বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান এমপি বলেন, ‘একজন লোক আছেন, নিরাপদ সড়ক চান। ভালো, আমরাও তো চাই। তিনি একবার বললেন, বিএ পাস শ্রমিক লাগবে। বিএ পাস ছাড়া ড্রাইভার হতে পারবেন না। আবার কী বললেন? যদি কেউ অ্যাকসিডেন্ট করেন, তাহলে প্রকাশ্যে পাঁচটা বেত্রাঘাত করতে হবে। এটা কি বর্বর যুগে আছি নাকি আমরা?’
রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে উদ্দেশ করে এই মন্তব্য করেন সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। সোমবার রাজশাহী জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।
জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলীর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী। সভায় সভাপতিত্ব ও বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করেন সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন চৌধুরী। সভায় বার্ষিক প্রতিবেদকন পেশ করার পর প্রধান অতিথির সামনে দুই পক্ষের শ্রমিকরা হট্টগোল ও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। পরিবহন শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা আত্নসাতের অভিযোগ তুলে ধরেন ভুক্তভোগী শ্রমিকরা। পরে প্রধান অতিথি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
শাজাহান খান আরও বলেন, ‘তাঁর দাবি, ১৪ বছরের নিচে কোনো সাজা দেওয়া যাবে না। তিনি এই বঙ্গে আছেন কি না, আমি জানি না। বাংলাদেশের মানুষের মনমানসিকতা, বাংলাদেশের আবহাওয়া, আমাদের অর্থনীতির অবস্থা, সামাজিক অবস্থা মনে হয় তিনি জানেন না। এই জন্য এই সমস্ত কথাবার্তা বলেন।’
সড়ক দুর্ঘটনা আগের চেয়ে কমেছে বলে দাবি করেন সরকারদলীয় সংসদ সদস্য শাজাহান খান। তিনি বলেন, ‘অনেকে বলেন, দুর্ঘটনা বেড়েছে। আমি বলি, দুর্ঘটনা বাড়েনি, কমেছে। ওনারা বাড়ার হিসাব দেন। কিন্তু ১০ বছর আগে যে গাড়ির সংখ্যা ছিল, আজকে কি সেটা আছে? তাহলে বিষয়টা কী? এখন যত রাস্তা, আগে কি ছিল? তাহলে ওই হিসাব যদি ধরেন, জনসংখ্যা বেড়েছে, গাড়ি বেড়েছে, রাস্তা বেড়েছে। গাড়ি-জনসংখ্যা মিলে যদি ধরেন, হিসাব করলে দেখবেন, দুর্ঘটনা আগের চেয়ে কমেছে।’
সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়ে পুলিশের তদন্ত নিয়ে কথা বলেন শাজাহান খান। তিনি বলেন, ‘আমরা একটা কথা বারবার বলি, বড় বড় স্পর্শকাতর কিছু অ্যাকসিডেন্ট আছে, সেই অ্যাকসিডেন্টগুলো আসলে শুধু পুলিশ দিয়ে তদন্ত করলে হবে না। পুলিশের তদন্তে সমস্ত দায়দায়িত্ব ড্রাইভারদের ওপর বর্তায়। কী বলে? বেপরোয়া গাড়ি চালাইছে, সেই কারণে। আরেকটা হলো হয় ফাইনাল রিপোর্ট দিয়ে দেয়, আর তা না হলে ড্রাইভারের ওপর চাপাইয়া দেয়। তাই শুধু পুলিশ দিয়ে এ সমস্ত দুর্ঘটনার তদন্ত হবে না।’
দুর্ঘটনা কমাতে সড়ক নির্মাণে প্রকৌশলগত ত্রুটি দূর করতে হবে উল্লেখ করে শাজাহান খান বলেন, ‘রং নাই, চুন নাই স্পিড ব্রেকার। ওটা তো স্পিড ব্রেকার নয়, স্প্রিং বেকার। উঠলেই জাম্প করে। রাস্তায় মার্জিন থাকে না। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর রাস্তা প্রশস্ত হচ্ছে।’