১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, মঙ্গলবার, ০১:৪৫:০১ পূর্বাহ্ন
কমছে পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-০৮-২০২৪
কমছে পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ

দেশের বন্যাকবলিত অধিকাংশ এলাকা থেকে পানি নামতে শুরু করেছে। তবে ধীরগতিতে পানি কমায় পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না খুব একটা। বিভিন্ন সড়ক থেকে পানি কিছুটা নামলেও এখনো বাড়িঘর তলিয়ে রয়েছে। ফলে দুর্ভোগ কমেনি বানভাসি মানুষের। বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় এখনো ত্রাণ না পৌঁছানোয় সংকটে আছেন, ঐসব জায়গার বাসিন্দারা। পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবাও পাচ্ছেন না অনেকে। বাড়ছে পানিবাহিত নানা রোগব্যাধি।


 দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ১১ জেলায় বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫২ জনে দাঁড়িয়েছে। গত এক দিনে পানির বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়েছে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯৭৫ পরিবার। গতকাল বৃহস্পতিবার পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৭২ হাজার ৫৭৯ পরিবারে। একই সঙ্গে গত ২৪ ঘণ্টায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৩ লাখ ৪২ হাজার ২৭১ জন কমে হয়েছে ৫৪ লাখ ৮০ হাজার ৪৬৩ জন।  এদিকে নিহতদের মধ্যে ৩৯ জন পুরুষ, ছয় জন মহিলা ও সাত জন শিশু। এর মধ্যে কুমিল্লায় ১৪ জন, ফেনীতে ১৭, চট্টগ্রামে ৬, খাগড়াছড়িতে ১, নোয়াখালীতে ৮, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১, লক্ষ্মীপুরে ১, কক্সবাজারে তিন জন ও মৌলভীবাজারে এক জন মারা গেছেন। এছাড়া মৌলভীবাজারে এক জন নিখোঁজ রয়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মোট ৫ লাখ ২ হাজার ৫০১ জন মানুষ এবং ৩৬ হাজার ৪৪৮টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ১১ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য মোট ৫৯৫টি মেডিক্যাল টিম চালু রয়েছে।


স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) জানিয়েছে, হবিগঞ্জ, খাগড়াছড়ি, ফেনী, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় উন্নতি হলেও বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে কুমিল্লা, নোয়াখালী, সুনামগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর ও মৌলভীবাজার জেলায়। তবে নতুন করে কোনো জেলা বন্যায় প্লাবিত হয়নি। তারা আরও জানায়, বন্যায় প্রাথমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭ হাজার ৭২২ কিলোমিটার রাস্তা এবং ১ হাজার ১০১টি ব্রিজ-কালভার্ট। এ পর্যন্ত এলজিইডি মেরামত করেছে ৫১ কিলোমিটার রাস্তা এবং ৯৬টি ব্রিজ ও কালভার্ট। বন্যা উপদ্রুত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।


লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, জেলায় এখনো পানিবন্দি ১০ লাখেরও বেশি মানুষ। ১৫০টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৪০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এসব মানুষের কেউ কেউ খাবার, ওষুধ, স্যালাইন ও বিশুদ্ধ পানির সংকটের কথা জানিয়েছেন। এরই মধ্যে দেখা দিয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পানিবাহিত নানা রোগ। আশ্রয়কেন্দ্রে না আসা পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ আরও বেশি। কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমর এবং কোথাও গলাপানির নিচে তলিয়ে রয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। অনেকেই ত্রাণ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছেন প্রসূতি, শিশু ও বৃদ্ধরা। রশিদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে আশ্রয় নেওয়া আলেয়া বেগম বলেন, ‘এক বছরের শিশুসন্তানকে নিয়ে অনেক কষ্টে আছি। সামান্য শুকানো খাবার ও ত্রাণ দেওয়া হয়। এটা দিয়ে চলে না।’ সদর উপজেলার দিঘলী ইউনিয়নের বাসিন্দা খালেক, লোকমান ও মরিয়ম বলেন, ‘খাবার পানি নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। যেটা পাই, কম কম করে পান করি। ত্রাণ হিসেবে বোতলের পানি যথেষ্ট নয়।’ 


শেয়ার করুন