রাজশাহীর তানোরে নিজে বিয়ে করতে না পারলেও ২০ বছরে ৮হাজার ৪৯ জনের বিয়ে দিয়েছেন ঘটক তানোর পৌর সভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আ’ লীগ সাধারন সম্পাদক তাছির মন্ডল।
তিনি বলেন, ২০০২ সাথে প্রথম দিকে সখের বসে বিয়ে দেয়ার কাজ শুরু করি। কিন্তু পরে বিভিন্ন এলাকার লোকজন আমার কাছে তাদের ছেলে মেয়েদের বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রীর খোঁজে আসতে শুরু করেন। এভাবেই শুরু আমার ঘটক হয়ে উঠা।
তিনি বলেন, প্রথমে আমার নিজ এলাকা তানোরের ছেলে মেয়েদের বিয়ের ঘটকতালি করতাম। পরবর্তিতে রাজশাহী, নওগাঁ, চাপাই নবাবগন্জসহ বিভিন্ন এলাকার ছেলে মেয়েদের বিয়ে ঘটকতালি করা শুরু করি।
২০০২ সাল থেকে অদ্যবদি তিনি ঘটকতালি করে ৮ হাজার ৪৯ জনের বিয়ে দিয়েছেন বলেও জানান তিনি। এর মধ্য প্রায় সাড়ে ৩ শ’ বিয়ে টিকেনি। বাকি সবগুলো দম্পতি ভালো আছেন সুখে সংসার করছেন, এদের মধ্য অনেকেই এখনো তার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, গত বুধবার (৪ জানুয়ারী) তিনি ঘটকতালি করে মান্দার ফেরিঘাট জৈনক ব্যক্তির কন্যার সাথে মোহনপুর উপজেলার পাকুড়িয়া এলাকার জৈনক ব্যক্তির পুত্রের বিয়ে দিয়েছেন।
এই ঘটকতালি করার সুবাদেই এলাকার তার রয়েছে ব্যাপক সুনাম এলাকার সবাই তাকে ঘটক তাছির নামেই চিনেন। কিন্তু পরবর্তিতে ২০১৫ সালে এলাকার ভোটাররা তাকে জোর করে তানোর পৌর সভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে দাড় করিয়ে দেন এবং বিপুল ভোটে কাউন্সিলর নির্বাচিত করেন।
২০২১ সালে ভোটাররা আবারো তাকে ভোটে দাড় করিয়ে পুনরায় কাউন্সিলর নির্বাচিত করেন। এখনো তিনি কাউন্সিলর রয়েছেন। তবে, বিয়ে দিয়ে তিনি সর্বনিন্ম ১০ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত পেয়েছেন বলেও জানান তিনি। নিজে বিয়ে করছেন না কেনো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন পাকা বাড়ি করার পর বিয়ে করবেন বলে জানান তিনি।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঘটক তাছির কাউন্মিলর একজন সাদা মনের সহজ সরল প্রকৃতির মানুষ, ঘটকতালি করার কারনে এলাকার প্রায় প্রতিটি পরিবারের সাথে রয়েছে তার মধুর সম্পর্ক। সে সকলের সাথেই হাসি মুখে কথা বলার পাশাপাশি যেকোন বিপদে আপদে ডাকরেই ছুটে আসেন আমাদের কাছে।
এবিষয়ে তানোর পৌর সভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আ’ লীগ সাধারন সম্পাদক ঘটক তাছির মন্ডল বলেন, গত ২০ বছরে ৮ হাজার, ৪৯ টি বিয়ে দিয়েছি, বছরে প্রায় ৪ শ” টি বিয়ের ঘটকতালির মাধ্যমে বিয়ে দিয়েছি, তিনি বলেন প্রায়দিনই তার ঘটকতালির মাধ্যমে বিয়ে সম্পূর্ণ হয়। তিনি বলেন, এমনও দিন গেছে আমার ঘটকতালিতে একই দিনে ৫/৬ টা পর্যন্ত বিয়ে হয়েছে।
তিনি বলেন, বিয়ের ঘটকতালি করে বিয়ে দিলে আমাকে তারা খুশি মনে সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা দেন, অনেকে বেশী দেন, সর্বচ্চ ৬০ হাজার টাকাও আমি পেয়েছি যার যেমন সমর্থ সে তেমনই টাকা আমাকে খুশি মনে দেন। আমি জোরাজরি করে কোন টাকা নিইনা। তার ঘটক তালিতে দেয়া ৮হাজার ৪৯ টি বিয়ের মধ্য সাড়ে ৩ শ’র মত বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটেছে জানিয়ে তিনি বলেন পাকা বাড়ি করে এবার নিজে বিয়ে করবেন বলেও জানান তিনি।
এব্যাপারে তানোর পৌর সভার ১ নং ওয়ার্ড সাবেক কাউন্সিলর ও বর্তমান মেয়র ইমরুর হক বলেন, ঘটক তাছির কাউন্সিলর এলাকার মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় একজন ঘটক। সে মুলত ঘটক তালি করেই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। আমি তার দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা করছি।