মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুকে ক্ষমতা থেকে সরাতে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা র-এর তত্ত্বাবধানে একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র হয়েছিল। এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট, যেখানে ষড়যন্ত্রে জড়িত ব্যক্তিদের বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনপন্থী প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু নির্বাচিত হওয়ার পর ভারতের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে উদ্যোগী হন। মালদ্বীপে অবস্থানরত ভারতীয় সেনাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করে দেন তিনি। পাশাপাশি বেইজিংয়ের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতার চুক্তির জন্য তোড়জোড় শুরু করেন।
এই পরিস্থিতিতে মালদ্বীপের বিরোধী নেতাদের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ শুরু করেন ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করা এজেন্টরা। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তারা প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুকে উৎখাতের একটি ‘নীলনকশা’ প্রণয়ন করে। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মালদ্বীপের বিরোধী রাজনীতিবিদেরা মুইজ্জুর দলের ৪০ জন আইনপ্রণেতাকে ঘুষের প্রস্তাব দিয়ে অভিশংসনের চেষ্টা করেন।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, ষড়যন্ত্রকারীরা ১০ জন ঊর্ধ্বতন সামরিক ও পুলিশ কর্মকর্তা এবং তিনটি প্রভাবশালী অপরাধী চক্রকে অর্থ প্রদানের পরিকল্পনা করেছিল। এজন্য প্রায় ৬০ লাখ মার্কিন ডলার (৮ কোটি ৭০ লাখ মালদ্বীপি রুপি) সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়, যা ভারতের পক্ষ থেকে সরবরাহ করার কথা ছিল।
তবে শেষ পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সমর্থন জোগাড় করতে ব্যর্থ হন ষড়যন্ত্রকারীরা। আর্থিক জোগান দেওয়া থেকেও ভারত সরে আসে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনা ভারতের সঙ্গে চীনের মধ্যকার কৌশলগত প্রতিযোগিতার একটি বড় উদাহরণ। এশিয়ার কৌশলগত এলাকাগুলোতে প্রভাব বিস্তারে বেইজিং ও নয়াদিল্লির মধ্যে চলমান উত্তেজনাপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা এ ঘটনার মাধ্যমে আরও স্পষ্ট হয়েছে।
মুইজ্জুর ‘ইন্ডিয়া আউট’ স্লোগানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় আসা এবং পরবর্তী সময়ে চীনপন্থী অবস্থানের কারণে এই ষড়যন্ত্রের পটভূমি তৈরি হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।