২১ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার, ০৬:২০:১৩ অপরাহ্ন
বাঘায় ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেওয়া সেই বৃদ্ধের মৃত্যু নিয়ে অপপ্রচারের অভিযোগ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-০৪-২০২৫
বাঘায় ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেওয়া সেই বৃদ্ধের মৃত্যু নিয়ে অপপ্রচারের অভিযোগ

রাজশাহীর বাঘায় চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেওয়া সেই বৃদ্ধ মীর রুহুল আমিনের (৬০) মৃত্যু নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করেন তার পরিবার। পরিবারের দাবি ‘তিনি মানসিক প্রতিবন্ধী ও জেদি মানুষ ছিলেন। তার মনে যা চাই তা করতেন। কারও কথা শোনতেন না।’ তবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে কোমরের ব্যথায় ভুগছিলেন। পরিবারের ধারণা অসুস্থতার কারণে তিনি আত্মহত্যা করতে পারে।


জানা গেছে, সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী রেলস্টেশনে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন মীর রুহুল আমিন। তিনি বাউসা ইউনিয়নের মাঝপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজেনরা বিভিন্ন মন্তব্য করে।


এতে দেখা গেছে, নিহতের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মন্তব্য করে অনেকে পোস্ট দেন। রুহুল আমিনের মৃত্যুর বিষয় নিয়ে বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে কথা হয় ছেলে মীর মশিউর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা মানষিক প্রতিবন্ধী ছিলেন। একটা জেদি মানুষ ছিলেন। ছোট বেলা থেকে দেখে আসছি, তিনি কারও কথা শোনেন না। মনে যা চাই সেটা করতেন। ঘটনার দিন বাবা আড়ানী স্টেশন বাজারে গিয়েছিলেন পরিবারের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে। তারমধ্যে তিনি পেঁয়াজ ঢেকে রাখার জন্য পলিথিনও কিনেছেন।’


তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘বাবার মৃত্যু নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন লেখা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছেন। সেখানে বাবাকে না খেতে দিয়ে ছেলের বৌ-দের দ্বারা নির্যাতন, মেয়ে-বাবাকে দেখেন না ইত্যাদি। আসলে প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, বাবা-মার আমরা দুই সন্তান। বড় বোন মৌসুমী আক্তারের ২০ বছর আগে বিয়ে হয়েছে পাবনার ঈশ্বরদীতে। বোন শ্বশুর বাড়িতে থাকেন। আর আমি চাকরির সুবাদে স্ত্রী নিয়ে ঢাকায় থাকি। শুধু বাবা-মা থাকতেন বাড়িতে ।’ তবে মৃত্যু নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব না ছড়িয়ে প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরার দাবি জানান তিনি।


এ বিষয়ে স্থানীয় স্কুল শিক্ষক এনামুল হক বলেন, রুহুল আমিন একজন সহজ সরল মানুষ ছিলেন। কম কথা বলতেন। একটা জেদি মানুষ ছিলেন। তার মৃত্যু নিয়ে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা কথা রটিয়েছে। এটা ঠিক করেননি। প্রকৃত ঘটনা জানতে হবে। তার পরে না হয় লিখলো। এসব কারণে পরিবারের সম্মান নষ্ট হয়।


বাউসা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফ আলী মলিন বলেন, রুহুল আমিন এলাকায় সভ্রান্ত পরিবারের সন্তান। তারা পারিবারিক ভাবে ভালো মানুষ। তার এক ছেলে এক মেয়ে। বিয়ের পরে মেয়ে শ্বশুর বাড়িতে থাকেন। এছাড়া ছেলে চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকেন। জানা মতে, সন্তানরা তার বাবা-মাকে দেখেন। এই দিক থেকে কোন সমস্যা নেই। আমার জানা মতে, দীর্ঘদিন থেকে তিনি কোমর ওপা ব্যাথায় ভুগছিলেন। যেহেতু বয়স হয়েছে শারিরীক নানা জটিলতা দেখা দেওয়া স্বাভাবিক। তবে তিনি মানসিকভাবে বুদ্ধিতে কম। যাকে বলে প্রতিবন্ধী।


এ বিষয়ে ঈশ্বরদী রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউর রহমান বলেন, পারিবারিকভাবে জানা গেছে তিনি কিছু ঋণ নিয়ে পেঁয়াজের আবাদ করেছিলেন। শুনেছি পেঁয়াজে আশানরূপ ফলন হয়নি। পেঁয়াজে লোকসান হবে দুশ্চিন্তায় ছিলেন তিনি। এছাড়া শারীরিকভাবে অসুস্থ। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।


শেয়ার করুন