যুক্তরাজ্যে থাকা টিউলিপ সিদ্দিকের অবৈধ তহবিল জব্দের পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ, এবং এ বিষয়ে ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর জন্য দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন। সংস্থাটির মহাপরিচালক আখতার হোসেন জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের অর্থপাচারের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহে তারা একাধিক দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
টিউলিপ সিদ্দিক, যিনি সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন, তার বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা এবং লন্ডনে তার সম্পত্তি নিয়ে প্রশ্নের মুখে রয়েছেন তিনি।
দুদক শেখ হাসিনা ও টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির তদন্ত চালাচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চুক্তির মাধ্যমে ৪ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাতের বিষয়টি।
তদন্তের আওতায় ১২টি দেশে অর্থপাচারের তথ্য যাচাই করা হচ্ছ। ব্রিটিশ ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির কর্মকর্তারা এ বিষয়ে বাংলাদেশে কয়েকদিন অবস্থান করে দুদককে সহায়তা করেছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, টিউলিপ সিদ্দিক অসাবধানতাবশত জনগণকে বিভ্রান্ত করেছিলেন, কারণ তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তির কাছ থেকে উপহার পাওয়া ফ্ল্যাটের তথ্য গোপন করেছিলেন। এই বিতর্কের পর তিনি সিটি মিনিস্টারের পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
তদন্তের অংশ হিসেবে, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক আখতার হোসেন বলেন, আমরা এখনও যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশ থেকে তথ্য সংগ্রহ করছি। প্রাথমিক তদন্তে ইঙ্গিত মিলেছে যে পাচারকৃত অর্থ কেবল যুক্তরাজ্যেই নয়, বরং একাধিক দেশে স্থানান্তরিত হয়েছে। দুদকের তদন্তকারীরা ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা পারস্পরিক আইনি সহায়তার মাধ্যমে অর্থ ফেরানোর পরিকল্পনা করছে।
আখতার হোসেন আরও জানান, 'এই বিষয়ে একাধিক বৈঠক হয়েছে এবং তহবিল দেশে ফেরাতে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।'
তবে টিউলিপ সিদ্দিকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি এবং তিনি এসব দাবি নাকচ করেছেন।