২৫ মে ২০২৫, রবিবার, ০২:৩৭:১৯ পূর্বাহ্ন
স্যাট একাডেমি একটি নাম নয় বরং সাহসিকতা, আত্মত্যাগ ও পরিবর্তনের প্রতীক
স্টাফ রিপোর্টার :
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০৫-২০২৫
স্যাট একাডেমি একটি নাম নয় বরং সাহসিকতা, আত্মত্যাগ ও পরিবর্তনের প্রতীক

“শিক্ষা হবে উন্মুক্ত, হবে বাণিজ্যমুক্ত”শ্লোগানকে সামেনে রেখে দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে এক অনন্য আলোড়ন সৃষ্টি করেছে স্যাট একাডেমি। এক দশক পেরিয়ে স্যাট একাডেমি আজ শুধু একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম নয়, বরং একটি মিশন, একটি নিরব বিপ্লব, একটি জাতির জেগে ওঠার গল্প হয়ে উঠেছে।


শনিবার(২৪ মে) রাজশাহীতে আয়োজিত মাস্টার সেফ রেস্টুরেন্টে সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে ‘একাডেমিক আলোকযাত্রা-২০২৫ সাংবাদিক সহায়িকা’ শীর্ষক বিশেষ সংবাদ সম্মেলনে স্যাট একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা এমএ রহমান আজিজ বলেন, “আমি আজ এসেছি শুধু একটি পণ্যের গল্প বলতে নয়, বরং এক সুপ্ত মিশনের আলোকছটা নিয়ে।”


অনুষ্ঠানের শুরুতেই এক আবেগঘন স্বাগত বক্তব্যে স্যাট একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা আজিজুর রহমান আজিজ বলেন, সময় স্রোতে আমরা সবাই খড়-কুটো, সাঁতরে চলেছি মিথ্যে এক তীরের খোঁজে। ইশ! যদি জানতাম—সবকিছু বিলীন করে বাঁধভাঙা স্রোতে যাচ্ছে সে তার মনিবের দিদারে।


তিনি জানান, ২০১৩ সালে মানসিক প্রস্তুতি ও ২০১৫ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে স্যাট একাডেমি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে একা হাতে গড়ে তুলেছেন এই প্ল্যাটফর্ম, যেখানে তাঁর ১৪ বছরের পরিশ্রম, আয়ের প্রতিটি পয়সা, দক্ষতা ও সময় বিনিয়োগ করা হয়েছে। সামাজিক বাধা, অবজ্ঞা, গুজব এবং প্রচণ্ড আর্থিক ক্ষতির মাঝেও তিনি লক্ষ্যচ্যুত হননি। একটি শিক্ষিত, দক্ষ ও স্বনির্ভর জাতি গঠনের স্বপ্নে আজও তিনি অটল।


সাংবাদিক ও শিক্ষকদের উদ্দেশে মানবিক আহ্বান জানিয়ে প্রতিষ্ঠাতা আজিজ বলেন, আপনারাই জাতির বিবেক, আপনারাই সমাজের আয়না। সত্য প্রকাশই সাংবাদিকতার প্রকৃত কাজ। শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা শুধু পাঠ দেন না, জীবন গড়েন। আপনারা যেমন আত্মবিশ্বাস শেখান, আমি বলি, এগিয়ে চলো! আর্থিক সংকট মোকাবেলায় রাষ্ট্রীয় সহায়তা চাইলেন প্রতিষ্ঠাতা। প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকা ব্যবহারকারী চাপ ও প্রযুক্তিগত ব্যয় এখন ব্যক্তিগতভাবে বহন করা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানান প্রতিষ্ঠাতা।


তিনি বলেন, এই স্বপ্ন কেবল আমার নয়, পুরো জাতির। আমি সরকারের কাছে বিনীত আবেদন জানাই, যেন এক টাকাও না খরচ করে শিক্ষার এই বিপ্লবকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে।


সংবাদ সম্মেলনে স্যাট একাডেমির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় (“ভিশন ২০৩০”) দেশের ৬৪ জেলায় অফলাইন সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন, প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে সহযোগিতা, গ্রামীণ অঞ্চলে পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন, দক্ষ নেতৃত্বগুণসম্পন্ন তরুণ গঠনের লক্ষ্যে রোডম্যাপ প্রদান করা হয়। 


সমাজের সচেতন ব্যক্তিরা বলেন, প্রতিষ্ঠাতা এমএ রহমান আজিজের আত্মনিবেদন ও সাহসিকতা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। একা একজন মানুষ, যিনি নিজ অর্থ, শ্রম ও স্বপ্ন দিয়ে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর জন্য আলোর দ্বার খুলে দিয়েছেন। তাঁর এই প্রচেষ্টা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও পৃষ্ঠপোষকতার দাবিদার।


অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সরকারের উচিত এমন যুগান্তকারী উদ্যোগকে আরও সম্প্রসারিত করতে সহযোগিতা করা, যেন সারাদেশের তরুণ সমাজ এই ডিজিটাল শিক্ষাবিপ্লবের সুফল পেতে পারে। শিক্ষায় প্রযুক্তিনির্ভর, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বৈষম্যহীন এক বিকল্প পথ তৈরির যে স্বপ্ন স্যাট একাডেমি দেখাচ্ছে তা আজ সময়ের দাবি। আর এই পরিবর্তনের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠতে পারে গণমাধ্যম।



প্রতিষ্ঠাতার পুত্র ও সহযোদ্ধা রেজওয়ান সিদ্দিকী তামিম একটি স্বতঃস্ফূর্ত ও চমকপ্রদ উপস্থাপনার মাধ্যমে তুলে ধরেন স্যাট একাডেমির বর্তমান কাঠামো, ডেটা ও কার্যক্রম।


প্রেজেন্টেশন থেকে জানা যায় স্যাট একাডেমিতেঃ

মোট প্রশ্নসংখ্যা: ১১ লাখ+

শিক্ষার্থী: ৫০ লাখ+

মডেল টেস্ট: ১০ হাজার+

দৈনিক গুগল সার্চ ক্লিক: প্রায় ২ লাখ

ফ্রি ওয়েব প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী: ১ হাজার+


সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক সম্মাননা, প্রশ্নোত্তর পর্ব এবং নেটওয়ার্কিং, প্রামাণ্য পরিসংখ্যান, চিত্র, ব্যানার ও প্রেস-উপকরণ বিতরণ করা হয়।

শেয়ার করুন