২৬ জুন ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ০৮:০২:৫১ অপরাহ্ন
১০০ ডলার দেশে পাঠালেই বাড়তি ৩০৭ টাকা বেশি পাবেন
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-০৬-২০২৫
১০০ ডলার দেশে পাঠালেই বাড়তি ৩০৭ টাকা বেশি পাবেন

আপনি কি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন? সেখানে উপার্জন করছেন বা সরকারি ভাতা পাচ্ছেন? বৈধ পথে, অর্থাৎ বাংলাদেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলার পাঠালেই সরকার আপনাকে দিচ্ছে আর্থিক প্রণোদনা। ১০০ ডলার দেশে পাঠালে আপনি পাচ্ছেন আড়াই ডলার আর্থিক প্রণোদনা।


ফলে প্রবাসে অবস্থান করা কোনো বাংলাদেশি ১০০ ডলার পাঠালে দেশে তাঁর আত্মীয় পাচ্ছেন ১২ হাজার ৩০০ টাকা (প্রতি ডলার ১২৩ টাকা হিসাবে)। এর সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকে এই হিসাবে দেওয়া হয় ৩০৭ টাকা ৫০ পয়সা।


কীভাবে পাঠাবেন


আপনি যে দেশেই থাকেন না কেন, সেই দেশের মুদ্রায় আয় পাঠালে তা ডলার হিসেবে দেশে আসে। ব্যাংকগুলো তা বিতরণ করে বাংলাদেশি টাকায়। যদি কোনো প্রবাসী ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে অন্য মাধ্যমে দেশে আয় পাঠান, তাহলে এ প্রণোদনা পাচ্ছেন না। ফলে বৈধ পথে প্রবাসী আয় দিন দিন বাড়ছে। প্রণোদনা পেতে আপনাকে অবশ্যই বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠাতে হবে। এ ছাড়া এখন ব্যাংকে ডলারের দামও ভালো।


বাংলাদেশে বিভিন্ন উপায়ে প্রবাসী আয়ের অর্থ গ্রহণ করা যায়। ব্যাংক হিসাব না থাকলেও প্রবাসী আয়ের অর্থ পাওয়া যায়। যাঁদের ব্যাংক হিসাব রয়েছে, তাঁরা সেই হিসাবে অর্থ নিতে পারেন। পাশাপাশি পিনের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক, বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে অর্থ নেওয়া যায়। এ পদ্ধতিতে প্রবাসী আয় পাঠানো ব্যক্তির স্বজনের কাছে পিন আসবে। বিদেশ থেকে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, মানি গ্রামসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ পাঠানো যায়। সেই পিন নিয়ে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন, মানি গ্রাম লেখা ব্যাংক বা এনজিওতে গেলেই প্রাপ্য টাকা দিয়ে দেবে। পিন অনেকটা গোপন নম্বরের মতো। এই পিন নিয়ে ওই রেমিট্যান্স হাউসগুলোয় গেলেই প্রবাসী আয়ের টাকার পাশাপাশি সরকারের প্রণোদনার বাড়তি টাকা দেবে। প্রতি ১০০ ডলারে বাড়তি ৩০৭ টাকা ৫০ পয়সা বেশি পাবেন।


এ ছাড়া মোবাইলে আর্থিক সেবা বিকাশ, রকেট, নগদ হিসাবেও সরাসরি প্রবাসী আয়ের অর্থ গ্রহণ করা যায়। এ জন্য কোনো হিসাব প্রয়োজন হয় না। সাধারণ বিদেশ থেকে অর্থ পাঠানোর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্বজনের কাছে পৌঁছে যায়। ফলে দেশে প্রবাসী আয়ের অর্থ গ্রহণ করা আগের চেয়ে সহজ হয়েছে।


বিদেশ থেকে প্রবাসীরা প্রায় বছরখানেক ধরে বৈধ পথে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি পরিমাণে প্রবাসী আয় পাঠাচ্ছেন। মূলত অর্থ পাচার কমে আসায় এবং বিদেশ থেকে অর্থ পাঠানো সহজ হওয়ায় প্রবাসীরা তাঁদের আয় পাঠাতে বৈধ পথকে বেছে নিয়েছেন।


রেমিট্যান্স কত এল


দেশে চলতি জুনের প্রথম ৩ সপ্তাহে ১৯৮ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে। এর মধ্যে শেষ ৩ দিনে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ১২ কোটি ৭০ লাখ ডলার। গত বছরের জুনের প্রথম ৩ সপ্তাহে এসেছিল ১৯১ কোটি ডলারের প্রবাসী আয়। সে হিসাবে চলতি মাসের প্রথম ২১ দিনে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৪ শতাংশ।


প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাংকগুলোয় ডলারের যে সংকট চলছিল, তা অনেকটা কেটে গেছে বলে ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান। তাঁরা বলেন, ডলারের দাম নিয়ে অস্থিরতাও কমেছে। ব্যাংকগুলো এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া সর্বোচ্চ দর ১২৩ টাকার মধ্যেই প্রবাসী আয় কিনছে।


বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ২১ জুন পর্যন্ত ২ হাজার ৯৫০ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। গত অর্থবছরের একই সময়ে এসেছিল ২ হাজার ৩২৯ কোটি ডলারের। তার মানে, চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৬ দশমিক ৭ শতাংশ।


শেয়ার করুন