গাজীপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে রোববার হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির।
রোববার নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে নাসির জানান, পতিত ফ্যাসিস্টদের বিচারের মুখোমুখি করাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থতার ফলেই এমন হামলার ঘটনা ঘটেছে। তিনি লেখেন, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর উপর সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানাচ্ছি। পতিত ফ্যাসিস্টদের বিচারের আওতায় আনতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থতার কারণে জুলাই আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে।’
‘অন্যদিকে, ফ্যাসিস্ট শক্তিকে রাজনৈতিকভাবে ও সামাজিকভাবে মোকাবিলা না করে সকল মনযোগ শুধু নিজস্ব রাজনৈতিক প্রচারণার পেছনে দেওয়ার কারণে জুলাই আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানকারী জনতা গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক দিশা থেকে ক্রমান্বয়ে বঞ্চিত হচ্ছে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘ব্যক্তিগত রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ নয়, বরং গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে সমুন্নত রাখাই আমাদের সকল রাজনৈতিক পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত।’
এর আগে সন্ধ্যায় গাজীপুরে একদল অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে হামলা চালায় বলে জানা যায়। রবিবার সন্ধ্যায় চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় তার গাড়িবহর জ্যামে আটকে থাকা অবস্থায় এই হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। গাজীপুর পুলিশের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, চার-পাঁচটি মোটরসাইকেলে করে আসা দুর্বৃত্তরা গাড়িতে ঢিল ছোড়ে ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এতে গাড়ির গ্লাস ও উইন্ডশিল্ড ভেঙে যায়। হামলায় হাসনাত আবদুল্লাহ হাতে আঘাত পান, কনুইয়ের কয়েক জায়গা কেটে যায়।
ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত সরে গিয়ে গাড়িবহর বোর্ডবাজার এলাকায় আইইউটি ক্যাম্পাসে আশ্রয় নেয়। পরে তাকে উত্তরা পূর্ব থানায় নেওয়া হয়। সেখান থেকে অন্য একটি গাড়িতে করে রাত সাড়ে আটটার দিকে ঢাকায় পাঠানো হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে রাত নয়টার দিকে গাজীপুরের এনসিপি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ করেন।
পরে এনসিপির পক্ষ থেকে রাজধানীতে মশাল মিছিল বের করা হয়। সংগঠনটি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই হামলার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানায়। একইসঙ্গে জুলাই মাসের ‘গণহত্যার’ সঙ্গে জড়িতদেরও দ্রুত বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে দলটি।