অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ নির্ভর করছে ‘রাষ্ট্র সংস্কারে’ কত সময় লাগে তার ওপর। কারণ এই সরকার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ছাত্র জনতার ইচ্ছার সরকার। সরকার গঠন করা হয়েছে ডকট্রিন অব নেসেসিটির ওপর ভিত্তি করে।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ ছিল তিন মাস। নির্বাচনের জন্যই ওই সরকার গঠিত হতো। কিন্তু এই সরকারের সুনির্দিষ্ট কোনো মেয়াদ নেই।
অন্তবর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে এই বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়েছে। খবর ডয়চে ভেলের।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টারা ৮ আগস্ট শপথ নিয়েছেন। সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের আলোকে এই সরকারের বৈধতা দিয়েছেন। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ব্যাপারে মতামত দেয় সুপ্রিমকোর্ট।
সংবিধানের ওই অনুচ্ছেদে বলা বলা আছে, ‘যদি কোনো সময়ে রাষ্ট্রপতির নিকট প্রতীয়মান হয় যে আইনের এইরূপ কোনো প্রশ্ন উত্থাপিত হইয়াছে বা উত্থাপনের সম্ভাবনা দেখা দিয়াছে, যাহা এমন ধরনের ও এমন জনগুরুত্বসম্পন্ন যে, সেই সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের মতামত গ্রহণ করা প্রয়োজন, তাহা হইলে তিনি প্রশ্নটি আপিল বিভাগের বিবেচনার জন্য প্রেরণ করিতে পারিবেন এবং উক্ত বিভাগ স্বীয় বিবেচনায় উপযুক্ত শুনানির পর প্রশ্নটি সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে স্বীয় মতামত জ্ঞাপন করিতে পারিবেন।’
কিন্তু এই মতামতে সরকারের কোনো সময় সীমা নেই। সময় সীমা নিয়ে এরই মধ্যে উপদেষ্টার প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়না হাসান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, মেয়াদের বিষয়ে এখন আলোচনা করা বা সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব না। আপনি কী রিফর্ম চান সেটা না বুঝে তো মেয়াদের কথা বলতে পারব না। আর যদি রিফর্ম না চান তাহলে আলাদা কথা। মেয়াদ মেয়াদ নিয়ে অস্থির হওয়ার কিছু নাই। আমরা সকলেই যেন একটি গণতান্ত্রিক দেশের জন্য যাত্রা শুরু করতে পারি সেটার প্রস্তুতির জন্যইতো এই সরকার। সেই প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য যেটুকু সময় প্রয়োজন শুধুমাত্র সেটকু সময়ই আমরা নেব। শেষ পর্যন্ত গণতন্ত্রের দিকেই আমাদের যাত্রা।
আরেকজন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন, এ (মেয়াদের) বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমাদের যেহেতু গণভুত্থানের ভিত্তিতে গঠিত একটি সরকার এবং অনেকগুলো সংস্কারের কথা আমরা বলেছি- সেগুলো আমাদের করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সেটা যত দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্ভব, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে একটি সুন্দর সুশৃঙ্খল ব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে আসার পর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে এই সরকারের মেয়াদ শেষ করব।