মার্কিন উন্নয়ন সংস্থা ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট-কে (ইউএসএইড) বিশ্বব্যাপী বিদেশি সহায়তা বরাদ্দের ক্ষেত্রে ‘আমেরিকা প্রথম’ নীতি অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর সোমবার একটি নির্বাহী আদেশে সংস্থাটির থেকে আগামী ৯০ দিনের জন্য বৈদেশিক সাহায্য স্থগিত করেছেন ট্রাম্প।
এদিকে সহায়তা বন্ধের পর এবার ট্রাম্প প্রশাসনের নিশানায় ইউএসএইডের প্রায় ৬০ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তাদের ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ওয়াশিংটন কীভাবে বিশ্বজুড়ে সহায়তা বরাদ্দ করতে পারে সে বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসন ইউএসএইড কর্মীদের অনুরোধ করেছে এবং ট্রাম্পের আদেশ উপেক্ষা করলে যেকোনও কর্মীর বিরুদ্ধে ‘শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা’ নেয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
ইউএসএইড কর্মীদের কাছে পাঠানো একটি অভ্যন্তরীণ মেমোতে বলা হয়েছে, নতুন নেতৃত্ব এজেন্সিতে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিচ্ছে যা প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশকে মান্যতা দিতে সৃষ্টি করা হয়েছে।
মেমোতে ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক জেসন গ্রে বলেছেন, ‘আমরা ইউএসএআইডির বেশ কয়েকজন কর্মচারীকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পূর্ণ বেতন এবং সুবিধাসহ প্রশাসনিক ছুটিতে রেখেছি এবং এই সময়ের মধ্যে আমরা এই ক্রিয়াকলাপগুলোর সম্পূর্ণ বিশ্লেষণ করব।’
ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে কতজন কর্মকর্তা ক্ষতির মুখে পড়েছেন তা মেমোতে উল্লেখ করা হয়নি।
তবে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত বেশ কয়েকটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, ইউএসএইডের প্রায় ৫৭ থেকে ৬০ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ২০২৩ অর্থবছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৭২ বিলিয়ন ডলার সহায়তা প্রদান করেছে। ২০২৪ সালে জাতিসংঘ দ্বারা ট্র্যাক করা সমস্ত মানবিক সহায়তার ৪২% প্রদান করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ইউএসএইডের যেসব কর্মীকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে তারা ওয়াশিংটন ভিত্তিক প্রায় সব ইউএসএআইডি ব্যুরোতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। যেখানে শক্তি সুরক্ষা থেকে পানি সুরক্ষা, শিশুদের শিক্ষা এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির ভূমিকা নিয়ে কাজ করে এসেছেন তারা। এজেন্সির জেনারেল কাউন্সেল অফিসের স্টাফদের টার্গেট করা হয়েছে বলে একটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে।
ফ্রান্সিসকো বেনকোসমে যিনি এই মাসের শুরু পর্যন্ত ইউএসএআইডি-এর চীন নীতির নেতৃত্বে ছিলেন, তিনি গোটা বিষয়টিকে কর্মী নিধন পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছেন।
তিনি মনে করেন, এই সিদ্ধান্তটি দেশের জাতীয় নিরাপত্তাকে দুর্বল করে এবং প্রতিপক্ষকে উৎসাহিত করে। ইউএসএআইডি তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।