বাংলা বর্ষবরণের অন্যতম আয়োজন ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামটি বদলে এই শোভাযাত্রার নতুন নাম হবে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। কিন্তু ইউনেস্কোর অপরিমেয় বিশ্ব সংস্কৃতি হিসেবে স্বীকৃতির সনদে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা অন পহেলা বৈশাখ’ নামেই বাংলা বর্ষবরণের আয়োজনটিকে উল্লেখ করা হয়েছে। এখন নাম বদলের ফলে জাতিসংঘের সংস্থার স্বীকৃতিতে কোনো প্রভাব পড়বে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
২০১৬ সালে বাংলা বছরকে বরণ করে নেওয়ার অপেক্ষাকৃত নতুন এই উৎসবটি ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পায়।
ততদিনে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে খ্যাতি পেলেও সাড়ে তিন দশক আগে ১৯৮৯ সালে যাত্রা শুরুর সময় এর নাম ছিল ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’।
গত বছরের জুলাই গণ অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এই প্রথম বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হচ্ছে।
এবার পহেলা বৈশাখের এই আয়োজনে শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তনকে সেই পুরনো নামে প্রত্যার্বতন হিসেবে বর্ণনা করছে আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
সংবাদ সম্মেলনে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলাম শেখ জানিয়েছেন, এবার শোভাযাত্রার নাম হচ্ছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’।
চারুকলা অনুষদের ডিন বলেন, ‘নাম পরিবর্তনের বিষয়ে আমি পরিবর্তন বলতে চাই না। শুরুতে বর্ষবরণ ছিল আনন্দ শোভাযাত্রা। আগে যেভাবে হয়েছিলো, সেটির স্বতঃস্ফূর্ততা কতোখানি ছিল সেটা বিশ্লেষণের বিষয়। পরবর্তীতে মঙ্গল শোভাযাত্রার ক্ষেত্রে কী ঘটেছে এজন্য পরিবর্তন নয়, পুনরুদ্ধার বলছি আনন্দ শোভাযাত্রাকে’।
তবে এই নাম পরিবর্তন নিয়ে সমালোচনা ও নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি দিচ্ছেন অনেকে।
এসবের মধ্যে ইউনেস্কোর স্বীকৃতির বিষয়টিও ঘুরে ফিরে আসছে। ইউনেস্কোর স্বীকৃতির পর মঙ্গল শোভাযাত্রা নতুন মাত্রা পেলেও, আয়োজনটি যে সবসময় বিতর্কের ঊর্ধ্বে ছিল তা নয়।
এই আয়োজন নিয়ে আগে থেকেই তাদের আপত্তি জানিয়ে আসছিল বিভিন্ন ইসলামপন্থী দল ও সংগঠন। তাদের দৃষ্টিতে, এই শোভাযাত্রাটি হিন্দু ধর্মীয় সংস্কৃতি থেকে এসেছে।
প্রতিবছরই পহেলা বৈশাখের আগে আগে এই বিতর্কটি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। এবারও কোনো কোনো ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল 'মঙ্গল' শব্দটি নিয়ে আপত্তি তোলে।
অবশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম বলেন, বাইরের কোনো চাপে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।