২১ নভেম্বর ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৬:২৮:৪৬ অপরাহ্ন
শিক্ষাক্রমে ঘনঘন পরিবর্তন: বারবার হোঁচট খাচ্ছে শিক্ষার্থীরা
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-১০-২০২৪
শিক্ষাক্রমে ঘনঘন পরিবর্তন: বারবার হোঁচট খাচ্ছে শিক্ষার্থীরা

শিক্ষাক্রমে বারবার পরিবর্তনে বারবার হোঁচট খাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। স্বাধীনতার পর দেশে শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন এসেছে সাত বার। এই সময়ে মূল্যায়ন পদ্ধতির পরিবর্তন হয়েছে তিন বার। সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন হয়েছে গত দেড় দশকে। ১৯৭৭ সালে প্রথম শিক্ষাক্রম প্রণয়নের পর ১৯৮৬ সালে পাঠ্যবইয়ে পরিমার্জন করা হয়। ১৯৯২ সালে প্রাথমিক স্তরে যোগ্যতাভিত্তিক শিক্ষাক্রমে রূপান্তর করা হয়, ১৯৯৫ সালে মাধ্যমিক স্তরে উদ্দেশ্যভিত্তিক শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন করা হয়। পরে ২০০২ সালে প্রাথমিক শিক্ষাক্রমের কিছু পাঠ্যবইয়ের পরিমার্জন করা হয়। এরপর ২০১২ সালে সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করা হয়। ব্রিটিশ শাসনামল থেকে চলে আসছে পরীক্ষানির্ভর মূল্যায়ন পদ্ধতি। 


তবে এই শিক্ষাক্রম বাদ দিয়ে হুট করে ২০২৩ সাল থেকে অভিজ্ঞতানির্ভর মূল্যায়ন শুরু করেছিল সাবেক আওয়ামী লীগ সরকার। এ ব্যাপারে শিক্ষাবিদদের গঠনমূলক সমলোচনা বা পরামর্শও গ্রহণ করা হয়নি। বর্তমানে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী বছর চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালুর মধ্য দিয়ে মাধ্যমিক পর্যন্ত সব শ্রেণিতেই তা চালুর কথা ছিল।


নতুন শিক্ষাক্রমে শিখন, শেখানোর পন্থা, মূল্যায়ন ব্যবস্থাসহ শিক্ষার প্রচলিত পদ্ধতিই বদলে ফেলা হয়েছিল। সাধারণ ধারার স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দেড় কোটির বেশি শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনের এ পরিবর্তন অভিভাবকরা মেনে নিতে পারেননি। অভিভাবক মহলে তুমুল সমালোচিত নতুন শিক্ষাক্রম থেকে গত ১ সেপ্টেম্বর মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। শিক্ষকদের প্রস্তুতির ঘাটতি, পাঠ্য বিষয়, মূল্যায়ন নিয়ে অস্পষ্টতা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার অভাবকে দায় দিয়ে এ শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয় বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পাঠ্যপুস্তক নিয়ে রাজনীতির খেলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষাবিদরা বলেন, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে একের পর এক শিক্ষাক্রম পরিবর্তনে পালটে যায় শ্রেণিকক্ষের পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি। এতে দিশেহারা হয়ে পড়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। কোনো কোনো সময় শিক্ষকরাও সুস্পষ্টভাবে বুঝে উঠতে পারেন না—কীভাবে নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের অভ্যস্ত করে তুলবেন। সেই সঙ্গে বিভ্রান্ত হচ্ছেন অভিভাবকরাও। এ কারণে যথাযথ পাইলটিং ও গবেষণা করে শিক্ষাক্রমে পরিবর্তন আনতে হবে।

শেয়ার করুন