বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে অভিনেত্রী নিপুণ আক্তারকে। জালিয়াতির অভিযোগে অভিনেত্রীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জানা গেছে, অনৈতিকভাবে সমিতির প্যাড ব্যবহার করে মনগড়া বিবৃতি প্রদান করার অভিযোগে সম্প্রতি কার্যনির্বাহী পরিষদের মিটিংয়ে সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
নিপুণের সমালোচনা যেন পিছুই ছাড়ছে না। কিছু দিন পর পরই নানা ইস্যুতে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। কখনো শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে, কখনো বা বেফাঁস মন্তব্যের জন্য।
গত বছরের ১৬ জুলাই শিল্পী সমিতির প্যাড ব্যবহার করে কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে একটি বিবৃতি প্রদান করেন নিপুণ। সেখানে নিজেকে সাধারণ সম্পাদক ‘সাবেক’ বলেই উল্লেখ করেন অভিনেত্রী। শুধু তাই নয়, পর দিন (১৭ জুলাই) নিজের ফেসবুক ওয়ালে সেটি পোস্টও দেন। এ নিয়ে সেই সময় ব্যাপক সমালোচনায় জড়ান তিনি।
সমিতির প্যাড ব্যবহার করায় অভিনেতা মিশা ও ডিপজল নেতৃত্বাধীন কমিটি ৩০ জুলাই সমিতির ষষ্ঠ সভায় এ বিষয়টি উত্থাপিত হলে নিপুণকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তারা। তবে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতার একান্ত কাছের মানুষ হওয়ায় কোনো চিঠিই আমলে নেননি নিপুণ। চালিয়ে যান তার সব বিতর্কিত কর্মকাণ্ড। এর পরিপ্রেক্ষিতে সমিতির প্যাড ব্যবহার ও সম্পাদককে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় শিল্পী সমিতি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার হয়েছেন অভিনেত্রী।
এ বিষয়ে কোনো কিছু বলতে না চাইলেও বহিষ্কারের সত্যতা স্বীকার করেছেন শিল্পী সমিতির সহসভাপতি ও মুখপাত্র অভিনেতা ডিএ তায়েব। অন্যদিকে অভিনেত্রীর ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠালেও তাতে সাড়া দেননি নিপুণ।
উল্লেখ্য, এর আগে বর্তমান শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন ডিপজলকে নিয়ে গণমাধ্যমে ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠে এই বিতর্কিত অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া সম্প্রতি সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমানের বিজি-২০১ ফ্লাইটে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলে তার পাসপোর্ট অফলোড করে দেয় ইমিগ্রেশন পুলিশ। নিপুণের নামে মামলা না থাকায় পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয় তাকে। কিন্তু আটকের খবর সত্য নয় বলে দাবি করেন অভিনেত্রী। তবে বিমানবন্দরের বেশ কিছু ফুটেজে তাকে দেখা যায়।
বিগত সরকারের আমলে নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন নিপুণ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিবৃতি দিয়েও তোপের মুখে পড়েছিলেন তিনি। সেখানেও শিল্পী সমিতির অফিসিয়াল প্যাড ব্যবহার করেন অভিনেত্রী। আবার নিজেকে ‘সাবেক’ সাধারণ সম্পাদক উল্লেখ করেন। যদিও বর্তমানে তিনি শিল্পী সমিতির কোনো পদে নেই। তা হলে কীভাবে তিনি সমিতির অফিসিয়াল প্যাড ব্যবহারের এখতিয়ার রাখেন তা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন।