আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ চলমান মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জেরার সময় অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া দাবি করেন, চব্বিশের জুলাই আন্দোলনে প্রধান কুশীলব বা মাস্টারমাইন্ড হিসেবে কেউ ছিল না।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর চানখারপুলে ছয়জনকে হত্যা মামলায় জেরার সময় এমন দাবি করেন তিনি।
প্রথমেই তাকে জেরা করেন শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেনের আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন অভি। জেরার একপর্যায়ে আসিফকে তিনি প্রশ্ন করেন, তাদের আন্দোলনে কোনো মাস্টারমাইন্ড ছিল কি না।
জবাবে অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের ৫ জুন কোটাপ্রথা পুনর্বহালের রায়ের পর আমরা ৫৮ জন সমন্বয়ক-সহসমন্বয়ক মিলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলন শুরু করি। এতে কোনো রাজনৈতিক দলের ইন্ধন ছিল না। আন্দোলনে প্রধানও কেউ ছিল না। সমন্বয়কদের সবার মর্যাদা সমান ছিল।
যোগাযোগের মাধ্যম কি ছিল আইনজীবীর এমন প্রশ্নে আসিফ মাহমুদ বলেন, যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে আমরা ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেছি।
আইনজীবী এরপর তাকে প্রশ্ন করেন, তাদের নামে কোনো মামলা হয়েছে কি না। তখন আসিফ মাহমুদ বলেন, আমিসহ আমাদের অনেকের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে।
একদফা কর্মসূচির পেছনে বিদেশি কোনো শক্তি বা কারো হাত ছিল কি না; আসামিপক্ষের আইনজীবীর এমন প্রশ্নে আসিফ বলেন, একদফা কর্মসূচি ঘোষণার পেছনে কোনো বিদেশি ইন্ধন ছিল না। আমরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ ছাড়া, আন্দোলনকারীরাই আন্দোলনের খরচের জন্য ফান্ড তৈরি করেছি।
সাক্ষীর উদ্দেশে অভি এরপর প্রশ্ন করেন, গত বছরের ৫ আগস্ট চানখারপুলে যেখান থেকে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল, সেখান থেকে আপনার দূরত্ব কতটুকু ছিল? জবাবে আসিফ মাহমুদ বলেন, আমি ২০০ মিটার দূরে ছিলাম।
এত দূর থেকে তো গুলি করার দৃশ্য দেখা যায় না; আসামিপক্ষের আইনজীবীর এমন কথায় এটা সত্য নয় বলে জানান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
এদিন দুপুর সোয়া ২টার পর ট্রাইব্যুনালে পৌঁছান আসিফ মাহমুদ। বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে এজলাসকক্ষে যান তিনি। এরপর তার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
গত ৯ অক্টোবরও দুপুর ২টায় এ মামলায় সাক্ষ্য দিতে ট্রাইব্যুনালে এসেছিলেন এই উপদেষ্টা। বিকেল পৌনে ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তার সাক্ষ্যগ্রহণ চলে। তবে শেষ না হওয়ায় অবশিষ্ট জবানবন্দি নিতে প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজকের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল-১।
এদিন বিকেল ৩টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে অবশিষ্ট সাক্ষ্য দেন আসিফ মাহমুদ। পরে তার জেরা শুরু হয়।