তেল-মসলা বাদ দিয়ে সুষম খাবার আর মৌসুমি নানা ফল—সুস্থ থাকতে এই দুটোকেই ডায়েটে রাখার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। সত্যিই, ফল খাওয়া শরীরের জন্য ভালো। কিন্তু সব ফল যে সবার জন্য উপকারী, তা কিন্তু নয়। অনেকেই নানা ধরনের শারীরিক সমস্যায় ভোগেন—কারও ডায়াবেটিস আছে, তো কেউ ভুগছেন গ্যাস্ট্রিক বা কিডনির সমস্যায়।
তাই ফল খাওয়ার আগে জেনে নেওয়া জরুরি, কোন ফল কোন রোগে উপকারী আর কোনটি সমস্যা বাড়াতে পারে। চলুন, জেনে নিই।
ডায়াবেটিসে কী কী ফল এড়িয়ে চলবেন?
যাদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি বা ইনসুলিন নিতে হয়, তাদের কলা ও আঙুর কম খাওয়াই ভালো। এই ফল দুইটিতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেক বেশি, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বেড়ে যেতে পারে।
তবে একেবারে বাদ দেওয়ার প্রয়োজন নেই, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরিমাণ মেপে খাওয়া যেতে পারে।
কিডনির সমস্যায় কোন ফল নয়?
কিডনির সমস্যা থাকলে উচ্চ পটাশিয়ামযুক্ত ফল এড়িয়ে চলতে হয়। যেমন—কলা, কমলালেবু, খেজুর, কিশমিশ, আখরোট। এদের মধ্যে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি, যা কিডনির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
গাঁটে ব্যথা বা বাতের সমস্যায়
হাঁটুর ব্যথা বা বাতজনিত গাঁটে ব্যথা থাকলে টমেটো ও বেগুন খাওয়া কমাতে হবে। এ ধরনের খাবারে প্রদাহ বাড়ানোর উপাদান থাকে, যা ব্যথা আরো বাড়াতে পারে।
গ্যাস্ট্রিক ও হজমের সমস্যা থাকলে
যারা গ্যাস বা বুক জ্বালার সমস্যায় ভোগেন, তদের আপেল, তরমুজ, চেরি জাতীয় ফল কম খাওয়া উচিত। এই ফলে ফ্রুক্টোজ ও সর্বিটল বেশি থাকে, যা হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে। আপেলে আবার অতিরিক্ত ফাইবারও থাকে, যা বদহজমের কারণ হতে পারে।
ত্বকের সমস্যা থাকলে
চুলকানি, এগজিমা বা সোরিয়াসিসের মতো ত্বকের সমস্যায় ভুগলে আম, আনারস, কমলালেবু না খাওয়াই ভালো। এসব ফলে অ্যালার্জি বাড়ার আশঙ্কা থাকে।
উচ্চ কোলেস্টেরলে যাদের সমস্যা
যাদের কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড বেশি, তাদের নারকেল ও লেবু জাতীয় ফল এড়িয়ে চলা উচিত। উচ্চ রক্তচাপ থাকলে এই ধরনের ফল থেকে মাইগ্রেনের সমস্যাও বাড়তে পারে।
ফল স্বাস্থ্যকর হলেও, ব্যক্তিগত শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করে কোন ফল আপনার জন্য উপকারী আর কোনটি নয়—তা জেনে তবেই খাওয়া উচিত। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ডায়েট তৈরি করলেই ফলের উপকার পুরোপুরি পাওয়া সম্ভব।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা