সবাইকে মরতে হবে একদিন। মানুষটি চলে গেলেও তার সৃষ্টি রয়ে যাবে। ‘হাম রহে ইয়া না রহে কাল, ইয়াদ আয়েঙ্গে ইয়ে পাল’ গানের মতোই শ্রোতাদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন সংগীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে। সদা হাস্যমুখের যে গায়ক মঞ্চে উঠলেই সুরের ভুবনে দাপিয়ে বেড়াতেন, তিনি এখন নিশ্চুপ।
ভারতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকের প্রয়াণে সুরের ভুবনে নেমে এসেছে পিনপতন নিরবতা। ইতোমধ্যে গায়কের মৃত্যুতে কলকাতার নিউ মার্কেট থানায় মামলা হয়।
কলকাতার অনুষ্ঠানে যারা কেকের সঙ্গী হয়ে এসেছিলেন, তারাই অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করেছেন। প্রয়াত গায়ক যে হোটেলে উঠেছিলেন ওই হোটেলের ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া নজরুল মঞ্চে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজকদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা আগেই জানান, গায়ককে মৃত অবস্থাতেই হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাদের ধারণা, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মারা গেছেন কেকে।
তবে পুলিশ সূত্রের খবর, কেকের মাথায় ও মুখে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার মৃত্যুর আসল কারণ জানতেই এসএসকেএম হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে।
কেকের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না ভক্তরা। প্রশ্ন উঠছে— কনসার্টের চরম অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে। বলা হচ্ছে, ওই অব্যবস্থাপনার কারণেই গায়কের মৃত্যু হয়েছে।
এবার প্রকাশ্যে এসেছে কেকের ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট। সেখানে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অস্বাভাবিক কোনো কারণে গায়কের মৃত্যু হয়নি। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাভাবিকভাবে মারা গেছেন তিনি।
কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে প্রয়াত গায়কের দেহের ময়নাতদন্তের পর প্রাথমিক রিপোর্টে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে। তবে চূড়ান্ত রিপোর্ট প্রকাশ হবে ৭২ ঘণ্টা পর।
এদিকে একটি তথ্য ছড়িয়েছিল যে, কেকের কপালে ও ঠোঁটে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তবে এটি সত্য নয় বলে জানিয়েছেন কলকাতা পুলিশের এক সদস্য।
এদিকে স্বামীর মরদেহ নিতে বুধবার সকালেই কলকাতায় এসে পৌঁছান কেকের স্ত্রী ও পুত্র। ময়নাতদন্ত শেষ হলেই গায়কের মরদেহ নিয়ে মুম্বাই ফিরবেন তারা।
প্রসঙ্গত, নব্বই দশক থেকে শুরু করে বাংলা, হিন্দি, তামিল, কন্নড়, মালয়ালাম, মারাঠি, অসমীয়া ভাষায় বহু জনপ্রিয় গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কেকে। তার গাওয়া গানগুলো শ্রোতামহলে এখনও বেশ জনপ্রিয়। তবে এই শিল্পীর জীবনের শেষ গানের স্মৃতি হয়ে রইল কলকাতা।