২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০২:৫০:৩৫ অপরাহ্ন
‘আয়নাঘর’ নিয়ন্ত্রণ করতেন তারিক আহমেদ সিদ্দিক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৮-২০২৪
‘আয়নাঘর’ নিয়ন্ত্রণ করতেন তারিক আহমেদ সিদ্দিক

শেখ হাসিনা পতনের পর নিখোঁজ থাকা তিনজন ফিরে এসেছেন, যাদের দীর্ঘদিন কোনো হদিস ছিল না। এরপরই আলোচনায় আসে ‘আয়নাঘর’। এর আগেই এই ‘আয়নাঘর’ আলোচনায় এসেছে। কিন্তু এটা বাস্তবে আছে কি না, তা নিয়ে তখন অনেকেরই সংশয় ছিল। কিন্তু ফিরে আসা ব্যক্তিরা গণমাধ্যমে মুখ খোলার পর জানা গেল, বাস্তবে ‘আয়নাঘর’ আছে, যেখানে গুম করে রাখা হয় এবং নির্যাতন করা হয়।


আলোচিত গোপন কারাগার 'আয়নাঘর' তৈরিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।  


পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, ‘আয়নাঘর’ মূলত তৈরি হয়েছে ২০০৯ সালে। এর পেছনে কলকাঠি নেড়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী দলের নেতাদের অপহরণ করে বছরের পর বছর ধরে ‘আয়নাঘরে’ রাখত। আবার কাউকে মেরেও ফেলা হয়েছে। এ বিষয়টি আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষকর্তারা অবহিত ছিলেন। এসব কর্মকাণ্ড করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্তারা পদোন্নতি পাওয়া থেকে শুরু করে পুরস্কৃতও হয়েছেন। সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি পাওয়া ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে গত ১৫ আগস্ট রাতে গ্রেপ্তার করার পর ‌‘আয়নাঘর’সহ নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তিদের বিষয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসবাদ করা হচ্ছে। বর্তমানে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিউ মার্কেট এলাকায় হকার শাহজাহান হত্যা মামলায় আট দিনের রিমান্ডে আছেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে খুন, গুম ও অসংখ্য ব্যক্তির ফোনে আড়িপাতার অভিযোগ।



আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, গোয়েন্দাদের জেরার মুখে জিয়াউল আহসান ও তারিক আহমেদ সিদ্দিকের নাম বলেছেন। জিয়াউল আহসান দীর্ঘদিন র‌্যাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২২ সাল থেকে এনটিএমসির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভিন্নমত এবং বিরোধী রাজনৈতিক দল দমন করার জন্য গুমের মতো অপরাধ সংঘটিত হয়। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক প্রতিপক্ষ পর্যন্ত গুমের ঘটনা ঘটে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাব ও বাহিনীটির কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়।


এনটিএমসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন হলেও এটির নিয়ন্ত্রণ ছিল তারিক আহমেদ সিদ্দিকর হাতে। জিয়াউল এনটিএমসির দায়িত্বে থাকাকালে একের পর এক কল রেকর্ড ফাঁস করেন। রাজনৈতিক ব্যক্তি থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য হুমকি এমন সব ব্যক্তির স্পর্শকাতর কল রেকর্ড তার নির্দেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিতেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে বলে ওই কর্মকর্তা জানান।


শেয়ার করুন