২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার, ১১:২৫:৩৬ পূর্বাহ্ন
রাজশাহীতে রাস্তার উপর ভূমিহীনদের ঘর নির্মাণ বন্ধের দাবি কৃষকদের
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-১২-২০২২
রাজশাহীতে রাস্তার উপর ভূমিহীনদের ঘর নির্মাণ বন্ধের দাবি কৃষকদের

রাস্তার উপর ভূমিহীনদের ঘর নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কৃষকরা। সোমবার বেলা ১২ টার দিকে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নে আয়োজন করা হয় এই সংবাদ সম্মেলন।

তাদের অভিযোগ, জেলার পবা উপজেলার কাদিপুর দেশলাপাড়ার বিলে নামার জন্য ২০ মিটার প্রস্ত ১০০ মিটার দীর্ঘ রাস্তা রয়েছে। এই রাস্তা ব্যবহার করে জমি থেকে ফসল আনা নেওয়া করেন গ্রামের প্রায় ৫০০ জনের বেশি কৃষক। এই কৃষকদের এই বিলে জমি রয়েছে। তাদের দাবি ওই রাস্তার উপরে ঘর নির্মাণ করা হলে বিলে যাওয়ার একমাত্র পথটি বন্ধ হয়ে যাবে। রাস্তাটি বন্ধ না করে এই উপজেলায় আরো খাস জমি রয়েছে। সেখানে ভূমিহীনদের ঘর নির্মাণের দাবি জানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত গীয়াস উদ্দিনের এই বিলে ১৫ বিঘা জমি রয়েছে। এছাড়া মাজদার আলী, আব্দুল গফুর, গোলাম কবির কহিদ, গোলজার হোসেনের ১২ থেকে ১৫ বিঘা জমি রয়েছে। এছাড়া আবুল কালামের ৭ বিঘা জমি রয়েছে। তারা দেশলাপাড়া বিলের এই সড়ক ব্যবহার করে জমির ফসল উঠান বলে জানান।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আব্দুল সালাম জানান, রাজশাহী জেলার পবা উপজেলাধীন তিন নম্বর দামকুড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দেশলাপাড়া গ্রামের কাদিপুর মৌজার খতিয়ান নম্বর ১, দাগ নম্বর ১৫০৩, খতিয়ানে বর্ণিত রকম- ডহর, (রাস্তা) জমির পরিমাণ ৭০ শতক রাস্তার জমিতে প্রায় ৩ মাস আগে ভূমিহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণের জন্য পরা উপজেলা পরিষদের উপজেলা নির্বাহী অফিসারের তত্ত্বাবধানে প্রাথমিক জরিপ করা হয়। অত্র এলাকার জনসাধারণ ঐ সময় পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান বর্ণিত রাস্তাটি এস.এ ও আরএস খতিয়ানে ডহর বা রাস্তা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত থাকায় তা এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা হিসাবে ব্যবহার করছেন। এখানে রাস্তার উপর গৃহ নির্মিত হলে অত্র এলাকার জনসাধারণ ও কৃষকদের অপূরনীয় ক্ষতি হবে।

কারণ কৃষকগণ উক্ত রাস্তাটি ব্যবহার করে কৃষ্ণকলশ মাঠের ফসলাদী মাঠ থেকে বাড়ীতে নিয়ে আসেন। হটাৎ করে প্রায় ২ (দুই) মাস আগে বর্ণিত রাস্তাটির উপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে ঘর নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করলে এলাকাবাসী সংক্ষুব্ধ হলে আমি (গোলজার হোসেন) এলাকাবাসীর পক্ষে জেলা রাজশাহীর পবা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে গৃহ নির্মাণ প্রকল্পটি বন্ধ চেয়ে রাষ্ট্রকে বিবাদী করে জনস্বার্থে একটি মামলা দায়ের করি। যার মামলা নম্বর- ২২৬/২০২২ অ. প্র.।

এ বিষয়ে মামলা দায়েরের প্রেক্ষিতে আইনে রাস্তার উপর যে কোন ঘর নির্মাণ বে-আইনী হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত বাংলাদেশ সরকার পক্ষে ডেপুটি কমিশনার, রাজশাহী দিং এর বিরুদ্ধে গত ২ নভেম্বর ২০২২ তারিখে আদেশ জারী করেন” অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার দরখাস্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নালিশী সম্পত্তির প্রকৃতি পরিবর্তন করা বা নালিশী সম্পত্তিতে ঘর বাড়ী নির্মাণ করা বা নির্মাণের অনুমতি প্রদান করা থেকে বিরত থাকার জন্য বিবাদীগণকে এতদ্বারা বারিত করা হলো”। বর্ণিত মামলায় উক্ত আদেশের প্রেক্ষিতে বিবাদীস্বর ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখেন।

বর্তমানে রাজশাহী জজ আদালত শীত কালিন এক মাস ছুটি থাকায় বিবাদীগণ সু- কৌশলে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিতে গত ১৮ ডিসেম্বর ২০২২ ইং তারিখে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নির্দেশে ও উপস্থিতিতে পুলিশ নিয়ে এসে আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে উক্ত স্থানে পুনরায় কাজ আরম্ভ করেন যা সম্পূর্ণ আদালত অবমাননার শামিল। আমিসহ এলাকাবাসী সহকারী কমিশনার (ভূমি) কেন আদালতের আদেশ অমান্য করে কাজ করছেন এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি পুনরায় কাজ চালুকরণের কোন প্রকার আদালতের আদেশ দেখাতে পারেন নাই। আমরা উনাকে কাজ বন্ধের জন্য অনুরোধ করলেও তিনি আমাদের কথায় কোন প্রকার কর্ণপাত না করে কাজ চালু রেখেছেন।

আব্দুল সালাম বলেন, আমরা বিবাদীদ্বয় কর্তৃক আদালতের আদেশ অমান্য করে অস্থায়ী নিষেধোজ্ঞা থাকার পরেও পুনরায় ঘর নির্মাণ করায় আইনী সহায়তার জন্য দামকুড়া থানায় জিডি করতে গেলে তারা বলেন আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বিরুদ্ধে জিডি নিতে পারবনা। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বিধায় আমরা চাচ্ছি আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি নিস্পত্তি হোক।

বিষয়টি নিয়ে পবা উপজেলা কর্মকর্তা (ভূমি) অভিজিৎ সরকার ও পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লসমি চাকমার মুঠোফোনে কয়েকবার কল করা হলে তারা রিসিভ করেনি। তাই এই বিষয়ে তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

শেয়ার করুন