২৩ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ০৬:৫০:০২ অপরাহ্ন
আজ সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড়, কাল প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে ‘মোখা’
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০৫-২০২৩
আজ সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড়, কাল প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে ‘মোখা’

দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপটি পরিণত হয়েছে গভীর নিম্নচাপে, যা বুধবার (১০ মে) সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’য় রূপ নিতে পারে। আর পরদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার (১১ মে) সকালের মধ্যে এটি পরিণত হতে পারে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে।

বুধবার ভারতের আবহাওয়া বিভাগের (আইএমডি) বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।

আইএমডির এই বুলেটিনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপটি প্রতি ঘণ্টায় ৫ কিলোমিটার গতিতে (গত ছয় ঘণ্টায়) পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।

এটি কিছু সময়ের জন্য উত্তর-পশ্চিম দিকে ও তারপর উত্তর-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হওয়ার এবং বুধবার সন্ধ্যার দিকে একই অঞ্চলে ধীরে ধীরে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে আরও ঘনীভূত হয়ে বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।

আর বৃহম্পতিবার মধ্যরাতে নিম্নচাপটি দক্ষিণ-পূর্ব এবং তৎসংলগ্ন মধ্য বঙ্গোপসাগরে অত্যন্ত প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।

এদিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি ঘণীভূত হয়ে একই এলাকায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল।

গভীর নিম্নচাপকেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটার এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। এজন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তীব্র গতি নিয়ে ‘মোখা’ নামের সম্ভাব্য ঝড়টি চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে।

মঙ্গলবার (৯ মে) রাতে এসব তথ্য জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইন্টিগ্রেটেড ফোরকাস্ট সিস্টেম নামক আবহাওয়া মডেল থেকে প্রাপ্ত ঘূর্ণিঝড় মোখার ৫১টি সম্ভাব্য যাত্রাপথের বেশিরভাগ পথ নির্দেশ করছে যে, এটি (মোখা) চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে।

স্থলভাগে আঘাতের সময় ঘূর্ণিঝড় মোখা’র বাতাসের গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৮০ কিলোমিটার। আর এ গতিতে ঘূর্ণিঝড় মোখা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূল অতিক্রম করলে, এ দুই জেলার উপকূলীয় এলাকাগুলো ১৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জলবায়ু গবেষক পলাশ আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখা কক্সবাজার জেলার সেন্টমার্টিন দ্বীপ, টেকনাফ, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপজেলার ওপর দিয়ে অতিক্রম করার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।

সম্ভাব্য এ ঘূর্ণিঝড়ের কারণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় ২৫০ থেকে ৪০০ মিলিমিটার এবং বরিশাল বিভাগ ও পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলাগুলোয় ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুন