২৪ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ০৬:২২:৪৩ পূর্বাহ্ন
কৃষকের বন্ধু রাসেলস ভাইপার এখন শত্রু
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০৬-২০২৪
কৃষকের বন্ধু রাসেলস ভাইপার এখন শত্রু

সাপ ধরায় বেশ দক্ষ সাভারের কিরণ। একসময় ঘুরে বেড়াতেন সারা দেশে। সাপ ধরে ছেড়ে দিতেন জঙ্গলে। প্রথম সাপ ধরেছিলেন নিজ বাড়ির গোয়ালঘর থেকে। সেটি ছিল চন্দ্রবোড়া বা রাসেলস ভাইপার। সাপটি দেখেই স্থানীয়রা পিটিয়ে মেরে ফেলতে চেয়েছিলেন। কিরণ সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে সাপটি ধরে জঙ্গলে যেতে সহযোগিতা করেছিলেন। আলোচিত এই রাসেলস ভাইপারের প্রধান খাবার ফসলের শত্রু ইঁদুর।

কৃষকের বন্ধু, এই সাপ এখন শত্রুতে পরিণত হয়েছে। কিরণ এখন বেদে দলের সঙ্গে ঘুরে বেড়ান। সামুদ্রিক মাছের কাঁটা বিক্রিই এখন তার পেশা। সোমবার রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে যুগান্তরের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় কিরণের।

কিরণ বলেন, ‘এখন সাপ নেই বললেই চলে। এক সময় বহু সাপ দেখা যেত। ধরা হতো, মারা হতো না। পুষে খেলা দেখানো হতো, হত্যা করা হতো না। সাপ মানুষখেকো নয়, মানুষকে কখনই কামড়াতে আসে না-যদি না মানুষ তাকে তাড়া না করে। মানুষ তাড়া করলে প্রায় শতভাগ সাপ পালিয়ে যায়। দু-একটি আঘাতপ্রাপ্ত হলে নিজেকে বাঁচাতে ছোবল বসায়। এখন শুনছি ওই সাপ নাকি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। অথচ দেশে এখন সাপের আকাল সবচেয়ে বেশি। সাপ তো চোখেই পড়ে না। মানুষ আসলে সাপ ধরে ধরে মেরে ফেলার মহোৎসবে মেতে উঠবে।

কিরণের সুরেই কথা বললেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. মুসতাক হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘বাঘ মানুষকে হত্যা করে, এজন্য কি সব বাঘ মেরে ফেলতে হবে। পৃথিবীতে অনেক বিষধর প্রাণী রয়েছে, সব মারতে হবে-নিশ্চয়ই না। সাপসহ প্রাণীদের বাসস্থান দিন দিন দখল হচ্ছে। এদের প্রতি দয়াবান না হলে বরং মানুষই সাপসহ প্রাণীদের প্রতি হিংস্র হয়ে উঠছে। এ ব্যাপারে প্রচার চালাতে হবে-একে অপরের (সাপ-মানুষ) দুশমন হবে না। নিশ্চয়ই সাপ মানুষকে খুঁজছে না, মানুষই সাপকে খুঁজছে।’

শেয়ার করুন