০৭ জানুয়ারী ২০২৫, মঙ্গলবার, ০৮:২৭:০৮ পূর্বাহ্ন
ডায়াবেটিস থাকলে কি ড্রাই ফ্রুটস খাওয়া যাবে?
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০১-২০২৫
ডায়াবেটিস থাকলে কি ড্রাই ফ্রুটস খাওয়া যাবে?

বর্তমানে স্বাস্থ্যসচেতন মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি।  আর সম্প্রতি ড্রাই ফ্রুটস বা শুকনো ফল স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছে।  মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, ডায়াবেটিস থাকলে কি ড্রাই ফ্রুটস খাওয়া শরীরের জন্য ভাল? রাতবিরাতে মুঠো মুঠো ড্রাই ফ্রুট্স মুখে পুরলে রক্তে শর্করার মাত্রা চড়চড় করে বেড়ে যাবে না তো? 


পুষ্টিবিদেরা বলছেন, পরিমিত পরিমাণে ড্রাই ফ্রুটস খেলে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।  তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক, ডায়াবেটিস থাকলে কোন কোন ড্রাই ফ্রুটস খাওয়া যায়


পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই ড্রাই ফ্রুটস সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার পাশাপাশি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।  এগুলোতে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার, এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, যা হৃদরোগ প্রতিরোধ, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নত করে। তবে ডায়াবেটিসের জন্য সঠিক ধরনের বাদাম নির্বাচন এবং সেগুলো নিয়ম মেনে খাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টিবিদ মিল্টন বিশ্বাস জানিয়েছেন ব্লাড সুগার থাকলে কোন কোন শুকনো ফল খাওয়া যাবে।


ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ যা তখন ঘটে যখন আপনার রক্তে গ্লুকোজ বা চিনির মাত্রা অত্যন্ত বেশি হয়ে যায়। গ্লুকোজ শরীরের প্রধান শক্তির উৎস এবং এটি আমরা যে খাবার খাই, তার থেকে পাওয়া যায়। প্যানক্রিয়াস দ্বারা উৎপন্ন ইনসুলিন নামক হরমোনটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি গ্লুকোজকে কোষে প্রবেশ করতে সহায়তা করে যাতে শক্তি তৈরি হয়।


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ডায়াবেটিসে ইনসুলিন উৎপাদন যথেষ্ট পরিমাণে হয় না। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রিত না হলে এটি রক্তনালী এবং স্নায়ুকে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তবে একটি সুষম ডায়েট এটি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য শুকনো ফল খাওয়া রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের কার্যকর উপায়গুলোর একটি।


ডায়াবেটিসের জন্য শুকনো ফল কীভাবে সহায়ক? ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে শুকনো ফল খাওয়া পুষ্টিগত কারণেই উপকারী। এতে ফাইবার থাকে, যা গ্লুকোজ ধীরে ধীরে শোষণ করতে সাহায্য করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়তে বাধা দেয়।  শুকনো ফলে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে, টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে এবং সামগ্রিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক।


আমন্ড ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অন্যতম কার্যকর। ইউরোপীয় জার্নাল অফ নিউট্রিশনে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, এতে কম কার্বোহাইড্রেট ও উচ্চ ফাইবার রয়েছে যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। আমন্ডে থাকা ম্যাগনেসিয়াম ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে রক্তে শর্করার সঠিক নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।


আখরোটে রয়েছে হার্টের জন্য উপকারী ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা প্রদাহ কমিয়ে কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। আখরোট রক্তে গ্লুকোজের স্তর ধীরে ধীরে বাড়ায়, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।


পেস্তায় প্রোটিন ও ফাইবারের পরিমাণ বেশি, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। এটি কম কার্বোহাইড্রেটযুক্ত এবং এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।


ফিগ বা ডুমুরে থাকা ফাইবার রক্তে শর্করার শোষণ ধীরে ধীরে করে। এটি কম গ্লাইসেমিক সূচকযুক্ত, যা রক্তে শর্করার স্তর দ্রুত বাড়তে বাধা দেয়।


শেয়ার করুন