হেডিংলিতে সূর্য ঝলমলে দিন, শুষ্ক উইকেট, তারপরও টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত! ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকসের এমন চমকে দেওয়া সিদ্ধান্তে হতবাক ক্রিকেটবিশ্ব। আর সেই সিদ্ধান্ত ডেকে আনল বিপর্যয়—প্রথম দিনে ভারতের সংগ্রহ ৩ উইকেট হারিয়ে ৩৫৯।
ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ও জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার মাইকেল ভন বলেন, ‘আমি লিডসে অনেক টেস্ট খেলেছি, আর এখানে সূর্য উঁকি দিলে ব্যাট নেওয়াই নিয়ম। স্টোকস টস জিতে ফিল্ডিং নেবে শুনে আমি চমকে গিয়েছিলাম।
এটা ছিল অবিশ্বাস্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঐতিহ্য বা অতীত বাদ দিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয় তা ঠিক, কিন্তু বাস্তবতা তো দেখতে হবে। আজকের মতো দিনে যে কেউ আগে ব্যাট করত।’
এদিকে স্কাই স্পোর্টসের বিশ্লেষক মার্ক বাটচার বলেন, ‘সকাল ৯:২০ নাগাদ মাঠে ঢুকেছি।
সূর্য ঠিকরে পড়ছে, পিচ দেখে মনে হচ্ছিল যেন ৩য় দিনের উইকেট—ঘাস প্রায় নেই, রঙটা ইতোমধ্যেই বাদামি হয়ে উঠেছে। আমি কল্পনাও করতে পারিনি, কেউ এই উইকেটে টস জিতে বোলিং করতে চাইবে!’
তার মন্তব্য, ‘আজকের দিনটা চিৎকার করে বলছিল, আগে ব্যাট করো! অথচ ইংল্যান্ড সেই বিপরীত সিদ্ধান্ত নিল। ভাগ্য ভালো, লাঞ্চের আগেই দুইটি উইকেট পেয়ে গিয়েছিল।’
ভারতের হয়ে যশস্বী জায়সওয়াল ১০১ রান করে আউট হলেও শুবমান গিল ছিলেন অবিচল—তিনি অপরাজিত থাকেন ১২৭ রানে।
এশিয়ার বাইরে এটিই তার প্রথম শতক।
এছাড়া, বিশ্লেষকরা জানান গিলের ১৭৫ বলের ইনিংসে মাত্র ৯টি বলই ছিল স্টাম্পে যাওয়ার মতো—যা ইংল্যান্ডের লাইন-লেন্থের অস্থিরতা স্পষ্ট করে।
প্রথম একাদশে ফেরা ক্রিস ওকস ছিলেন সবচেয়ে হতাশাজনক। ১৯ ওভার বল করে ৮৯ রান খরচ করে ছিলেন উইকেটশূন্য। এদিকে বল হাতে অধিনায়ক স্টোকস নিজেই ছিলেন দলের সবচেয়ে কার্যকর বোলার।
১৩ ওভারে ৪৩ রান খরচ করে মূল্যবান ২ উইকেট তুলে নেন তিনি।
এদিকে নতুন বোলিং পরামর্শক টিম সাউদি বললেন, ‘কঠিন দিন গেছে, তবে আমরাও ব্যাট করার সুযোগ পাবো। কাল সকালে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব।’
তবে পরিসংখ্যান বলছে, হেডিংলিতে গত ছয়টি টেস্টের পাঁচটি জিতেছে পরে ব্যাট করা দল। যদিও এই পরিসংখ্যান দেখিয়েই হয়তো স্টোকস সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, কিন্তু বাস্তবের উইকেট, আবহাওয়া ও পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় না আনা সেই সিদ্ধান্ত যেন হঠাৎ এক ‘ব্যাকফায়ার’ হয়ে ধরা দিল।
