২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ০৬:২৬:০৩ পূর্বাহ্ন
তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির পদে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকেও নিয়োগ
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-০৪-২০২৩
তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির পদে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকেও নিয়োগ

সরকারি চাকরিতে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে অপেক্ষমাণ তালিকার বিধান করছে সরকার। মূল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর সর্বোচ্চ এক বছর এ তালিকা সংরক্ষণ করা হবে। এ সময়ের মধ্যে কোনো দপ্তরে একই গ্রেডের পদ শূন্য হলে এ তালিকা থেকে নিয়োগ দেওয়া হবে। নিয়োগের ক্ষেত্রে সময় বাঁচানোর পাশাপাশি ফের পরীক্ষা নেওয়ার প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় রোধে এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, তালিকা প্রণয়ন এবং সেখান থেকে নিয়োগের বিধান বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আজ রোববার প্রজ্ঞাপন জারি করবে।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সরকারের সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীন দপ্তর, পরিদপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে ১৩-২০তম গ্রেডের (পূর্বতন তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি) পদে কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এ তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নোটিশ বোর্ড ও ওয়েবসাইটে প্রকাশ, তালিকার কাউকে নিয়োগ দিতে হলে মোবাইলে খুদেবার্তার মাধ্যমে অবহিতকরণ ও চাকরিতে নিয়োগের পর জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণসহ বিস্তারিত সুপারিশ করেছে এ-সংক্রান্ত কমিটি।

বিধি অনুযায়ী নিয়োগ কার্যক্রমের বিভিন্ন ধাপ সম্পন্ন করা ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ কাজ। আবার নিয়োগদানের পর দেখা যায় অনেকে চাকরিতে যোগ দেওয়া থেকে বিরত থাকেন বা যোগদানের পর অপেক্ষাকৃত উচ্চপদে চাকরির সুযোগ পেয়ে বা ব্যক্তিগত কারণে চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়ে থাকেন। এসব শূন্য পদে নিয়োগের জন্য ফের স্বল্প সময়ের ব্যবধানে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করতে হয়। এতে সরকারের আর্থিক ব্যয় ও নিয়োগ কার্যক্রমে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিপুল কর্মঘণ্টা অপচয় হয়।

বিষয়গুলোকে মাথায় নিয়েই ১৩-২০ গ্রেডের অধীনে নিয়োগে অপেক্ষমাণ তালিকা ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নেয় সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুহিদুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, এ ধরনের একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন খুব শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।

এর আগে ২০২২ সালের ২৪ জুলাই বিভাগীয় কমিশনার সমন্বয় সভায় অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। একই বছরের ৮ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। আলোচনা ও সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শ শেষে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগের ক্ষেত্রে অপেক্ষমাণ তালিকা করার সুপারিশ করে ওই কমিটি।

সুপারিশ অনুযায়ী, পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মেধা তালিকা এবং বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করে শূন্য পদে প্রার্থী সুপারিশের পাশাপাশি প্রতি পদের বিপরীতে ১:২ অনুপাতে উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে অপেক্ষমাণ তালিকা তৈরি করে সিলগালা খামে সংরক্ষণ করবে নিয়োগ কমিটি। এ ছাড়া বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি (ডিপিসি) শূন্য পদে নিয়োগে যে জেলার জন্য প্রার্থী সুপারিশ করবে, সেই জেলার যোগ্য প্রার্থীদের মধ্য থেকে অপেক্ষমাণ তালিকা প্রণয়ন করা হবে। তবে তালিকা প্রণয়নের সময়ে কোনো কোটার অধীন কোনো জেলার যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সংশ্লিষ্ট প্রাক্তন বৃহত্তর জেলার অন্তর্ভুক্ত জেলাগুলোর মধ্যে যে জেলার চাকরিজীবীর সংখ্যা সর্বাপেক্ষা কম, সেই জেলার যোগ্য প্রার্থীদের মধ্য থেকে মেধাক্রমের ভিত্তিতে অপেক্ষমাণ তালিকা প্রণয়ন করতে হবে। আর প্রাক্তন বৃহত্তর জেলার অন্তর্ভুক্ত কোনো জেলা থেকে এ উপায়ে কোটার শূন্য পদ পূরণ করা সম্ভব না হলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের জেলাগুলোর মধ্যে যে জেলার চাকরিজীবীর সংখ্যা সর্বাপেক্ষা কম, সেই জেলার যোগ্য প্রার্থীদের মধ্য থেকে এ তালিকা প্রণয়ন করতে হবে।

এ ছাড়া নিয়োগের জন্য সুপারিশকৃত প্রার্থীদের মধ্যে কেউ চাকরিতে যোগদান না করলে বা যোগদানের পর ইস্তফা দিলে, সংশ্লিষ্ট ডিপিসির সভায় অপেক্ষমাণ তালিকা এবং উত্তীর্ণ প্রার্থীদের রেজাল্ট উপস্থাপন-পূর্বক শূন্য পদে নিয়োগের জন্য প্রার্থী সুপারিশ করতে হবে।

পাশাপাশি কমিটির উপস্থিতিতে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে সুপারিশকৃত প্রার্থীকে তার নিয়োগের বিষয়টি মোবাইল ফোনে তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করতে হবে। ডিপিসির অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে সুপারিশকৃত প্রার্থীদের রোল নম্বরের তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নোটিশ বোর্ড ও ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।

আর অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদের জ্যেষ্ঠতা প্রথম নিয়োগপ্রাপ্ত প্রার্থীদের পরে নির্ধারিত হবে। ডিপিসি অপেক্ষমাণ তালিকার কোনো প্রার্থীকে চাকরিতে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করলে তার জ্যেষ্ঠতা ওই পদে যোগদানের তারিখ থেকে নির্ধারিত হবে। অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে দুই বা ততোধিক প্রার্থী যদি একই দিনে একই পদে যোগদান করে, তবে তাদের পারস্পরিক জ্যেষ্ঠতা আগে প্রস্তুত করা রেজাল্টের মেধাক্রম অনুসারে নির্ধারিত হবে।

শেয়ার করুন