যারা আওয়ামী লীগ করেছেন, কিন্তু কোনো প্রকার অন্যায় এবং গণহত্যা কিংবা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত নন, তারা ক্ষমা চেয়ে আবার মূল ধারায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারেন বলে মন্তব্য করেছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলনের শেষ দিন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করার বিষয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত সরকারের পক্ষ থেকে হয়নি। জনপ্রতিনিধি নির্বাচন অথবা প্রশাসক (পূর্ণকালীন) নিয়োগের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারের সংস্থাগুলো পরিচালনা করার বিষয়ে খুব দ্রুতই সিদ্ধান্ত আসবে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যদি আওয়ামী লীগের লোকজন অংশগ্রহণ করার বিষয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘আমরা মনে করি, যে ধরনের গণহত্যা বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে সংঘটিত করেছে এবং আপনারা দেখেছেন যে জাতিসংঘের মানবাধিকার রিপোর্টে (জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের তথ্যানুসন্ধান প্রতিবেদন) এসেছে, এই গণহত্যা যে আওয়ামী লীগ ঘটিয়েছে, তা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। সেই জায়গা থেকে পুরো পৃথিবীতে এ রকম গণহত্যাকারী ফ্যাসিস্টদের যে নজির, আওয়ামী লীগেরও সে রকম অবস্থাই হওয়া উচিত।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তো গণতন্ত্রের দিক দিয়ে ইউরোপের দেশগুলোকে অনেক এগিয়ে রাখি বা মডেল হিসেবে দেখি। তো জার্মানিতে ফ্যাসিস্টদের কী হয়েছিল বা ইতালিতে কী হয়েছিল, আমাদের সামনে সে নজিরগুলো আছে। যেহেতু আন্তর্জাতিকভাবেও এই গণহত্যা ডকুমেন্টটেডও হয়েছে, সেই জায়গা থেকে আমরা মনে করি, দলীয়ভাবে আওয়ামী লীগের একধরনের শাস্তি নিশ্চিত হওয়া উচিত। এখন সেটি কোন প্রক্রিয়ায় হতে পারে, কী ধরনের শাস্তি হতে পারে, এটার ব্যাপারেও সবার মতামত নেওয়ার ব্যাপার আছে। আশা করি, তারপর সরকার একটা সিদ্ধান্তে আসতে পারে।’
তখন সাংবাদিকেরা আবার প্রশ্ন করেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যদি তারা (আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী) বিক্ষিপ্তভাবে অংশগ্রহণ করেন, তাহলে সরকারের অবস্থান কী হবে? এই প্রশ্নের জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘দেখুন, যারা গণহত্যার সঙ্গে জড়িত এবং বিভিন্ন সময়ে, বিগত ফ্যাসিবাদের সময়ে জনগণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন, তাদের অধিকাংশই এখন পলাতক অবস্থায় আছেন। গণহত্যার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে বিধায় তারা পলাতক অথবা কারাগারে রয়েছেন। ইতিমধ্যে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, যারা আওয়ামী লীগ করেছেন, কিন্তু কোনো প্রকার অন্যায় এবং গণহত্যা কিংবা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত নন, তারা ক্ষমা চেয়ে আবার মূল ধারায় (মেইনস্ট্রিম) স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারেন এবং সেই জায়গা থেকে যদি কেউ নির্বাচন করেন, তাতেও কোনো বাধা নেই। কিন্তু কেউ যদি সাজাপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন, এই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত থাকেন, তাহলে তো কোনোভাবেই নির্বাচনে আসতে পারবেন না।’