১৪ অগাস্ট ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ০২:৫৯:৫৪ অপরাহ্ন
টেলিগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ কলে আংশিক নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০৮-২০২৫
টেলিগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ কলে আংশিক নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার

রাশিয়া টেলিগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের কল পরিষেবার ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। দেশটির ডিজিটাল উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের দাবি, সন্ত্রাস ও প্রতারণার মতো অপরাধে জড়িত ব্যবহারকারীদের তথ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে না দেওয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।


বুধবার (১৩ আগস্ট) রুশ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্সকে দেশটির যোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা রসকোমনাডজোর জানায়, অপরাধীদের কার্যক্রম ঠেকাতে বিদেশি মেসেঞ্জার অ্যাপগুলোর কল সুবিধায় সীমিত বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে, যদিও অন্যান্য ফিচারে কোনো বাধা নেই। টেলিগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপের মালিক প্রতিষ্ঠান মেটা প্ল্যাটফর্মসের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।


রুশ দৈনিক আরবিসিকে টেলিগ্রাম জানায়, সহিংসতা ও প্রতারণার বিরুদ্ধে তাদের কঠোর নীতি রয়েছে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মাধ্যমে প্রতিদিন লাখ লাখ সন্দেহজনক বার্তা সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। তবে ১১ আগস্ট থেকে রাশিয়ার ব্যবহারকারীরা টেলিগ্রামে কল করতে পারছেন না এবং হোয়াটসঅ্যাপ কলে মাঝে মাঝে শুধু ধাতব শব্দ শোনা যাচ্ছে।


ডিজিটাল উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, একাধিক অনুরোধের পরও টেলিগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ অপরাধ দমনে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। তারা যদি রুশ আইন মেনে চলে—যেমন দেশে অফিস স্থাপন, রসকোমনাডজোর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা—তাহলে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে। রুশ সংসদের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক কমিটির উপপ্রধান আন্তন গোরেলকিন স্পষ্ট করে বলেন, সম্পূর্ণভাবে রুশ আইন মানলেই কেবল এই বিধিনিষেধ প্রত্যাহার হবে।


রাশিয়া ২০২২ সালে মেটাকে ‘চরমপন্থী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করলেও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার চলমান ছিল। তবে কর্তৃপক্ষ অ্যাপটিকে নিষিদ্ধ তথ্য না সরানোর কারণে কয়েকবার জরিমানা করেছে। গত মাসে গোরেলকিন সতর্ক করে বলেন, হোয়াটসঅ্যাপকে রাশিয়ার বাজার ছাড়ার প্রস্তুতি নিতে হবে। আরেক আইনপ্রণেতার মতে, অ্যাপটির উপস্থিতি দেশের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।


এদিকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্প্রতি রাষ্ট্র-সমর্থিত একটি মেসেঞ্জার অ্যাপ তৈরির অনুমোদন দিয়েছেন, যা সরকারি সেবার সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। সরকারের দাবি, এর মাধ্যমে রাশিয়া ‘ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব’ নিশ্চিত করবে এবং বিদেশি প্ল্যাটফর্মের ওপর নির্ভরতা কমাবে। তবে সমালোচকেরা বলছেন, নতুন অ্যাপে নজরদারি বাড়তে পারে ও ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ হতে পারে। কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, হোয়াটসঅ্যাপের কলের গতি ইচ্ছাকৃতভাবে ধীর করে ব্যবহারকারীদের নতুন অ্যাপে ঠেলে দেওয়া হতে পারে।


মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ গত মাসে এক প্রতিবেদনে জানায়, রুশ সরকার দেশের ইন্টারনেট অবকাঠামোর ওপর নিয়ন্ত্রণ আরও জোরদার করছে, যাতে সরকারবিরোধী ওয়েবসাইট ও সেন্সরশিপ এড়িয়ে যাওয়ার প্রযুক্তি সহজেই ব্লক বা ধীর করে দেওয়া যায়।


শেয়ার করুন