রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাবেক এক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকের ওপর ২০১১ সালের ১৪ আগস্ট ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় সাবেক উপ-উপাচার্যসহ (তৎকালীন প্রক্টর) ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। সোমবার (২ ডিসেম্বর) ভুক্তভোগীর ছোট ভাই মো. রোকনুজ্জামান বাদী হয়ে রাজশাহী কোর্টে মামলাটি করেন।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের আরবি বিভাগের ছাত্র ছিলেন। ছাত্রাবস্থায় তিনি রাজশাহী স্থানীয় দৈনিক লাল গোলাপ এবং দৈনিক সংগ্রামের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ছিলেন।
মামলার আসামিরা হলেন, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া, সাবেক ছাত্র উপদেষ্টা মো. তারেক নুর, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত অধ্যাপক মুসতাক আহমেদ, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের তৎকালীন রাবি শাখার সভাপতি আহম্মদ আলী ওরফে আহম্মদ আলী মোল্লা (৪২), তৎকালীন রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু হোসাইন ওরফে আবু হোসাইন বিপু (৩৭), তৎকালীন মাদার বখ্শ হল শাখা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রুহুল আমিন বাবু (৩৮), তৎকালীন রাবি শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আল আরাফাত রাব্বি (৩৪), তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল আলিম (৩৫) ও রাস্ট্র বিজ্ঞান ২০০৭-২০০৮ সেশনের কামাল হোসেন (৩৫)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ১৪ আগস্ট সৈয়দ আমীর আলী হলের স্টোর রুম থেকে ককটেল উদ্ধারের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে। সে সময় হকিস্টিক দিয়ে তাকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে। পরে ইট দিয়ে তার মাথা ও মুখে আঘাত করে রক্তাক্ত করে এবং আমীর আলী হলের সামনে থাকা পানির কুয়ার মধ্যে ফেলে চুবিয়ে তাকে ধরে রাখে।
আরও জানা যায়, ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর (পরবর্তীতে উপ উপাচার্য) চৌধুরী মোহাম্মদ জাকারিয়া, সহকারী প্রক্টর তারেক নূর ও সাবেক সহকারী প্রক্টর মুস্তাক আহমেদ। এসময় সাংবাদিক তানিম তাদের নিকট নির্যাতন থেকে রক্ষার জন্য মিনতি করলেও তারা কোনো প্রকার সাহায্য করেননি বরং উল্টো ভুক্তভোগীর উপর হামলা করার জন্য নির্দেশ দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে মামলার বাদী রোকনউজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন দেশে আইনের শাসন না থাকায় মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে। আমি মহামান্য আদালত এর নিকট আমার ভাইয়াকে হত্যাচেষ্টাকারী আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।