীক্ষা সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করতে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এসবের মধ্যে আছে ৫ থেকে ৭ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলো শহরের নির্ধারিত স্থান থেকে সকাল সোয়া ৭টায় ক্যাম্পাস অভিমুখে ছেড়ে আসবে। ৫ ও ৬ মার্চ ক্যাম্পাস থেকে বিকেল সোয়া ৫টায় এবং ৭ মার্চ বিকেল পৌনে ৩টায় ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে যাবে। সকাল সাড়ে ৭টার পর ক্যাম্পাসে কোনো প্রকার ভারী যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। এ ছাড়া ৫ থেকে ৭ মার্চ শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাদের ব্যক্তিগত গাড়িসমূহ পার্কিংয়ের জন্য শাবাশ বাংলাদেশ মাঠ ব্যবহার করবেন। তবে তাদের অবশ্যই সকাল সাড়ে ৭টার মধ্যে গাড়িসমূহ পার্কিং করতে হবে। ব্যক্তিগত গাড়ি ও অন্যান্য যানবাহন কাজলা ও বিনোদপুর গেট দিয়ে প্রবেশ করে মেইন গেট দিয়ে বেরিয়ে যাবে।