২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার, ০৭:২৯:৫২ পূর্বাহ্ন
সুদান: যুদ্ধবিরতির মধ্যেও খার্তুমে ক্ষমতার লড়াই তুঙ্গে
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০৫-২০২৩
সুদান: যুদ্ধবিরতির মধ্যেও খার্তুমে ক্ষমতার লড়াই তুঙ্গে

উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে সামরিক বাহিনীর সাথে দেশটির আধা-সামরিক বাহিনীর মধ্যকার সংঘাত বন্ধে সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হলেও রাজধানী খার্তুমে লড়াই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এতে করে দেশটিতে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধবিরতি অধরা থেকে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৪ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতির মধ্যেই সুদানের রাজধানী খার্তুমের কেন্দ্রে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে আধা-সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর ভয়ঙ্কর লড়াইয়ের কথা শোনা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবারও উভয় পক্ষের মধ্যে লড়াই চলছে এবং সেনাবাহিনী প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ এবং সেনা সদর দপ্তরের আশপাশের এলাকাগুলো থেকে আরএসএফ-কে হটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

রয়টার্স বলছে, সম্ভাব্য আলোচনার আগে যুদ্ধরত উভয় পক্ষই রাজধানীতে অঞ্চল নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াই করছে বলে মনে হচ্ছে। যদিও উভয় পক্ষের নেতারা দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে লড়াইয়ের পরে আলোচনায় বসতে নিজেদের ইচ্ছা প্রকাশ্যে খুব কমই দেখিয়েছেন।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, রাজধানী খার্তুমের পাশাপাশি ওমদুরমান এবং বাহরির মতো পার্শ্ববর্তী শহরগুলোতেও ভারী বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। কয়েকদিন আগে উভয় পক্ষই সাত দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল। তবে সেই যুদ্ধবিরতি বারবারই লঙ্ঘন করা হয়েছে।

পেশায় প্রকৌশলী ৪৯ বছর বয়সী আল-সাদিক আহমেদ খার্তুম থেকে জানিয়েছেন, ‘গতকাল সন্ধ্যা থেকে এবং আজ সকালেও, সেখানে বিমান হামলা এবং সংঘর্ষের শব্দ হচ্ছে। আমরা স্থায়ী আতঙ্কের রাজ্যে চলে এসেছি কারণ বর্তমানে আবাসিক এলাকার আশপাশে কেন্দ্র করেই যুদ্ধ চলছে। আমরা জানি না এই দুঃস্বপ্ন এবং ভয় কখন শেষ হবে।’

এদিকে বুধবার মানবিক সহায়তার ছয়টি ট্রাক লুটপাট এবং রাজধানীতে বিমান হামলার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতিকে ক্ষুণ্ন করার পর পরিস্থিতির নিরাপদ উত্তরণের গ্যারান্টি দিতে সুদানের যুদ্ধরত দলগুলোকে চাপ দিয়েছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘের সহায়তা প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বলেছেন, ত্রাণ সরবরাহের জন্য সহায়তা বহনকারী কনভয়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সুদানের যুদ্ধরত পক্ষগুলোর সাথে তিনি মুখোমুখি বৈঠক করবেন বলে আশা করছেন।

জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, গত ১৫ এপ্রিল শুরু হওয়া সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের মধ্যকার এই লড়াইয়ের ফলে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টির ঝুঁকি রয়েছে। এমনকি সেই বিপর্যয় অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

গত মঙ্গলবার সুদান জানিয়েছে, সংঘর্ষ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৫০ জন মারা গেছেন এবং ৪ হাজার ৯২৬ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া প্রায় ১ লাখ মানুষ সুদান ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়েছে বলে জাতিসংঘ বলেছে।

সেনাবাহিনী বলেছে, তারা আরএসএফ যোদ্ধাদের হত্যা করেছে এবং বাহরি সামরিক অঞ্চলে গোষ্ঠীটির সাথে সংঘর্ষের পর ‘বিদ্রোহীদের’ বেশ কয়েকটি যানবাহন ধ্বংস করে দিয়েছে।

অন্যদিকে আরএসএফ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন এবং ভোর থেকে বাহিনীকে আক্রমণ করার জন্য অভিযুক্ত করেছে। এতে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী কামান ও বিমান দিয়ে তাদের আবাসিক এলাকাগুলোতে ‘কাপুরুষোচিতভাবে’ হামলা চালিয়েছে।

শেয়ার করুন